Wednesday, March 17, 2021

 

স্টুপিড মানুষেরা, মানুষের মধ্যে সবচাইতে বিপজ্জনক




ইতালিয়ান ইকোনোমিক হিস্টরিয়ান চিপলা এই ম্যাট্রিক্সটি আনেন, একে বলে চিপোলা ম্যাট্রিক্স। 

তিনি দেখান (১৯৭৬) যে, স্টুপিড মানুষেরা হচ্ছে দুনিয়ার জন্য সবচাইতে ক্ষতিকর। 


 বুদ্ধিমান লোক- তার নিজের লাভ করে+অন্যের লাভ করে। 


খারাপ লোক -নিজের লাভ করে কিন্তু অন্যের ক্ষতি করে। 


দুর্বল লোক-  নিজের ক্ষতি করে কিন্তু অন্যের লাভ হয় এতে। 


স্টুপিডলোক-নিজের  ক্ষতি করে, অন্যেরও ক্ষতি করে। 


 


Monday, March 15, 2021

 

সংস্কৃতি ও রাজনীতি

আবুল কাসেম ফজলুল হক   

১৬ মার্চ, ২০২১ ০৪:১৭ | পড়া যাবে ৯ মিনিটে



সংস্কৃতি ও রাজনীতি

বানরসদৃশ এক প্রাণী  (ape) জেনারেশনের পর জেনারেশন ধরে, পরিবেশের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আপন ইচ্ছাশক্তি, চিন্তাশক্তি ও শ্রমশক্তি ব্যবহার করতে করতে মানুষে উত্তীর্ণ হয়েছে এবং সেই মানুষ আপন সংস্কৃতিচেতনার বলে পরিবেশ ও প্রকৃতিকে কাজে লাগিয়ে উন্নতি করে চলছে। মানুষ বুদ্ধিমান এবং উন্নতিপ্রয়াসী প্রাণী। মানুষ পরিবেশকে পরিবর্তন করতে করতে নিজেও পরিবর্তিত হয়েছে। ‘বদলে যাও, বদলে দাও’—এ রকম একটি উক্তি এখানে পাশ্চাত্যে ও প্রাচ্যে কিছু লোকের মুখে শোনা যায়।

kalerkanthoগর্ডন চাইল্ডের বিখ্যাত বই  ‘Man Makes Himself’. এতে মানুষকে তিনি দেখেছেন উন্নতিশীল প্রাণীরূপে। ব্যক্তিগত ও সম্মিলিত প্রচেষ্টায় পরিবেশের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়ার মধ্য দিয়ে মানুষের নিজেকে এবং নিজেদের গড়ে তোলা, জ্ঞাতসারে কিংবা অজ্ঞাতে বিকশিত হয়ে চলা, সেই সঙ্গে পরিবেশকেও উন্নত করে চলা—এরই মধ্যে নিহিত থাকে ব্যক্তির কিংবা সমষ্টির সংস্কৃতি। মানুষ শুধু বেঁচে থেকেই সন্তুষ্ট থাকে না, উন্নতি করতে চায়।

সংস্কৃতি স্বতঃস্ফূর্ততার ব্যাপার যেমন, তেমনি সজ্ঞান, সচেতন, সতর্ক চর্চারও ব্যাপার। উন্নতি বা প্রগতি নির্ভর করে সজ্ঞান চর্চার ওপর। ফ্রয়েডের অনুসরণে বলা যায়, সংস্কৃতি ও প্রগতির জন্য আদিসত্তাকে সংযত করে, বাস্তবসত্তা ও নৈতিক সত্তাকে অবলম্বন করে চলতে হয়। প্রগতি কার্যকর হয় প্রতিক্রিয়ার মোকাবেলা করে, রক্ষণশীলদের সহায়তা নিয়ে। রক্ষণশীল ও প্রতিক্রিয়াশীলে পার্থক্য আছে।

‘The Descent of Man’ গ্রন্থে ডারউইন উদাহরণ দিয়ে দেখিয়েছেন, কী করে মানুষ জেনারেশনের পর জেনারেশন ধরে নিজের অজান্তেই নিজের জীবনযাত্রার, কাজের ও পছন্দ-অপছন্দের মধ্য দিয়ে নিজেকে সৃষ্টি করে চলছে। এরই মধ্যে উন্নতির সজ্ঞান ও সচেতন প্রয়াসও থাকে—থাকে সাধনা ও সংগ্রাম। মনোগত উন্নতি ও পারিপার্শ্বিক অবস্থার উন্নতি দুয়ের মধ্যেই মানুষের সক্রিয় ভূমিকাতে নিহিত থাকে সংস্কৃতি। সংস্কৃতির বিবেচনায় struggle for existence, natural selection ও  survival of the fittest প্রভৃতি ধারণাও বিবেচ্য। সংস্কৃতি ব্যক্তিগত জীবনের ব্যাপারে যেমন, তেমনি জাতীয় জীবনেরও ব্যাপার।

মানুষকে অস্তিত্ব রক্ষা ও উন্নতি করতে হয় একদিকে প্রকৃতির প্রতিকূল ও অনুকূল নানা শক্তির সঙ্গে জটিল সব সম্পর্কের মধ্য দিয়ে এবং আপন সমাজের অভ্যন্তরে জটিল সব সম্পর্কের মধ্য দিয়ে। মানুষের শক্তি হলো তার ইচ্ছাশক্তি, চিন্তাশক্তি ও শ্রমশক্তি। শুধু শারীরিক শক্তিই শক্তি নয়, মানসিক শক্তিও শক্তি এবং মানসিক শক্তিও শারীরিক শক্তির মতোই গুরুত্বপূর্ণ। মানসিক শক্তি শরীরের বাইরের কিছু নয়। মনকে কখনো শরীর থেকে আলাদা করা যায় না।

ডারউইনের অনুসরণে হার্বার্ট স্পেন্সার  ‘Evolution and Ethics’ গ্রন্থে মানুষের নৈতিক চেতনার ক্রমবিকাশের বিবরণ রচনা করেছেন। ইতিহাসের ধারায় পরিবেশের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের নীতিতে আছে অভিযোজন  (adaptation) গ্রহণ-বর্জন। পরিবেশের স্পর্শ কিংবা প্রভাব থেকে মুক্ত কোনো চেতনার কিংবা মনের অস্তিত্ব পাওয়া যায় না। মানসিক শক্তিও আসলে দেহেরই শক্তি। মানসিক শক্তির মধ্যে থাকে নৈতিক শক্তি, জ্ঞান-বিজ্ঞান ও শিল্প-সাহিত্য সৃষ্টির শক্তি—আদর্শ উদ্ভাবন ও আদর্শ প্রতিষ্ঠার শক্তি।

নৈতিক উন্নতির জন্য জ্ঞানগত ও চিন্তাগত উন্নতির সঙ্গে পরিবেশের উন্নতি সাধনও অপরিহার্য। মানুষ সেই জৈবিক সামর্থ্যেরও অধিকারী, যার বলে সে ব্যক্তিগত ও সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নিজের এবং নিজেদের সংস্কৃতির পরিচয় দেয়। মানুষের বিবর্তনে মানুষের ব্যক্তিগত ও যৌথ সংস্কৃতিচেতনাই কর্তা। সংস্কৃতির মর্মে প্রগতির তাড়না ক্রিয়াশীল থাকে। কল্পিত উন্নত অবস্থায়ই আদর্শ। মানুষ আদর্শ সৃষ্টি করে এবং আদর্শে পৌঁছতে চায়।

শ্রী অরবিন্দ ভারতীয় সংস্কৃতির ভিত্তি গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, ‘পৃথিবীতে স্বার্গরাজ্য স্থাপনই সংস্কৃতির জীবন্ত লক্ষ্য।’ তাঁর ‘দীব্য জীবন  (Life Devine)’  গ্রন্থেও এ রকম চিন্তাই আছে। পার্থিব জীবনকেই তিনি দীব্য জীবনে উন্নীত করার কথা বলেছেন। এ রকম কথা বিভিন্ন দেশে আরো কেউ কেউ বলেছেন। অরবিন্দ প্রথমত মানুষের মনোদৈহিক উন্নতিতে—তারপর আর্থ-সামাজিক-রাষ্ট্রিক উন্নতিতে গুরুত্ব দিয়েছেন।

যারা সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও শিক্ষাগত দিক দিয়ে পশ্চাত্বর্তী ও দরিদ্র, তাদেরও সংস্কৃতি আছে। জীবনযাত্রার মধ্য দিয়ে তারাও উন্নতি করতে চায়—তাদের মধ্যেও ন্যায়-অন্যায়বোধ, সৌন্দর্যবোধ ও সর্বজনীন ও কল্যাণবোধ আছে। অগ্রসর সংস্কৃতির প্রভাব গ্রহণের মধ্য দিয়ে তারা সংস্কৃতিমান থাকে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিজেদের থেকে, নিজেদের জন্য, নিজেদের চেষ্টায় নেতৃত্ব সৃষ্টি করে তারা শক্তিশালী হতে পারে এবং অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারে। অনৈক্যের মধ্যে তারা দুর্বল ও বঞ্চিত থাকে। সংস্কৃতির দাবি, রাষ্ট্রব্যবস্থা ও বিশ্বব্যবস্থায় প্রবল ও দুর্বল, ধনী ও দরিদ্র সব মানুষেরই উন্নতির সুযোগ উন্মুক্ত রাখা।

সংস্কৃতি মানবীয় ব্যাপার। মানুষ কৃষ্টিমান বা সংস্কৃতিমান প্রাণী। মানুষ ছাড়া আর কোনো প্রাণীই সংস্কৃতিমান বা কৃষ্টিমান নয়। মানুষ শুধু বেঁচে থেকেই সন্তুষ্ট থাকে না, উন্নতি করতে চায়। ব্যক্তিগত ও সম্মিলিত জীবনে মানুষ পরিবেশকেও উন্নত করতে চায়। এর মধ্যেই থাকে মানুষের সংস্কৃতিমানতা। বেঁচে থাকার ও উন্নতি করার জন্য মানুষকে চিন্তা ও কাজ করতে হয়। অনেক কাজই অন্যদের সঙ্গে মিলে করতে হয়, একা পারা যায় না। সংস্কৃতি হলো সেই শক্তি, যা মানুষের চিন্তা ও কাজে উন্নতিশীলতা, উৎকর্ষমানতা, সৌন্দর্যমানতা, প্রগতিশীলতা ও পূর্ণতা প্রয়াসের মধ্যে বিরাজ করে। সংস্কৃতি হলো ব্যক্তিগত ও সম্মিলিত জীবনে সংস্কার প্রচেষ্টা, উত্তরণ প্রচেষ্টা। জীবনযাত্রার, শিক্ষার ও অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে মানুষের নিজেকে এবং নিজের সমাজ ও পরিবেশকে উন্নত, সুন্দর ও সমৃদ্ধ করার প্রবণতা, চিন্তা ও চেষ্টার মধ্যে নিহিত থাকে সংস্কৃতি। সংস্কৃতিতে সর্বজনীন কল্যাণবোধ, ন্যায়-অন্যায়বোধ ও ন্যায়নিষ্ঠা থাকে। শঠ, প্রতারক ও লোভীর প্রবণতা ও প্রচেষ্টা সংস্কৃতির পরিপন্থী। সংস্কৃতি যেমন ব্যক্তিগত জীবনের ব্যাপার, তেমনি যৌথ বা সম্মিলিত জীবনেরও ব্যাপার। তা জাতীয় ব্যাপার, সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক ব্যাপারও।

ব্যক্তির সংস্কৃতির পরিচয় থাকে তার কর্মে ও ব্যক্তিত্বে। জাতির সংস্কৃতির পরিচয় থাকে জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষায়, চিন্তায় ও কর্মে। জাতীয় সংস্কৃতিকে বলা যায় জাতির অন্তর্গত ও জনগণের সমষ্টিগত ব্যক্তিত্ব। তাতে ভালো ও মন্দ দুই-ই থাকে। ভালো-মন্দ, সুন্দর-কুৎসিত, ন্যায়-অন্যায়, রীতি-নীতি, আইন, আচার-অনাচার, কর্তব্য-অকর্তব্য ইত্যাদি সম্পর্কে জাতির অন্তর্গত জনগণের স্বীকৃত ধারণার ভিত্তিতে গড়ে ওঠে জাতীয় সংস্কৃতি। তবে সর্বস্বীকৃত নয় এমন ধারণাও থাকে প্রত্যেক জাতির অন্তর্গত বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর ও চিন্তাশীল ব্যক্তিদের জীবনে। কোনো জাতির অন্তর্গত জনগণের সব চিন্তা ও কর্ম এবং উৎপাদন ও সৃষ্টিই সেই জাতির সংস্কৃতির বাহন। প্রত্যেক জাতির সংস্কৃতিতে বিশিষ্টতা ও স্বাতন্ত্র্য আছে। এক জাতির সংস্কৃতির সঙ্গে অন্য জাতির সংস্কৃতির সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য দুই-ই আছে। এক জাতি অন্য জাতির সংস্কৃতি থেকে গ্রহণও করে। উন্নতির জন্য গ্রহিষ্ণুতা অপরিহার্য।

বিভিন্ন জাতির মধ্যে যাঁরা সংস্কৃতি নিয়ে চিন্তা ও কাজ করেন তাঁদের মধ্যে নানা দৃষ্টিভঙ্গি, চিন্তা ও কাজ আছে। আমি এখানে একটি দৃষ্টিভঙ্গি—বলা যায় বিবর্তনমূলক দৃষ্টিভঙ্গি অবলম্বন করে কিছু কথা বললাম। আজকের বাংলাদেশে, সব রাষ্ট্রেই এই দৃষ্টিভঙ্গি অবলম্বন করে সংস্কৃতিকে বুঝবার প্রচেষ্টা দরকার। গত তিন-চার দশক ধরে সভ্যতা, প্রগতি নিয়ে নতুন চিন্তা-ভাবনা প্রায় দুর্লভ হয়ে পড়েছে। হান্টিংটনের  ‘Clash of Civilizations’ গ্রন্থে সভ্যতার কথা যেভাবে বলা হয়েছে তা জনস্বার্থে নয়, সাম্রাজ্যবাদী ও পুঁজিবাদীদের স্বার্থে। সংস্কৃতি নিয়ে আলোচনা আছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সংস্কৃতিকে গণ্য করা হয় বিনোদনরূপে। নাচ-গান, নাটক, কবিতা, গল্প, উপন্যাস ইত্যাদিতে সংস্কৃতির ধারণা ও চিন্তাকে সীমাবদ্ধ রাখা হয়। বিবর্তনমূলক যে দৃষ্টিভঙ্গি অবলম্বন করে আমি সংস্কৃতিকে বুঝবার কথা বলছি তা সংস্কৃতিকে বিনোদন দিয়ে বুঝবার চেয়ে অনেক বেশি কল্যাণকর। আমি সর্বজনীন কল্যাণের কথা বলছি। কায়েমি স্বার্থবাদীরা এই দৃষ্টিভঙ্গিকে তাদের স্বার্থের প্রতিকূল মনে করবে। সর্বজনীন কল্যাণে সভ্যতা ও প্রগতি সম্পর্কেও নতুনভাবে চিন্তা করা দরকার। নতুন পর্যালোচনায় গেলেই দেখা যাবে, সভ্যতা ও সংস্কৃতি কার্যত একই ব্যাপার। সংস্কৃতি বিষয়ে যেমন নানা ধারণা আছে, তেমনি সভ্যতা বিষয়েও আছে নানা ধারণা। এই সব ধারণা নিয়ে আমরা কী অর্জন করতে চাই, তার ওপর নির্ভর করবে আমাদের ধারণার ধরন। প্রগতির ধারণা সভ্যতা ও সংস্কৃতি দুয়ের মধ্যেই নিহিত থাকে। গত তিন-চার দশক ধরে অত্যুন্নত নতুন প্রযুক্তি নিয়ে রাষ্ট্রব্যবস্থা ও বিশ্বব্যবস্থা যেভাবে চলছে তাতে কায়েমি স্বার্থবাদীরা প্রগতির ধারণাকেও সামনে আসতে দিতে চায় না।

আলোচনা-সমালোচনা আরম্ভ হলেই দেখা যাবে, বিষয়গুলো নিয়ে প্রগতিশীল ধারণা, রক্ষণশীল ধারণা ও প্রতিক্রিয়াশীল ধারণা স্পষ্ট রূপ নিচ্ছে। লেখা, পুস্তক-পুস্তিকা, সাময়িক পত্রিকা ও সংবাদপত্রের কোনো বিকল্প নেই। আলোচনা-সমালোচনার মধ্য দিয়ে ন্যায়, সত্য ও সুন্দরকে বিকশিত ও প্রতিষ্ঠিত করতে হয়।

দুনিয়াজুড়ে এখন উৎপাদন ও বৈষয়িক সম্পদ বেড়ে চলছে। অর্থনৈতিক উন্নতির এই ধারা বাংলাদেশেও চলছে। শ্রমিক, কৃষক ও মধ্যবিত্তের কঠোর শ্রম নতুন প্রযুক্তির কল্যাণে এটা সম্ভব হচ্ছে। উন্নয়নের এই প্রক্রিয়ায় সরকারের ও রাজনৈতিক দলগুলোরও এতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। দুর্নীতি ও অপব্যবস্থার কারণে অনেক সম্ভাবনা নষ্ট হয়ে যায়। বাংলাদেশের রাজনীতি যদি ক্রমে দুর্নীতিমুক্ত হওয়ার প্রক্রিয়ায় থাকত, তাহলে উন্নয়ন আরো বেশি হতো এবং রাষ্ট্র বিধি-বিধান, সর্বজনীন কল্যাণ ও মানবতার বিকাশের অনুকূল হতো।

সর্বাঙ্গীণ উন্নতির জন্য কোনো সরকারের ও রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর নির্ভরশীল না থেকে জনকল্যাণের দিক দিয়ে বিবেকবান চিন্তাশীল ব্যক্তিদের ও পেশামূলক সংগঠনগুলোরও মত প্রকাশ দরকার। তার জন্য প্রগতিকামী প্রচারমাধ্যম দরকার। প্রগতিপ্রয়াসী প্রচারমাধ্যম গড়ে তোলা দরকার। সেটা কঠিন কাজ, তবে অসম্ভব নয়। প্রগতিপ্রয়াসী সংগঠন ও নেতৃত্ব সৃষ্টি করতে পারলে সেটা সম্ভব হবে।

Saturday, March 13, 2021

 

বয়সের ছাপ লুকাবে যে শাক

 মুহাম্মদ শফিকুর রহমান 
 ১০ মার্চ ২০২১, ০৯:১৮ পিএম  |  অনলাইন সংস্করণ
Shares
facebook sharing button
messenger sharing button
twitter sharing button
pinterest sharing button
linkedin sharing button
print sharing button
বয়সের ছাপ

পালংশাক খনিজ, ভিটামিন, পানি ও আঁশসমৃদ্ধ। 

পালংশাকের বিটা ক্যারোটিন চোখে ছানি পড়ার ঝুঁকি কমায়। ব্রণ,বলিরেখা কমাতে সাহায্য করে। ত্বকের সুরক্ষায় পালংশাকের ভূমিকা অনন্য। নাস্তায় নুডুলসের পরিবর্তে এক বাটি পালংশাক খাওয়া যেতে পারে। পালংশাকের সুপ ওজন কমাতে সহায়ক। কোনো চর্বি নেই। পালংশাকে প্্রচুর পানি থাকে। রক্তের গুণগুণ বাড়াতে পারে পালংশাক। কারণ পালংশাকে আছে আয়রণ। হালকা জালে পালংশাক রান্না করতে হবে। তাহলে পুষ্টিগুণ অক্ষুন্ন থাকবে।


 পালংশাকের মাস্ক ২০ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। এরপর ধুয়ে ফেলুন। 


পালংশাক,গাজর,শসা ব্লেন্ড করুন। এই জুস পুষ্টিগুণে অনন্য। কয়েক দিন খেলে এর ফলাফল হাতেনাতে টের পাবেন। 

ত্বকের সমস্যা দূর হবে। বয়সের ছাপ লুকাতে পালংশাক কাজ করে। এতে আছে ফ্্ির র্যাাডিকেলস, যা ত্বকে বার্ধক্যের ছাপ পড়তে দেয় না। মুখের ত্বকের যত্নে কত কিছুই না আমরা করি। এটা সেটা ব্যবহার করি। অথচ পালংশাক,মধু,লেবুর রস মিশিয়ে মুখে লাগালে অনেক উপকার হয়। এ মিশ্্রণ ২০ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। ত্বক সতেজ হবে। মরা কোষ পড়ে যাবে। ত্বক হবে মসৃণ,কোমল, উজ্জ্বল।

চুল পড়ে, চুল সাদা হয়ে যায়, চুলে মোটেই কোমলতা নেই- নিয়মিত পালংশাক খেতে পারেন। চুলের সমস্যা কেটে যাবে। কারণ পালংশাকে আছে ভিটামিন বি,সি,ই,পটাশিয়াম,ক্যালসিয়াম,ওমেগা-৩, ফ্যাটি অ্যাসিড। এর সবই চুলের জন্য খুব দরকারি। রক্তে লোহিত কণিকা কমে গেছে যাদের তারা পালংশাক খেলে উপকার পাবেন। পালংশাকের ভিটামিন,নিউট্্িরয়েন্টস লোহিত রক্ত কণিকার উৎপাদন বাড়ায়।

হাইপ্রেশার নিয়ন্ত্রণে পালংশাক ভালো কাজ করে বলে জানা যায়। পালংশাকের ভিটামিন, মিনারেলস নারীদের মাসিকজনিত সমস্যা দূর করে থাকে। 

পালংশাকের আলফা লিপোয়িক অ্যাসিড রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। শরীরে ইনসুলিনের সেনসিটিভিটি বাড়ায়। তাই ডায়বেটিস রোগীরা পালংশাক খেলে উপকার পাবেন। 

Thursday, March 11, 2021

 

আজকের ভাবনা

১২।৩।২০২১।


প্রতিটা মানুষেরই একান্ত নিজের বলে একটা দুনিয়া থাকে। সে দুনিয়ায় থাকে তার আবেগ, অনুভ‚তি, প্রেম, ভালোবাসা ইত্যাদি। কখনো কখনো মানুষের সেই দুনিয়াটা সামনে চলে আসে। যেহেতু সেই দুনিয়াটাতে সে  একাই বিচরণ করে, তাই ওখানকার আবেগ বা অনুভূতিগুলো কারও প্রকাশ্যে থাকে না। কেউ জানে না ওখানে কী চলছে। 

আমরা সবাই ক্রমশ একা হয়ে যাচ্ছি আর সেই অদেখা জগৎটাও পরিধি পাচ্ছে। নারীদের ক্ষেত্রে এর চিত্র ভয়াবহ। সে এমনিতে বন্ধু পরিজনহীনতায় থাকে। তাই তার মনে খবর নেওয়ার মতো কেউ থাকে না। মানুষ হিসাবে কারও সঙ্গে তার সুখ, দুঃখ, ভালোলাগা, মন্দলাগা গুলোকে শেয়ার করার জায়গা খুব কম পায়। কেউ বুঝবে না বা ভুল বুঝতে পারে ভেবে সে নিজের কথা নিজের ভেতরেই লুকিয়ে রাখে। 

 নারীদের একাকীত্ব কেউ বোঝে না, কথা শোনার মতো কেউ থাকে না। কিছু কিছু সমস্যা এমন হতে পারে যা সে কাউকেই বলতে পারে না বা সেই আস্থার জায়গাটা কারও কাছ থেকে পায় না। 

মানুষ বড় আজব প্রাণি, বিচিত্র্য তার মন। কাউকে বন্ধু ভাবতে চাইলেও পারে না। আসলে দিনশেষে কেউ কারও বন্ধু হয় না। যে যার প্রয়োজনে কাছে আসে মাত্র। 

সং গ্রহিত

Tuesday, March 9, 2021

 আজকের কথা

১০/৩/২০২১


ছেলের বউ সেবা করতে রাজি না বলে মা-বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে দিয়ে আসার গল্প আপনারা শুনেছেন। ছেলেকে কুলাংগার ডেকেছেন,ছেলের বউকে তো আরো কত কি গালি দিয়ে ফেলেছেন।

কিন্তু,যার কোনো ছেলে সন্তান নেই,কিন্তু মেয়ে আছে,সেই বাবা-মা বৃদ্ধাশ্রমে থাকলে আপনারা মেয়েটাকে ছিঃ ছিঃ করেন না। ভাগ্যকে দোষ দেন। "আহারে,লোকটার একটা ছেলে নেই বলে!" "আহা!লোকটার ভিটাভাড়ি চাকর-বাকর থাকলে ওরাই দেখাশোনা করত!" অথচ সেই মেয়েকেও অজস্র টাকা আর যত্ন দিয়ে লেখাপড়া করিয়ে মানুষ করে বাবা মা। একটা ছেলের মতই উপার্জন করছে তাদের মেয়ে। তাহলে কেন বাবা-মার ভরণপোষণ মেয়ে করতে পারবে না?
আপনারা সম অধিকারের কথা বলেন,কিন্তু বাবা মার প্রতি সমান কর্তব্য পালনের কথা কেন বলেন না? ছিঃ ছিঃ তা কিভাবে হয়? মেয়ের জামাইয়ের বাড়িতে মানুষ থাকে নাকি! তাই না?
ধিক্কার জানাই সুশীল সমাজের এইসব সুশীল নিয়ম কানুনকে!
ইসলাম বৃদ্ধ পিতামাতার সেবা করাকে ফরয করেছে। কোথাও বলেনি এই বিধান শুধু ছেলেদের জন্য। তাহলে আপনারা এই বিধান দেয়ার কে,যেন মেয়েরা শুধু শ্বশুর শ্বাশুরির সেবা করবে,আর ছেলে তার শ্বশুর শ্বাশুরির দিকে ফিরে তাকাবে না?
শুনুন,ইসলাম জানুন,নিজের বিবেককে নাড়া দিন। আপনার স্ত্রী আপনার বাবা মার সেবা না করলে অবশ্যই সে বিবেকহীনা। কিন্তু আপনার স্ত্রীকে তার বাবা-মার প্রতি ফরয দায়িত্ব পালন করতে বাধা দিলে আপনিও বিবেকহীন এবং গুনাহগার।
কাজেই মানসিকতা বদলান,সমাজ বদলাবে।
সংগ্রহিত

Saturday, March 6, 2021

 

শুকনো গোলাপের পাপড়ির ১০ ওষুধি গুণ

ডেস্ক রিপোর্ট: গোলাপ সবারই বেশ পছন্দের একটি ফুল। প্রিয় কাউকে ফুল দেয়ার কথা মাথায় আসলেই চোখের সামনে সর্বপ্রথম গোলাপ ফুলটি ভেসে ওঠে। সবচেয়ে সুন্দর ও সুঘ্রাণযুক্ত এই ফুলটি শুধু দেখতেই সুন্দর নয়, গুণেও অনন্য।

গোলাপের শুকনো পাপড়ির দারুণ দশটি ওষুধি গুণ রয়েছে। চলুন এর গুণাবলী ও ব্যবহার সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক-

ডায়রিয়ার পাশাপাশি কোষ্ঠ্যকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে উপকারী ভূমিকা রাখে শুকনো গোলাপের পাপড়ির গুঁড়া।

>> শুকনো গোলাপের পাপড়ির সঙ্গে মুলতানি মাটি মিশিয়ে চমৎকার ফেস প্যাক তৈরি করা যায়।

>> শুকনো গোলাপের পাপড়ি থেকে তৈরি করা গোলাপজল ত্বকের যত্নে ও ত্বক পরিষ্কার করতে দারুণ কার্যকর।

>> শুকনো ও গুঁড়া করা গোলাপের পাপড়ি পানিতে মিশিয়ে ক্ষতস্থানে ব্যবহার করলে ক্ষতস্থান দ্রুত ভালো হয়।

>> শুকনো গোলাপের পাপড়ি গুঁড়া দুধের সঙ্গে স্বল্প পরিমাণ মিশিয়ে পান করলে অ্যাসিডিটি ও স্টমাক আলসারের সমস্যা কমে যায়।

>> হারবাল চা তৈরিতে শুকনো গোলাপের পাপড়ির ব্যবহার নতুন কিছু নয়। বিভিন্ন মশলার সঙ্গে শুকনো এক-দুইটি পাপড়ি বা পাপড়ি গুঁড়া ব্যবহারে অ্যাসিডিটির সমস্যাসহ দাঁতের ক্যাভিটি বা ক্ষয়রোধ রোধ করা সম্ভব।

>> গলা ব্যথা অথবা অতিরিক্ত কাশি ও কাশির ফলে গলার ভেতরে ছিলে যাওয়ার মত জ্বলুনিভাব কমাতে চাইতে শুকনো গোলাপের পাপড়ি পানিতে জ্বাল দিয়ে ছেঁকে সেই পানিতে গার্গল করুন। আরাম মিলবে।

>> গোলাপের কুড়ি থেকে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন-সি পাওয়া যায়। তাই গোলাপের কুড়ির শুকনো পাপড়ির চা ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা ও কাশির প্রাদুর্ভাব কমাতে কার্যকর।

>> পুরো বিশ্ব জুড়েই রোজ অয়েল অন্যতম সর্বাধিক ব্যবহৃত একটি পণ্য। এই তেল ঘরেই তৈরি করে নেয়া সম্ভব। শুকনো গোলাপের পাপড়ি এবং নারকেল তেল জ্বাল দিতে হবে মাঝারি আঁচে। তেলের রঙ পরিবর্তন হয়ে আসলে ছেঁকে নিতে হবে ভালোভাবে এবং সংরক্ষণ করতে হবে।

শুকনো গোলাপের পাপড়ি সংরক্ষণ করবেন যেভাবে

ফুল থেকে পাপড়ি ছিঁড়ে টিস্যুর সাহায্যে চেপে চেপে শুকিয়ে নিন। শুকানো হয়ে গেলে রোদের আলোয় ২ থেকে ৩ ঘণ্টা রেখে এরপর পুনরায় টিস্যুর সাহায্যে মুছে এয়ার টাইট বক্সে ছড়িয়ে রাখুন। ৪ থেকে ৫ দিনের মধ্যে পাপড়িগুলো শুকিয়ে আসবে। এরপর প্রয়োজন মতো শুকনো গোলাপের পাপড়ি ব্যবহার করুন।

Thursday, March 4, 2021

আজকের ভাবনা

৫/৩/২০২১


আমি আজকাল একটা বিষয় বুঝতে পারছি

যে মেয়েরা এখন গার্মেন্টস এ চাকরী ক রে অনেকে ই মেনে নিতে পারছে না। আগে তারা বাসায় তাদের কাজের লোক ছিল। এখন তারা নিজে ইনকাম করে, নিজের মত করে চলে।

তারা কাজের লোক খুঁজে পায় না। হায়রে জগত! তোমার  স্বা র্থের সাথে না মিললেই 

তু মি তার পিন্ডি চটকাবে। তোমার মন পছন্দ না হলেই  তাকে খারাপ বলবে। 

কিছুই ছিলনা যারা এই সমাজে , তারা এক টু

 স ন্মানের সাথে বাঁচতে পারছে তা ও তোদের

সহ্য হচ্ছে না। 

জ্বালাটা কোথায় ধরতে পেরেছি।

অল্প পয়সায় তাদের শ্রম আর বিনা পয়সায় তাদের দেহ ভোগ করা যাচ্ছেনা তাই গায়ের

ফুসকায় জ্বালা ধরেছে। সাবধান! ঘা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।




Monday, March 1, 2021

 

ডাবল চিনের সমস্যায় ভুগছেন? মেনে চলুন এই কয়েকটি টিপস

অনলাইন ডেস্ক   

১ মার্চ, ২০২১ ১৫:২০ | পড়া যাবে ৩ মিনিটে



ডাবল চিনের সমস্যায় ভুগছেন? মেনে চলুন এই কয়েকটি টিপস

মুখে অতিরিক্ত মেদ জমলে পুরো চেহারা নষ্ট হয়ে যায়। মুখ ফোলা দেখায় সেই সঙ্গে আপনি যতটা না মোটা তার চেয়ে বেশি মোটা দেখায়। ব্যায়াম করে অনেক কষ্ট করে পেটের মেদ কমলেও মুখের মেদ কমানো যাচ্ছে না। ডায়েট করে, চুইংগাম চিবিয়ে দিনশেষে খুব একটা লাভ হয় না। এ জন্য মুখের মেদ কমাতে ডায়েটের পাশাপাশি প্রতিদিন নিয়ম মেনে কিছু ব্যায়াম করতে হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক মুখের মেদ কমানোর কিছু ব্যায়ামের কথা।

ব্যায়াম ১ : মুখ যতটা সম্ভব হাঁ করে খোলার চেষ্টা করুন যতক্ষণ না গালে, ঠোঁটে এবং থুতনিতে টান অনুভব করছেন। এভাবে অন্তত মিনিট তিনেক রেখে তার পর ১৫-২০ সেকেন্ড একটু বিশ্রাম নিন। দিনে মাত্র ৫-৬ মিনিট এই পদ্ধতিতে ব্যায়াম করার ফলে মুখের রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যাবে যা মুখের অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে সাহায্য করবে।

ব্যায়াম ২ : চোখ বন্ধ করে চোখের ওপর আঙুল রেখে চোখের পাতা নিচের দিকে নামানোর সঙ্গে ভ্রু ওপরে তোলার চেষ্টা করুন। এতে কপাল টান টান হবে। প্রতিদিন অন্তত মিনিট পাঁচেকের জন্য এ পদ্ধতিতে ব্যায়াম করুন। এতে চোখের কোলে জমে থাকা মেদ ঝরে যাবে। তা ছাড়া চোখ বন্ধ অবস্থায় চোখের মণি ওপর থেকে নিচে নামান। অনেকটা ঠিক চোখ বন্ধ অবস্থায় কিছু দেখার চেষ্টা করার মতো। অন্তত ১৫ মিনিট এই ব্যায়াম করতে হবে। প্রতিদিন অন্তত একবার এই ব্যায়ামটি করে দেখুন।

ব্যায়াম ৩ : মাথাটা ধীরে ধীরে যতটা সম্ভব পেছনের দিকে হেলাতে থাকুন, যতক্ষণ না ঘাড়ে আর থুতনির নিচে চাপ অনুভব করছেন। এবার চোয়াল ডান দিক থেকে বাঁ দিক এবং বাঁ দিক থেকে ডান দিকে ধীরে ধীরে ঘোরানোর চেষ্টা করুন। দিনে মিনিট পাঁচেক করে অন্তত পাঁচবার এ ব্যায়াম করতে পারলে ঘাড় আর গলার পেশি টান টান হয়ে যাবে। একই সঙ্গে দ্রুত ঝরে যাবে ঘাড় আর গলার অতিরিক্ত মেদও।

ব্যায়াম ৪ : মাথা পেছন দিকে যতটা সম্ভব হেলিয়ে দুই হাত দিয়ে গালের ওপর সমানভাবে চাপ সৃষ্টি করুন। একই সঙ্গে যতটা সম্ভব মুখ বন্ধ অবস্থাতেই হাসার চেষ্টা করুন। অন্তত ১০ মিনিট নিয়মিত এই ব্যায়াম করতে পারলে গাল থেকে অতিরিক্ত মেদ সহজেই কমে যাবে।

ব্যায়াম ৫ : মুখের মধ্যে একটি বা দুটি আঙুল ঢুকিয়ে মুখের ভেতরে হাওয়া টেনে গাল দুটোকে যতটা সম্ভব সংকুচিত করুন। এটা অনেকটা সেলফি তোলার সময় 'পাউট' করার মতো। প্রতিদিন অন্তত দশবার এ পদ্ধতিতে ব্যায়াম করলে গালের ফোলাভাব দ্রুত কমে।