Saturday, October 31, 2020

 






ঘৃণা ছড়ানোর নাম ইসলাম নয় বরং মায়া ছড়ানোর নাম ইসলাম। মানবিকতার নাম ইসলাম। 

সৎ ও আদর্শের পথে চলা ইসলাম। 

মানবাধিকতার নাম ইসলাম। মানুষকে সম্মান করার নাম ইসলাম। মানুষকে ক্ষমা করার নাম ইসলাম। 


কথা ছিল ধর্ম মানে হবে শান্তি। কিন্তু বাস্তব চিত্র উল্টো। পৃথিবীতে ধর্মই বড় বড় সব অশান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, দাঁড়াচ্ছে।

 ইসলামকে এমন এক কঠোর ও স্পর্শকাতর ধর্ম হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, যাকে ধরা যাবে না, ছোঁয়া যাবে না, যাকে নিয়ে কোনো কথাই বলা যাবে না। 

এই যদি হয় পরিস্থিতি, তাহলে এই অস্পৃশ্য পাষাণকে মানুষ একটা সময় পরিত্যাগ করতে বাধ্য হবে। এর থেকে যোজন যোজন দূরে থাকাটাই কল্যাণ মনে করবে। ধর্মান্ধরা বুঝতে পারছে না, তাদের কঠোরতার কারণে যে ধর্মহীনের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। তারা জানে না, মুদ্রার যে উল্টো একটা পিঠ আছে। 

কাজী নজরুল ইসলামের ভাষায় বলি

মানুষেরে ঘৃণা করি/ও’ কারা কোরান, বেদ, বাইবেল চুম্বিছে মরি মরি!

ও’ মুখ হইতে কেতাব গ্রন্থ নাও জোর করে কেড়ে

যাহারা আনিল গ্রন্থ-কিতাব সেই মানুষেরে মেরে।

পূজিছে গ্রন্থ ভণ্ডের দল! -

মূর্খরা সব শোনো, মানুষ এনেছে গ্রন্থ;- গ্রন্থ আনেনি মানুষ কোনো।”

  

৩১/১০/২০২০

আমরা কি ভুলে গেছি?

ইসলামের আবির্ভাবে সব রকম হত্যা, রক্তপাত, অরাজকতা, সন্ত্রাস ও সহিংসতাকে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। 

রাসুলুল্লাহ (সা.) বিদায় হজের ভাষণে বলেন, 

‘তোমাদের রক্ত তথা জীবন ও সম্পদ পরস্পরের জন্য হারাম।

পবিত্র কোরানর শরিফের সুরা আল মায়েদার ৩২ নম্বর আয়াতে হত্যার ভয়ানক পরিণাম সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছে,

 ‘নরহত্যা বা পৃথিবীতে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি ছাড়া কেউ কাউকে হত্যা করলে সে যেন দুনিয়ার সমগ্র মানবগোষ্ঠীকে হত্যা করল; আর কেউ কারও প্রাণ রক্ষা করলে সে যেন পৃথিবীর সমগ্র মানবগোষ্ঠীকে প্রাণে রক্ষা করল।’ 

(সূরা আল-মায়িদা, আয়াত: ৩২)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,

 ‘একজন প্রকৃত মুমিন তার দ্বীনের ব্যাপারে পূর্ণ প্রশান্ত থাকে, যে পর্যন্ত সে অবৈধ হত্যায় লিপ্ত না হয়।’

 নবী করিম (সা.) বলেছেন,

 ‘যদি আসমান-জমিনের সব অধিবাসী একজন মুসলমানকে অবৈধভাবে হত্যা করার জন্য একমত পোষণ করে, তবে আল্লাহ তাদের সবাইকে অবশ্যই জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন।’ (মুসনাদে আহমাদ)।

* সংগ্রহিত

Wednesday, October 28, 2020

    আজকের ভাবনা

   ২৮/১০/২০২০

আমি বুঝতে পারছি না আমি কোন দলে যাব।

আমি মত প্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে সব 

সময়, আমার কাছে মানুষের জীবন অনেক বড়।

আবার মুসলিম বলে মুসলিমদের সেন্টিমেন্ট 

বুঝতে পারছি।

পশ্চিমের ভুল পলিটিক্স আমাদের কোথায় নিয়ে যাচ্ছে?


Tuesday, October 27, 2020

 


আজকের ভাবনা

২৭/১০/২০২০

কৎবেল মাখানো আমাদের মেয়েবেলাকার 

প্রিয় খাবার। দেখে খুব খেতে ইচ্ছে করছিল।

চারপাশে কত ধরনের খাবার দাবার, তারপর

ও আমার কেন এই ধরনের ছ্যাতাম্যাতা খেতে ইচ্ছে করে, তা আমার কাছের মানুষের কাছে

বিরাট বিস্ময়। 

হাঁ আমার আচার, চাটনি খেতে

ইচ্ছে করে। যা নাকি ধুলা মাখান, আনহেলদি।

তারা কি বুঝবে?

এগুলোই তো আমার মেয়েবেলাকে রঙ্গীন 

করেছিল।

Monday, October 26, 2020

 



আজকের ভাবনা

২৬/১০/২০২০

একজন যোদ্ধা কখনো হারে না। হয় জেতে, নাহয় শেখে। সুতরাং দীর্ঘমেয়াদে জিততে হলে মাঝে মাঝে তোমাকে ক্ষুদ্র জয়ের লোভ ছাড়তে হবে। সে পর্যন্ত লড়াইয়ের দমটা ধরে রাখতে হবে।

দিন শেষে লড়াইটা কিন্তু অন্যায় আর ন্যায়ের। আর ন্যায়সংগত লড়াইয়ে একজন যোদ্ধার দলবল প্রয়োজন হয়না, কারো আনুকূল্য দরকার হয়না। নৈতিকতা আর সততাই তার ঢাল তলোয়ার হয়ে কাজ করে।
প্রত্যেক মানুষের নিজস্ব একটা বিপ্লব থাকে। তার জন্য সবসময় সংঘবদ্ধ হওয়ার দরকার নেই। শুধু লক্ষ্যে স্থির থাকতে হয়।
সংগ্রহীত

Sunday, October 25, 2020

      আজকের ভাবনা

        ২৫/১০/২০২০

                     

                   ১/

ভালবাসা থাকা সত্বেও কিছু কিছু সম্পর্ক  ভুল বোঝা বুঝির কারণে শেষ হয়ে যায়।

                     

                  ২/

অযোগ্য কাউকে কখনো টেনে উপরে তুলতে 

নেই, কারণ ওই অযোগ্য মানুষটি একদিন 

আপনার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলবে?


                  ৩/

ক্ষমতার ধরণ হল- কাউকে সময়ে ব্যবহার করা, বোঝা হলে ছুঁড়ে  ফেলা।


Saturday, October 24, 2020

    আজকের ভাবনা

     ২৪/১০/২০২০

১/

আত্মনির্ভরশীলতার উপর আর কিছু নাই।


২/

আমরা প্রতিদিন বেঁচে থাকি কিছুটা শরীরে, বাকিটা মনে, আত্মায়।


৩/

It is saying that,

A woman has three greatest enemies,

1, men,

2, Another woman

and

3. Silence.



Friday, October 23, 2020

 

বাংলাদেশ ভারতকে ছাড়িয়ে যেতে চলেছে

কবীর চৌধুরী তন্ময়


শিরোনামের কথাটি আমার ব্যক্তিগত নয়, তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-এর এমন কথায় কিংবা বাংলাদেশ এগিয়ে চলার পরিসংখ্যানে আমরা বাঙালিরা একদিকে যেমন আবেগে আপ্লুত, অন্যদিকে আরো উদ্যমী হয়ে পড়ি। আত্মবিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে চলার স্বপ্ন বুনি। কারণ, আমাদের অর্জনগুলো ঐতিহাসিক, ঘুরে দাঁড়ানোর ইতিহাসও গণশ্রম বা পারিশ্রমিক মনোবলের বৃত্তিতে সৃষ্ট।

বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে কিংবা ভারতকে ছাড়িয়ে যেতে চলেছে- এমন খবর ভারতের প্রভাবশালী পত্রিকাগুলোই মূলত আমাদের বেশি করে জানিয়েছে।ভারত অর্থনীতির দিক থেকে বাংলাদেশের পেছনে পড়ে যাবে- এটি যেমন ভারতকে নিরব কষ্ট দিচ্ছে, আরাব নিজেদের মধ্যে তর্ক-বিতর্কও হচ্ছে। ভারত সরকারের কোথায় কী ভুল হয়েছে, কোথায় কী দুর্বলতা বা ঘাটতি রয়েছে কিংবা মোদী সরকার কী কী করেছে- এসব বিষয় নিয়ে চুলছেড়া বিশ্লেষণ হচ্ছে। এ নিয়ে ভারত সরব থাকলেও এদিকে বাংলাদেশ যেন একপ্রকার নিরবতাই পালন করছে। আমাদের টকশোগুলোতেও খুব বেশি মাতামাতি করতে দেখা যায়নি। সরকারের পক্ষ থেকেও এ নিয়ে খুব বেশি আলোচনা করেনি।

গত ১৫ অক্টোবর ভারতের প্রভাবশালী দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়ার সম্পাদকীয় নিবন্ধের শিরোনাম, ‘ভারত, পূর্ব দিকে তাকাও : বাংলাদেশ ভারতকে অর্থনৈতিকভাবে পেছনে ফেলে দিচ্ছে। আমাদের (ভারতের) জন্যও শিক্ষণীয়।’ আবার (১৪ অক্টোবর) আনন্দবাজার পত্রিকায় শিরোনাম ছিল-‘পড়ছে ভারত! মাথাপিছু উৎপাদনে ‘আচ্ছে দিন’ যাচ্ছে বাংলাদেশে।’ ভারতের মূল গণমাধ্যমের সাথে-সাথে সোশ্যাল মিডিয়ায়ও বাংলাদেশ এগিয়ে যাওয়া নিয়ে ‘বেশ সরব’ হতে দেখা গেছে।

কারণ, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ২০২০ সালের অক্টোবরে প্রকাশিত তার ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক’ নামক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ভারতের মাথা পিছু জাতীয় উৎপাদন বা জিডিপি দাঁড়াবে ১ হাজার ৮ শ’ ৭৭ ডলার। অন্যদিকে, বাংলাদেশের মাথা পিছু উৎপাদন হবে ১ হাজার ৮ শ’ ৮৮ ডলার।

আর এ নিয়ে বাংলাদেশে তেমন কোনো আলোচনা না হলেও ভারতে বিষয়টি তুমুল আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। রাহুল গান্ধী টুইট করে বিজেপির কড়া সমালোচনা করে বলেছেন, ‘এটাই বিজেপির হিংসাত্মক রাজনৈতিক সংস্কৃতির অর্জন।’ অন্যদিকে বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান ইকোনমিস্ট অধ্যাপক কৌশিক বসু এই অবস্থায় ভারতকে ‘শক্তিশালী অর্থনৈতিক নীতি’ চালু করার আহ্বানও করেছেন।

দি প্রিন্ট-এর প্রধান সম্পাদক খ্যাতিমান সাংবাদিক শেখর গুপ্ত ১৫ অক্টোবর এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক’-এর চলতি অর্থ বছরের প্রতিবেদন ভারতের অর্থনীতির অ্যাকিলিস হিল বা সবচেয়ে দুর্বল স্থান চিহ্নিত করে দিয়েছে। এ সংস্থার আয়না ভারতের জন্য বড়ই নিষ্ঠুর!’

অন্যদিকে জনপ্রিয় ইউটিউবারদের বিশ্লেষণগুলো বেশ নজর কেড়েছে। অনেকে খুব সুন্দর করে বিষয়টি উপস্থাপন করেছেন, করার চেষ্টা করেছেন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারত বাংলাদেশকে স্বাধীনতা অর্জনে সহযোগিতা করেছে- পঞ্চাশ বছর পর এমন সুখের ঢেকুর তোলা বন্ধ করে মোদী সরকার শেখ হাসিনার কাছ থেকে শিক্ষা নিতে পরামর্শ দিয়েছেন। বাংলাদেশে দুর্নীতি হচ্ছে, ধর্ষণ হচ্ছে, গণতন্ত্র নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে ও  নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে বিস্তর কথা শোনা যায়। তারপরেও শেখ হাসিনা কী করে মহামারি করোনার প্রাদুর্ভাবেও দেশের অর্থনীতিকে সঠিক পর্যায়ে রেখেছে এবং কী ধরণের নেতৃত্বের কৌশলে আজ ভারতকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে- এগুলো শেখার পরমার্শ দেওয়া হয়েছে।

তবে একটা জিনিস খুব (আমার ব্যক্তিগত) ভালো লেগেছে, জিডিপি নিয়ে ভারতের মিডিয়ায় যারাই রিপোর্ট করেছেন কেউ বাংলাদেশ নিয়ে কটু কথা বলেননি, বরং বাংলাদেশের অগ্রগতির পরিসংখ্যান দেখে তাদের কেউ কেউ প্রাণ খুলে প্রশংসাও করেছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্ব নিয়েও বিশ্লেষণ করতে দেখা গেছে।

আইএমএফ-এর সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২০ সালে এই প্রথম মাথাপিছু জিডিপিতে বাংলাদেশ ভারতের থেকে ১১ ডলার এগিয়ে যেতে পারে। আইএমএফ-এর এই পূর্বাভাস অনুযায়ী ভারত মাথাপিছু জিডিপির ক্ষেত্রে পাকিস্তান ও নেপালের থেকে সামান্য এগিয়ে থাকবে। সে হিসাবে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও আফগানিস্তানের আগে চলে আসবে বাংলাদেশ।

আর বাংলাদেশ যে এবারই ভারতকে পেছনে ফেলেছে তা কিন্তু নয়। আর এ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে (১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০) ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত স্বাতী নারায়নের এক প্রতিবেদন উল্লেখ করে মোদী সরকারের এক মন্ত্রী বেশ ঠাট্টা করে বলেছিলেন, ‘নাগরিকত্ব প্রদান করা হলে বাংলাদেশের অর্ধেক লোক ভারতে চলে আসবে।’ 

স্বাতী নারায়ন তখন প্রশ্ন তুলে জিজ্ঞেস করেন- কেন আসবে? শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাড়িতে টয়লেট, মা ও শিশু মৃত্যুর হার কমিয়ে আনা, স্কুল-কলেজে ছাত্রী ভর্তি, নারী কর্মী, স্বাক্ষরতার হার- এসব অনেক সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে। তারা বিনামূল্যে প্রতি বছর চার কোটির বেশি ছাত্র-ছাত্রীকে পাঠ্যবই দিচ্ছে। বাংলাদেশ কেবল মাথা জিডিপিতেই ভারতের থেকে সামান্য পিছিয়ে। শেখর গুপ্ত বলেছেন, এখন জিডিপিতেও ভারতকে পেছনে ফেলে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ।

আমার দৃঢ় বিশ্বাস, বাংলাদেশ এগিয়ে যাওয়ার খবরে অনেকের (স্বাধীনতাকামী মানুষ) ভেতর নিরব উত্তেজনা কাজ করছে। কারণ, এক সময় দারিদ্র্য-দুর্ভিক্ষে জর্জরিত যে বাংলাদেশ অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার সংগ্রাম করতো, সেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বজয়ের নবতর অভিযাত্রায় এগিয়ে চলছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্ব, যোগ্যতা, নিষ্ঠা, মেধা-মনন, দক্ষতা, সৃজনশীলতা, উদার গণতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গী ও দূরদর্শী নেতৃত্বেই সম্ভব হয়েছে। বিশ্বসভায় আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ। গৌরবময় হয়েছে বাঙালি জাতি, যা অর্জনে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন শেখ হাসিনা।

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস সংকটের এই ক্রান্তিলগ্নেও শেখ হাসিনা জনগণের ‘জীবন’ ও ‘জীবিকার’ সুরক্ষা নিশ্চিত করতে নিঃস্বার্থভাবে নিরলস পরিশ্রম করেছেন, করে যাচ্ছেন। করোনার প্রাদুর্ভাবে সৃষ্ট সংকটের শুরু থেকেই তিনি এ ভাইরাস প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জনগণকে সচেতন করার লক্ষ্যে জাতির অভিভাবক হিসেবে ৩১ দফা নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন বার বার। 

আমাদের সকল উদ্বেগ-উৎকণ্ঠাকে পেছনে ফেলে ‘পেটে খেলে পিটে সয়’- স্লোগানকে সামনে রেখে ছাত্রলীগ থেকে আওয়ামী লীগ, এমনকি পুলিশ কর্মকর্তাসহ কৃষকের ‘ফসল’ ঘরে উঠেছে একমাত্র শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বের কারণে। আর কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে খাদ্য ও অন্যান্য সহায়তার ব্যবস্থা করে ১০ মিলিয়নের বেশি পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে বর্তমান সরকার। 

অন্যদিকে ৪ মিলিয়ন শিক্ষার্থীকে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক, শ্রমিক ও দিনমজুরসহ ৫ মিলিয়ন মানুষকে নগদ অর্থ সহায়তা করা হয়েছে। এছাড়া সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে গ্রাম পর্যায়ের প্রায় ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক করা ও বিনামূল্যে ৩০ ধরনের ওষুধ প্রদান শেখ হাসিনার সফল সিদ্ধান্ত। সরকারি সহায়তার পাশাপাশি তিনি নিজে উদ্যোগী হয়ে তহবিল সংগ্রহ করেছেন। মাদ্রাসা, মসজিদ ও মন্দির থেকে শুরু করে এতিম ও গরিব শিক্ষার্থী, স্কুল শিক্ষক, শিল্পী ও সাংবাদিকসহ যারা সাধারণভাবে সরকারি সহায়তার আওতাভুক্ত নন, তাদের মধ্যে ২.৫ বিলিয়নের বেশি টাকা সুষ্ঠুভাবে বিতরণও করেছেন। আলোচনা ও সমালোচনার মাঝেও একদিকে নাগরিকের জীবন ও জীবিকা নিশ্চিত করেছেন, অন্যদিকে অর্থনৈতিক চাকাও সচল রাখার উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।

এদিকে, শুধু জিডিপি নয়, ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (১৬ অক্টোবর) হাঙ্গার ইনডেক্স প্রকাশ করেছে, এখানেও ভারতের তুলনায় বাংলাদেশ অপুষ্টির হার কমিয়ে ক্ষুধা মুক্তির লড়ায়ে অনেক এগিয়ে বাংলাদেশ। ১০৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৭৫, আর ভারতের অবস্থান ৯৪। পাকিস্তানের ৮৮-এর অবস্থান থেকেও বাংলাদেশ এগিয়ে আছে, যেখানে গত বছর বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৮৮।

পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে বিশ্বব্যাপী ক্ষুধা, নারীর ক্ষমতায়ন, বিশ্ব সুখ, টিকাদান, শিশুমৃত্যুরোধ ইত্যাদির মতো সমস্ত সূচকে বাংলাদেশ ভারতের চেয়ে এগিয়ে। আর ভারত মাত্র দুটি সূচকে এগিয়ে ছিল, ১. মাথাপিছু আয় ও ২. মানব উন্নয়ন। এবার মাথাপিছু আয়ে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়া অত্যন্ত সম্মান ও গৌরবের।

আর তাই শেখ হাসিনার সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত আর বিচক্ষণ নেতৃত্ব নিয়ে গোটা বিশ্বে বাংলাদেশ আজ রোল মডেল। আর তাই আইএমএফ-এর পূর্বাভাস প্রকাশের পর ভারতের অনেকেই শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কৌশল থেকে ‘ভারত পলিসি নির্ধারণ’ করার আহ্বান করেন। আবার বিশ্লেষকরা মনে করেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অর্থনৈতিক ও অন্যান্য বিষয়ে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা উভয় দেশের জন্যই লাভজনক। আর তাই দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বিরোধের নানামুখী ইস্যুগুলোকে গুরুত্ব দেওয়া, সীমান্ত হত্যাবন্ধসহ আরও ঘনিষ্ঠ কূটনৈতিক তৎপরতায় আন্তরিকতা নিয়ে ভারতকেই এগিয়ে আসতে হবে।

আর বাংলাদেশকে তার সম্ভাবনার সবটুকু কাজে লাগানোর উদ্যমী হয়ে পরিকল্পনা করেই আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা, জ্ঞান-বিজ্ঞানের মতো বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে। আমাদের অর্থনীতিকে আমরা আগামী বছরগুলোতে কোথায় নিয়ে যেতে চাই, অর্থনীতির চাকা কতটা সচল দেখতে চাই- এই লক্ষ্য নির্ধারণ করে আমাদের কর্মপন্থা সাজাতে হবে, আত্মবিশ্বাস নিয়ে নবতর অভিযাত্রায় এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ এটাই জাতির প্রত্যাশা।

 


আত্মসমালোচনা কবে করবো?

তসলিমা নাসরিন


১. ইরানের নাজাফবাদ শহরে একটি মেয়ে হিজাব না পরে সাইকেল চালিয়েছে। দুটো অপরাধ মেয়েটি করেছে, সাইকেল চালিয়েছে, এবং হিজাব পরেনি। ইচ্ছে করেই অপরাধ দুটো করেছে মেয়ে। চেয়েছে শহর দেখুক সে যে আইন ভাঙছে, সাইকেল চালাতে চালাতে, খোলা চুল ওড়াতে ওড়াতে, ডান হাতখানা নাড়াতে নাড়াতে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেছে সে। লুকিয়ে চুরিয়ে কিছু করেনি। যার হিজাব পরার ইচ্ছে, সে হিজাব পরুক, যার ইচ্ছে নেই, তাকে জোর করা হচ্ছে কেন। মেয়েদের আপত্তি এই জোর করা নিয়েই। নাজাফবাদের মেয়েটিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মেয়েটি নিশ্চয়ই জানত তাকে গ্রেফতার করা হবে, তাকে শাস্তি দেওয়া হবে। জেনেশুনেই সে বিষপান করেছে। শিক্ষিত সচেতন মেয়েরা আর কতকাল এই অত্যাচার সহ্য করবে! এই যে যা হয় হোক বলে বেরিয়ে পড়েছে স্বাধীনতার ডান হাত উত্তোলন করে, এ একদিনের সিদ্ধান্ত নয়। এ নিছক মজা করা নয়। চল্লিশ বছর ধরে জড়বস্তুর জীবন কাটাতে কাটাতে শ্বাসকষ্ট হতে থাকা কিছু প্রাণ শ্বাস নিতে বেরিয়েছে খোলা হাওয়ায়। এই মেয়েরা স্বাধীনতার প্রতীক। এই মেয়েরা ইতিহাস। কোনো একদিন ইরানে ঠিকই আধুনিক সমাজ প্রতিষ্ঠিত হবে, যে সমাজে নারীর সমানাধিকার থাকবে। নাজাফবাদের সাহসী এই মেয়েটির নাম সেই আধুনিক সমাজ প্রতিষ্ঠার পেছনে রয়ে যাবে। নারীবিদ্বেষের জগদ্দল পাথর সে সরাতে পারেনি। একটি নুড়ি তো সরিয়েছিল!

১৯৭৯ সালে ইসলামী বিপ্লব ঘটিয়ে মোল্লারা ক্ষমতা দখলের পর থেকে মেয়েদের হিজাব না পরে রাস্তায় বেরোনো অপরাধ। সাইকেল চালানোটা বৈধ ছিল। কিন্তু কয়েক বছর আগে সাইকেল চালানোর বিরুদ্ধে মোল্লাগুরু একখানা ফতোয়া জারি করেন। এদিকে ইরানের কিছু শহরে বায়ুদূষণের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলাকালে কলের গাড়ি বাদ দিয়ে মানুষ যখন পায়ে-চালানো সাইকেলকে আশ্রয় করছে, তখনই এই ফতোয়া। সাইকেল-চালানো মেয়েরা তো রুখে দাঁড়াল। ইসলামের কোথায় আছে মেয়েদের সাইকেল চালানো চলবে না? কোথাও তো নেই! ১৪০০ বছর আগে সাইকেল নামে কোনো বস্তু ছিল না। তাহলে? ধর্মের নামে তাহলে মেয়েদের ন্যায্য অধিকার সবই হরণ করার চেষ্টা চলছে! ইরানের মেয়েরা সহজে ছেড়ে দেয় না। কিছু মেয়ে তো মাথা পেতে যা আদেশ আসে, তা-ই বরণ করে। তাদের কথা আলাদা। কেউ কেউ কিন্তু আদেশ বরণ করতে চায় না, কিন্তু বরণ করতে বাধ্য হয়। কিছু মেয়ে প্রতিবাদ করে। সারা বিশ্ব দেখেছে হিজাবের বিরুদ্ধে ইরানি মেয়েদের অভিনব প্রতিবাদ। রাস্তার কিনারে উঁচু কোনো জায়গায় দাঁড়িয়ে এরা লাঠির মাথায় হিজাব বেঁধে পতাকার মতো উড়িয়েছে। ওটিরই আরেক নাম ছিল স্বাধীনতা। সারা বিশ্বের স্বাধীনতাকামী মানুষ সাহসী ওই মেয়েদের বাহবা দিয়েছে। দূর থেকে তো বাহবাই দেওয়া যায়। যারা মোল্লাতন্ত্রের অধীনে বেঁচে থাকে, তারাই জানে বেঁচে থাকাটা ঠিক কেমন দুঃসহ।

ধর্মের নামে যে নির্যাতন মেয়েদের ওপর চলে, তার তুলনা হয় না। পিতৃতন্ত্র তো আছেই নির্যাতনের জন্য, তার সঙ্গে, মোল্লাতন্ত্রের দাপটে ধর্মকে যোগ করা হয়েছে। পিতৃতন্ত্র আর ধর্মের যখন মিলন ঘটে, তখন মেয়েদের ওপর নির্যাতন মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। মেয়েদের কার্যত বন্দী করা হয়। মেয়েরা বাধ্য হয় ঘরবন্দী হতে, পর্দার আড়ালে চলে যেতে; বাধ্য হয় পরনির্ভর হতে, সমাজের চোখে অপবিত্র অচ্ছুত হতে, অকিঞ্চিৎকর হতে, ক্ষুদ্র তুচ্ছ নগণ্য হতে। বিশ্বের সভ্য রাষ্ট্র ধর্মকে দূরে সরিয়েছে। মুশকিল হলো মুসলিম রাষ্ট্রগুলো এই একবিংশ শতাব্দীতেও ধর্মকে আঁকড়ে ধরে আছে। আধুনিক রাষ্ট্রের কোনো ধর্ম থাকতে নেই, এ কথা জানার পরও যে নেতারা ধর্মকে রাষ্ট্র এবং রাজনীতিতে মেশায়, তারা সভ্যতা এবং আধুনিকতা কোনোটিই চায় না। তাদের এই না চাওয়ার ফলে সবচেয়ে বেশি যারা ভোগে, তারা নারী।

২. প্যারিসের উপকণ্ঠে একটি স্কুল। স্কুলের ৪৭ বছর বয়সী ইতিহাস-ভূগোলের শিক্ষক স্যামুয়েল প্যাটি ১৩/১৪ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের ‘মতপ্রকাশের অধিকার’ বিষয়ে পড়িয়েছেন, পড়াতে পড়াতে মত এবং ভিন্নমতের উদাহরণ দিয়েছেন। এই উদাহরণের জন্য শিক্ষকরা হাতের কাছে শাসক এবং ধর্মগুরুদের কার্টুন বা ব্যঙ্গচিত্র রাখেন। যেহেতু ব্যঙ্গচিত্র আঁকলে তাঁদের ভক্তকুল এবং সমর্থকবৃন্দ ক্ষিপ্ত হয়। যে মতটি সবাইকে তুষ্ট করতে পারে না, সেটিই ভিন্নমত, এবং এই ভিন্নমতটির জন্যই প্রয়োজন মতপ্রকাশের অধিকার। কয়েক বছর আগে প্যারিসের শার্লি এবদো পত্রিকা অফিসে একটি কার্টুন ছাপানোর কারণে ১২ জন খুন হয়েছিল এই কাহিনি বলতে বলতে স্যামুয়েল প্যাটি ছাপা হওয়া কার্টুনটি শিক্ষার্থীদের দেখিয়েছেন। অবশ্য দেখানোর আগে মুসলিম ছাত্রছাত্রী যারা কার্টুনটি দেখতে চায় না, তাদের ক্লাসঘর থেকে আপাতত প্রস্থানের জন্য অনুরোধ করেছেন।

এরপর কী হলো? শিক্ষার্থীদের কিছু মুসলমান অভিভাবক স্কুল-প্রধানের কাছে অভিযোগ করলেন শিক্ষকের বিরুদ্ধে। কেন তিনি ওই কার্টুনটি শিক্ষার্থীদের দেখিয়েছেন! অভিভাবকদের এই প্রতিবাদের ভিডিও কোনো এক অভিভাবক ফেসবুকে প্রচার করেছিলেন। সেটিই নজরে পড়ে আবদুল্লাখ আনজরভের। আবদুল্লাখ আনজরভ ওই স্কুলের শিক্ষার্থী না হয়েও, কোনো শিক্ষার্থীর অভিভাবক না হয়েও স্কুলে প্রবেশ করে, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে খোঁজ নেয় ক্লাসে কী ঘটেছিল। কয়েকটি শিক্ষার্থীকে সে ৩০০ ইউরো দিয়েছে যেন স্যামুয়েল প্যাটি ঠিক কোন লোকটি তা দেখিয়ে দেয়।

ওদিকে একের পর এক হুমকি পেয়ে স্যামুয়েল প্যাটি পুলিশকে জানান। পুলিশ তাঁকে পরামর্শ দেন যে পথে তিনি বাড়ি যান, সেই পথে না গিয়ে এখন থেকে অন্য পথে বাড়ি যেতে। তা-ই করছিলেন প্যাটি, কিন্তু বাঁচাতে পারলেন না নিজেকে। চেচনিয়ার ১৮ বছর বয়সী সন্ত্রাসী আবদুল্লাখ আনজরভ তাঁকে শুক্রবার বিকালে স্কুলের বাইরের রাস্তায় দিব্যি জবাই করে ফেলে রাখল, হ্যাঁ জবাই। বড় একখানা মাংস কাটার ছুরি দিয়ে সে বীভৎস হত্যাকা-টি করে।

বিশ্ব তো কম দেখেনি সন্ত্রাস। মাথা ঠান্ডা রেখে বড় বড় সন্ত্রাসীরা বহুদিন ধরে হিসাব নিকাশ করে বড় বড় সন্ত্রাস ঘটাচ্ছে। এর মধ্যে অমুসলিম আছে, মুসলিমও আছে। মূলত রাজনীতিই কারণ।

আবদুল্লাখ আনজরভ চেচনিয়ার ছেলে। ১০ বছরের ভিসা নিয়ে সপরিবার প্যারিসে বাস করতে এসেছিল। মনে আছে বোস্টন ম্যারাথনে প্রেশার কুকার বোমা নিয়ে গিয়েছিল তামেরলান আর জোখার জারনায়েভ দুই ভাই? ওরাও ছিল চেচনিয়ার। চেচনিয়াও সন্ত্রাসী তৈরি করে।

যত বেশি ধর্মীয় সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটাবে ধর্মের নামধারী সন্ত্রাসীরা তত বেশি তারা ক্ষতি করবে মুসলমানদের। মুসলিমদের আর শরণার্থী হিসেবে, উন্নত শিক্ষা বা উন্নত চিকিৎসার জন্য ইউরোপ-আমেরিকায় প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। পাশ্চাত্যের সর্বত্র মানুষ মুসলমান দেখলে ভয় পাবে, তাদের ঘৃণা করবে। শান্তিপ্রিয় মুসলমানদেরও মানুষ সন্ত্রাসী ভেবে সন্দেহ করবে। মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ক্ষতি আসলে মুসলমানরাই করে। চিরকালই করে এসেছে।

৩. নিজের মুসলিম-দেশ ছেড়ে যে মুসলিমরা ইউরোপ আমেরিকায় বসে নানা সুযোগসুবিধে ভোগ করছেন, তাঁদের অধিকাংশই বড় অবলীলায় সেই দেশগুলোর বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করেন। বিষোদ্গার করতে তাঁদের দু’বার ভাবতে হয় না কারণ তাঁরা ভালো করেই জানেন তাঁরা বাক-স্বাধীনতা ভোগ করতে পারেন একমাত্র ওসব দেশেই। বিষোদ্গারের জন্য তাঁদের কেউ জেলে ভরবে না, তাঁদের মুন্ডু কেটে কেউ রাস্তায় ফেলে রাখবে না। তাঁরা তখনই পাশ্চাত্যের বিরুদ্ধে সরব হন, যখনই মুসলিম সন্ত্রাসীরা ইসলামের নামে সন্ত্রাস করে, বোমা মেরে উড়িয়ে দেয় সভ্যতা, নিরীহ মানুষদের জবাই করে। পশ্চিমি দেশগুলো মূলত সেক্যুলার (রাষ্ট্র থেকে ধর্মকে আলাদা করা), তারপরও তাঁরা দেশগুলোকে ‘খ্রিস্টান দেশ’ বলবেন। লক্ষ লক্ষ মুসলমানকে পশ্চিমি দেশ আশ্রয় দিয়েছে, তারপরও বলবেন দেশগুলো মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেছে, মুসলমানদের ঘৃণা করে, ইসলামকে ঘৃণা করে। মোদ্দা কথা, জিহাদি হত্যাযজ্ঞের ন্যায্যতা প্রমাণ করার জন্য একটা ‘যুক্তি’ বের করেন তাঁরা। এতে কাদের লাভ হয়? লাভ হয় জিহাদিদের। তারা যে ঠিক কাজ করছে, এ ব্যাপারে তাদের ধারণা আরও পোক্ত হয়। অগুনতি মুসলিম তরুণও জিহাদি দলে যোগ দেওয়ার প্রেরণা পায়।

মুসলিমরা কেন সন্ত্রাস করছে, কেন দেশে দেশে অমুসলিম বা ইসলামে-অবিশ্বাসীদের হত্যা করছে? যেহেতু কোনো এক কালে অমুসলিমরা মুসলিম-দেশগুলোকে উপনিবেশ করেছিল, যেহেতু ইসলামি খেলাফত ভেঙে দিয়েছিল, যেহেতু ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিয়েছিল, যেহেতু ইরাকে বা আফগানিস্তানে বোমা ফেলেছিল। সব অন্যায়ের ফল এখন ভোগ করতে হবে। আবার তাঁরা এও বলেন, জিহাদি নাকি পাশ্চাত্যের সৃষ্টি, সন্ত্রাসী বাম দলগুলোও নাকি পাশ্চাত্যের সৃষ্টি, এমনকি মুসলিম সমাজে যে মুক্তচিন্তক জন্ম নিচ্ছেন, মানুষকে বিজ্ঞানমনস্ক করার উদ্দেশে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মৌলবাদের বিরুদ্ধে বলছেন, তাঁরা নাকি মুক্তচিন্তক নন, তাঁরা নাকি যুক্তিবাদী নন, তাঁরা নাকি পশ্চিমা বিশ্বের ভাড়া করা লোক। এর মানে তাঁরা বিশ্বাস করেন খ্রিস্টান, ইহুদি, হিন্দু, বৌদ্ধ ধর্মীয় সমাজে মুক্তচিন্তক এবং যুক্তিবাদী জন্মাতে পারেন, কিন্তু মুসলিম সমাজে জন্মাতে পারেন না। তাঁরা, যা তাঁদের পছন্দ নয়, সব কিছুর ক্রীড়নক হিসেবে পশ্চিমা বিশ্বকেই চিহ্নিত করেন। এতে বিরাট যে সুবিধে, তা হলো আত্মসমালোচনা করার প্রয়োজন হয় না।

তাঁরা মুসলিমদের ধর্ম-নিরপেক্ষ, আধুনিক, গণতন্ত্রে-বাকস্বাধীনতায়-সমানাধিকারে বিশ্বাসী করতে চান না। তাঁরা চান এভাবেই মুসলিম সমাজ অন্ধকারে পড়ে থাকুক, আর তরুণ তরুণী ধর্মান্ধ হতে থাকুক, আর সন্ত্রাস করতে থাকুক। তাঁদের কাজ মুসলিম দেশগুলোর যা কিছু খারাপ, দারিদ্র্য, অশিক্ষা, কুশিক্ষা, রাজনৈতিক অস্থিরতা, সামাজিক দুরবস্থা, সব কিছুর জন্য তো বটেই, সন্ত্রাসীদের অপরাধের জন্যও, পাশ্চাত্যকে দায়ী করা।

ইহুদিরা যত অত্যাচারিত হয়েছে, তত আর কারা হয়েছে ইতিহাসে? ইহুদিরা কি কোনো এককালের নাৎসি ইউরোপে বোমা মেরে মেরে প্রতিশোধ নিচ্ছে? জরথুস্ট্রপন্থি বা পার্সিরা আজো কিছু অবশিষ্ট আছে, তারা কি মুসলিমরা তাদের অঞ্চল দখল করে নিয়েছে বলে মুসলিমদের মুন্ডু কাটছে? পাশ্চাত্যের ভুল তো আছেই, কিন্তু তারা ভুল করেছিল বলেই আমাদের ভুল করতে হবে? তারা অন্যায় করেছিল বলে আমাদের অন্যায় করতে হবে?

মুসলিম সমাজের সবচেয়ে বড় মুশকিল এই, যাঁদের কাজ মুসলিম সমাজকে মৌলবাদের আগ্রাসন থেকে মুক্ত করা, রাষ্ট্র থেকে ধর্মকে পৃথক করা, আইনকে সমানাধিকারভিত্তিক করা, নারীর অধিকার নিশ্চিত করা, সেই মুসলিম বুদ্ধিজীবীরা, শিক্ষিত সচেতন লোকেরাই মুসলিম সমাজের কোনো পরিবর্তন চান না, মুসলিমদের অন্ধকার থেকে বের করতে চান না, তাঁরাই ছলে কৌশলে জিহাদিদের ঘৃণ্য কার্যকলাপকে সমর্থন করেন।

আত্মসমালোচনা না করলে কোনো মানুষ বড় হতে পারে না, কোনো সম্প্রদায় সভ্য হতে পারে না।

 

সংগ্রহীত

Sunday, October 18, 2020

 

আজকের খবর

১৮/১০/২০২০

১/

বাংলাদেশের ভ্যাকসিন 

বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেকের তৈরি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন ‘ব্যানকোভিড’কে তালিকাভুক্ত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। 

গ্লোব বায়োটেকই বিশ্বের একমাত্র প্রতিষ্ঠান যাদের তিনটি ভ্যাকসিন তালিকায় স্থান পেয়েছে।

২/

ভাত খেলে ওজন বাড়ে, ভাতে নেই কোনো উপকার

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ভাতকে যতটা ক্ষতিকর মনে করা হয় আসলে তা নয়। বরং ভাতের মধ্যে রয়েছে উপকারও। 

দিনে এক-দুবার ভাত খান

ভারতের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সুকুমার মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সুষম খাবারের অঙ্গ হিসেবে অল্প করে ভাত খেলে, সে আপনি যদি ফ্যানযুক্ত ভাতও খান, ওজন বাড়ে না, বরং উচ্চ রক্তচাপ, মেটাবলিক সিনড্রোম  ও কোমরের মাপ বাড়ার আশঙ্কা কমে। 

কিছু ক্যানসারের আশঙ্কাও কমে। 

কাজেই সারা দিনে ১৫০ গ্রামের মতো ভাত খেতেই পারেন। এতে ৫০০ ক্যালোরির বেশি ঢোকে না শরীরে।

সংগ্রহীত

Wednesday, October 14, 2020

              আজকের ভাবনা

         ১৫/১০/২০২০



কেমন ভাবে দিনগুলি চলে যাচ্ছে। ২০২০, আর মাত্র দুই মাস আছে। আমাদেরকে একটা অন্যরকম জীবন দিয়ে গেল। জাপানে সব কিছু ডিজিটালাইজড করার চিন্তা ভাবনা করছে।

আমরা এখানে সবাই এক একটা বিচ্ছন্ন দ্বীপের বাসিন্দা ছিলাম, এখন দ্বীপটা্র সীমানা আরওছোট হয়ে গেছে। 

তবে বুঝিয়ে দিয়ে গেল, শুধু মাত্র, আমি এবং আমার পরিবার, নিয়ে আমাদের জীবন পরিপূর্ণ হতে পারেনা। বৃত্ত এর মধ্যে পরিবার একটা বিন্দু মাত্র।

চারপাশের সব কিছু বড়ই মুল্যবান কারণ এই সবকিছুই আমাদের পরিপূর্ণতা দান করে। সবাই সুখী ত আমরা সুখী।

জগতের সবাই সুখী হক।



Tuesday, October 6, 2020


আজকের ভাবনা

 ৭/৯/২০২০



রবিবারে বাসায় পার্টি ছিল। সবাই খুব খুশি বাসায় আসতে পেরে। বিদেশে সবাই এরকম

বাড়িতে হওয়া  পার্টি  পছন্দ করে। কারণ

বাসার রান্নার স্বাদই আলাদা। সবাই খুব মন খুশি করে খাচ্ছিল। আয়োজন খুবই সামান্য।

সাদা পোলাও, ফ্রাইড চিকেন, চাইনীজ ভেজিটেবল, চিংড়ির দো- পেয়াজা, ইলিশের কারি, বিফ কারি, সালাদ, দই আর পুডিং। সবাই খেয়ে যখন মাতোয়ারা তখন আমার মনে পড়ে গেল আগের দিনের কথা।

যখন আমি জাপানে এসে স্বামীর বাড়ীতে প্রথম রান্না করলাম বরবটি দিয়ে চিংড়ী। আমার উনি বললেন এটা ফেলে দিয়ে ডিম ভাজ। হায়রে ডিম ভাজি। তাও খাওয়া গেল না। শুধু খাওয়ার জন্য অন্য বাড়ীতে যেতাম।

সব ভাবিরা কি করে এত ভাল রান্না করে আর আমার কেন হয় না, শুধু ভাবতাম আর ভাবতাম। এখন সেই আমি সেই রান্না করি। সবাই রান্না খেয়ে খুব প্রশংসা করে। 

তাই নুতন বউরা আশা ছেড়ো না।

এই দিন না আর ও দিন আছে।


Saturday, October 3, 2020


  আজকের ভাবনা

    ৩/১০/২০২০


আমার কাছে বয়স একটা সংখ্যা ছাড়া কিছুই
না। আমি এ বয়সে এ করতে পারবা না। ওটা করা যায় না। এ সমস্ত
সমাজ আর মানুষের কথা পরোয়া করি না।
আমি এই ঘেরাটোপের বাইরে থেকে জগত কে দেখতে চায়। আমি নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে একটা জিনিস বুঝতে
পারলাম, আমার নিজের জীবন আমার নিজের একার। আমার অনুভব , আমার অভিজ্ঞতা আমার একার। আমাকে আমি ছাড়া আর কেউ বোঝেনা। আমার ভাল লাগা খারাপ লাগাই তাদের কিছু আসে যায় না।
তাহলে আমার কি যায় আসে, তারা কি 
ভাবল না কি ভাবল ? আমার কাছে আমিই সব।