Tuesday, February 16, 2021

 


18/2/2021

Today 

There is a lot of sunshine today. The winter is also tolerable. I made semai pitha.

It is an amazing ability to see life in a simple, white way.

The pursuit of the simple is not so easy.

Shyam, you understand so much tricks, you don't understand only mind.


 ১৬/২/২০২১

আজকের দিন


আজকে অনেক রোদ উঠেছে। শীতটা ও 

সহনীয়। সেমাই পিঠা বানালাম। 


সহজ করে, সাদা করে জীবন কে দেখতে পারাও এক আশ্চর্য ক্ষমতা। 


সহজের সাধনা আসলে  ততটা সহজ না।

শ্যাম এত লীলা বোঝ তুমি মন বোঝ না।


Sunday, February 14, 2021

 আজকের ভাবনা

১৫/২/২০২১

সোমবার

আজ সকাল থেকে বৃষ্টি। শীত অতটা নেই। তবে আমার ম নে কোন ভাল লাগা নেই।

ছে লে টা বিদেশে। চাকরি বাকরির কো ন হদিস নেই। সব সময় কিছু না কিছু  সমস্যা থাকবেই।

জীবনটা এমন কেন?

আমার জীবন টা যে কেম ন থেমে গেছে তা চিন্তা ক রা যায় না।

বারে বারে থেমে যায়।

খুব ব ড় একটা ভুমিকম্প  হ ল। কিভাবে কাঁপছিল চারপাশ।

কি রকম না। 

এক মুহূর্তে ই  সব শেষ হয়ে যায়।

আবহাওয়া যেমন পরিবর্তনশীল, তেমনি আমাদের জীবন।

তাই তঁ এত ভয়।

হাসতেও ভয় লাগে।

আমাদের দেশে কথা আছে না, যত হাসি  তত কান্না।



 Today's thoughts

15/2/2021

Monday

It's been raining since this morning. 

It is not a colder day.

 But I don't feel good.

My one  boy is abroad. There is no news of job. 

There will always be some problems.

Why is life like that?

How my life has stopped now!

It stops again and again.

There was a very big earthquake. How trembling all around.

What the human life is?

It all ends in a moment.

As the weather changes, so does our life.

That's why I am so scared.

It is scary to laugh too.

In our country there is talk, as much laughter as much tears.

 

14/2/2021

The heart-shaped symbol used on Valentine's Day comes from the seeds of a type of medicinal plant called sulfium.


However, in the olden days, in various paintings in religious places, the shape of a pine tree was compared to the shape of a heart.




Source Prothom Alo


 


১৪/২/২০২১


ভালোবাসা দিবসে যে হৃদয় আকৃতির প্রতীক ব্যবহার করা হয়, সেটি সিলফিয়াম নামের এক ধরনের ঔষধি গাছের বীজ থেকে এসেছে।

তবে বহুকাল আগে ধর্মীয় স্থাপনায় আঁকা বিভিন্ন চিত্রকর্মে পাইনগাছের মোচার আকৃতিকে হৃদয়াকৃতির সঙ্গে তুলনা করা হতো।








১৪/ ২/ ২০২১

ভালবাসা দিবস।

আজকের ভাবনা?


ভালবাসা কি? কি ভাবে বোঝা যায় ভালবাসা? 

ভালবাসা আর ভাললাগা কি এক?

ভাল বাসা মানে কি মায়া ? 

মায়া কি ভালবাসা ?

ভালবাসা কেন ম রে যায়?

নচিকেতার গান ,

‘কারও চোখ ভালো লাগে, কারও মুখ ভালো লাগে, কারও বা চরিত্রের গঠন!’

নামে কীই–বা যায় আসে...গোলাপ তার সুরভি ছড়িয়েই যায়!

কি দরকার তাকে ক্যাটাগোরাইজড করার?
আমারই হতে হবে? নয়তো জীবন বৃথা?
-জীবন ছোট, তবে এত ঠুনকোও নয়!
ভালোবাসায় আমার বিশ্বাস নেই!



Friday, February 12, 2021

 


13/2/2021





February 13, the day to love yourself.

The idea of ​​Madley in Love with Me or Self-Love was officially introduced by the American writer Christine Ariello.
However, this idea was recognized by philosophers in 1573. Christine Ariello is instrumental in getting it out to the general public.
She brought this idea to the fore in the last decade by writing a book called Madley in Love with Me.

Source Prothom Alo

 


১৩।২।২০২১

১৩ ফেব্রুয়ারি, নিজেকে নিজে ভালোবাসার দিন।






ম্যাডলি ইন লাভ উইথ মি বা আত্মভালোবাসার এ ধারণা ও দিবসটির আনুষ্ঠানিক প্রচলন করেন আমেরিকান লেখক ক্রিস্টাইন আরিলো।

অবশ্য ১৫৬৩ সালেই এ ধারণা স্বীকৃতি পেয়েছিল দার্শনিকদের কাছে। তবে তা ওই দার্শনিক মহলেই। সাধারণ মানুষের কাছে এটি পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে ক্রিস্টাইন আরিলোর ভূমিকাই প্রধান।


গত দশকে ম্যাডলি ইন লাভ উইথ মি নামের একটি বই লিখে তিনি এ ধারণা সামনে নিয়ে আসেন।

ত থ্য সুত্র প্র থম আলো

Thursday, February 11, 2021

 

করোনাকালের প্রতীকী ছবি
করোনাকালের প্রতীকী ছবি
প্রথম আলো

ইংল্যান্ডে প্রায় ১০ মাস ধরে গৃহবন্দী হয়ে আছি সবাই। প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে যাওয়া নিষেধ। তাই পড়ালেখা, কাজ—সবকিছুই ঘর থেকে করতে হচ্ছে। আমার বাসায় আমি আর আমার ৬ মাস বয়সী ছোট্ট মেয়েটা ছাড়া সবাই খুব ব্যস্ত। সকাল ৮টা থেকে শুরু হয় ছেলেমেয়েদের অনলাইন ক্লাস। ৯টা থেকে তাদের বাবার অফিস মানে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’! ভাগ্যিস, আমার ম্যাটারনিটি লিভ চলছে। তাই ল্যাপটপে চোখ গেঁথে রাখতে হচ্ছে না।

কিন্তু তাতে কি, অন্যদের অনলাইন কর্মকাণ্ডে আমি আজ নিজ গৃহে পরবাসী!
সকালবেলায় ছেলের রুমে আস্তে নক করে ঢুকে দেখি সে ডেস্কে বসে কানে বিশাল হেডফোন লাগিয়ে লেকচার শুনছে। আমি পেছন থেকে পা টিপে টিপে এসে তার টেবিলে দুধ রাখতেই সে বলে উঠল,
—there is no point in tip toeing মা!!
মাইক্রোফোন বন্ধ কিন্তু ক্যামেরা অন আছে। তোমাকে ক্লাসের সবাই দেখতে পাচ্ছে মা!
শুনে নিজের আলুথালু বেশের দিকে তাকিয়ে প্রায় দৌড়ে রুম থেকে বের হলাম! বদ ছেলেটা আগে বলবে তো ক্যামেরা অন! তাহলে ভালো জামাকাপড় পরে, চুল আঁচড়ে যেতাম!
যওসব!

এরপর গেলাম মেয়ের রুমে। মেয়ে আমার লক্ষ্মী। খুব পরিপাটি হয়ে অনলাইন ক্লাস করে। আর মাইক্রোফোন বন্ধ রাখে। ওর কাছে যাওয়াটা নিরাপদ।
রুমে ঢোকার আগেই সুর করে বলতে বলতে ঢুকলাম,
—ওরে আমার টুনটুন, ঝুনঝুন! নাশতা কি দেব মা?
মেয়ে মাথা ঘুরিয়ে বিরক্ত চোখে তাকিয়ে বলল,
—মা!
It’s so embarrassing!! Microphone was on and I was doing a presentation. সবাই তোমার কথা শুনতে পেল!
ও মোর খোদা।
আমি কি জানতাম নাকি? যাহ, আর কারও ঘরেই আর যাব না।

নিজের রুমে এসে দেখি ছোট্ট পাখি উঠে হাত–পা ছড়িয়ে কাঁদছে। পাশের ঘরে তার বাবা ট্যাক্স অফিসে কথা বলতে বলতে রুম থেকে বেরিয়ে হাত ইশারা করছে, ‘মেয়েকে থামাও!’

কী আর করব! আমি আর আমার ছোট্ট ময়না, বাসার দুই বেকার সদস্য মনের দুঃখে নিচে চলে এলাম। অথচ আমি ম্যাটারনিটি লিভে আছি। আমার ২৪ ঘণ্টা বাসায় থাকার কথা। ওদের নয়!

করোনাকালের জীবন
করোনাকালের জীবন
ছবি: প্রতীকী

লন্ডনের কাঠের বাড়িঘর। ওপরতলায় জোরে শব্দ করে হাঁচি দিলে নিচে লিভিং রুমে শোনা যায়। আমার ছোট্ট মেয়েটাকে যখন বেসুরো গলায় নার্সারি রাইমস বলে ঘুম পাড়াই, তখন অ্যাকাউন্ট্যান্ট সাহেব কোনো না কোনো ক্লায়েন্টের সাথে কথা বলেন। আমার ধারণা, ক্লায়েন্টরা জেনে গেছে যে এই বাসায় আধা পাগল টাইপ কোনো মহিলা আছে যে সারাক্ষণ আবোলতাবোল গান করে! গানের গলাটাও যদি একটু ভালো হতো!
একদিন দেখি মেয়ে আমার সিঁড়ি বেয়ে উঠছে আর নামছে। কেন জিজ্ঞেস করতে বলল, পি ই ক্লাস। স্যার বলেছে ১০ বার সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করতে!
হায় রে বন্দিজীবন!

এখন হাসপাতাল ছাড়া ডাক্তারদের দেখা পাওয়া প্রায় অসম্ভব। ভাগ্য ভালো থাকলে অনলাইন অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাওয়া যায়। পেটে হঠাৎ ব্যথা হওয়ায় অনেক কস্টে ভিডিও কলের অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেলাম। ভালো জামা পরে চুল আঁচড়ে ল্যাপটপের সামনে বসলাম। ক্যামেরা অন করতেই নিজেকে দেখে বেশ খুশি হয়ে গেলাম। বাহ, ভালো লাগছে তো। কত দিন পর এতক্ষণ ধরে নিজেকে দেখলাম।
বেবী হওয়ার পর সময় কোথায় আয়না দেখার?
আমার ডাক্তারের কণ্ঠ শোনা গেল!
—হ্যালো! আমি তোমাকে পরিস্কার দেখতে পাচ্ছি। তুমি কি আমাকে শুনতে পাচ্ছ?
আমি খুশি হয়ে বললাম,
—হ্যাঁ, আমিও আমাকে দেখতে পাচ্ছি।
ডক্টর বললেন,
—আমি কীভাবে সাহায্য করব?
আমি বললাম,
—পেটে ব্যথা।
ডক্টর বললেন,
—কোথায় ব্যথা আমাকে দেখাও।

এবার আমি পড়লাম বিপদে। ক্যামেরায় আমার পেট দেখাতে হবে, ভাবিনি। বলা বাহুল্য আমার ডক্টর মহিলা নন।
বললাম,
—আমি ক্যামেরায় দেখাতে চাচ্ছি না।
উনি বললেন,
—চেম্বারে আসলে দেখাতে, তাই না! আচ্ছ, তোমার ড্রেসের ওপর দিয়ে দেখাও।
ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ল যেন। ডক্টর কিছু পেইন কিলার দিয়ে কল শেষ করলেন। কী আজব মুসিবতের দিন শুরু হলো আজকাল!

গত এক বছর কোথাও যাওয়া হয়নি, কেউ আসেওনি আমার বাসায়। জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী সব এল আবার চলেও গেল। বাচ্চাদের সুন্দর সুন্দর জামাকাপড় না পরে পরে লম্বায় ছোট হয়ে গেল আর আমার ড্রেসগুলো পাশে!
আমার মেয়ের সবচেয়ে প্রিয় স্কটিশ বান্ধবীর মা ফোন করে তার মেয়ের জন্মদিনের দাওয়াত দিল। জুম বার্থ ডে পার্টি! আমাকে মিটিংয়ের পাসওয়ার্ড দিয়ে বলল,
—রোববার বেলা ২টা। ওরা লাঞ্চ করবে একসঙ্গে। তারপর পার্টি গেমস, তারপর কেক কাটবে। দেরি করো না।

আমি মিনমিন করে বললাম,
—একসঙ্গে খাবার কী করে খাবে?
মনে ক্ষীণ আশা! যদি কিছু পার্টি ফুড সদর দরজায় রেখে যায়!
সে আশার গুড়ে বালি দিয়ে বান্ধবীর মা বলল,
—স্কটল্যান্ড থেকে আমার মেয়ের কাজিনরা জয়েন করবে। ভেবেছিলাম সবাইকে কেক দেব কিন্তু স্কটল্যান্ডে আজকে কেক দিয়ে আসা সম্ভব না। তাই কাউকেই দেব না ঠিক করেছি। তবে পার্টির পর পার্টি ব্যাগ গেটের সামনে রেখে যাব।
আমি বললাম,
—ওর উপহার আমি তোমার দরজার সামনে রেখে আসব!
আমার মেয়ে খুব খুশি হয়ে নতুন জামা পরে কাবাব রোল নিয়ে বার্থডে পার্টিতে যোগ দিল। অনেক অনেক দিন পর! ‘খাবার যার যার পার্টি সবার’ অবস্থা!
আজকাল সব চ্যানেল দেখতে ভালো লাগে না। তাই নিজেদের পছন্দমতো ইউটিউব আর নেটফ্লিক্স দেখি। তা–ও বাসার যে যার সময়মতো, পছন্দমতো প্রোগ্রাম দেখে। আমার সঙ্গে আমার মেয়ের টিভি দেখা নিয়ে প্রায়ই ঝগড়া হয় দেখে তাদের বাবা অশান্তি মেটানোর জন্য আরেকটা টিভি কিনে দিল। বলল,
—এবার যার যা পছন্দ দেখো!
লাভের মধ্যে লাভ হলো আগে একটা টিভিতে ‘ফাইভ লিটিল মাংকি’ গান শুনতাম। এখন দুইটা টিভিতেই একই দিনে একই গান কমপক্ষে এক শ বার শুনতে হয়! কারণ, ছোট্ট বেবি এখন টিভি দেখতে শিখেছে। অন্য কিছু দেখলে কাঁদে!

করোনাকালের জীবনগাথা
করোনাকালের জীবনগাথা
ছবি: প্রতীকী

বাচ্চাদের বাবার করোনা পজিটিভ হওয়ায় ১০ দিন ‘সেলফ আইসোলেশনে’ ছিলাম। বাজারসদাই দূরে থাক, ঘর থেকে বের হওয়ায় কঠোর নিষেধাজ্ঞা আমাদের সবার। তাই নিরুপায় হয়ে সুপারমার্কেট, অনলাইন শপিং করতে হলো! ৪৫ মিনিট ধরে ৬৪টি আইটেম ভেবেচিন্তে শপিং বাস্কেটে অ্যাড করে চেকআউটের পর হঠাৎ মেসেজ...Your page can not be found! নিজের চুল নিজে টেনে ছিঁড়তে ইচ্ছা হচ্ছিল!

হঠাৎ করে যখন–তখন ওয়াই–ফাই চলে যায়। ক্লাস, কাজ, টিভি...বেচারা এত লোড নিতে পারে না। বাসায় তখন বিভিন্ন রুম থেকে হ্যামিলিনের বাঁশিওয়ালার ছেলেমেয়েদের মতো সবাই বের হয়ে আসে। আমার তখন ছোটবেলায় ঢাকায় ইলেকট্রিসিটি চলে যাওয়ার কথা মনে পড়ে। পড়ার মধ্যে কারেন্ট গেলে কী যে খুশি হতাম! সেদিনের জন্য পড়তে হতো না। কিন্তু এখন ওয়াই–ফাই গেলে বাচ্চারা খুবই বিরক্ত হয়।

সত্যি বলতে কি, ইলেকট্রিসিটি চলে গেলে ফ্যান বন্ধ হয়ে দেশে যেমন গরম লাগত, আমার তেমন গরম লাগে! ঘামতে শুরু করি!

মাঝেমধ্যে বসে ভাবি, কবে আবার নিজের বাসায় নিজের মতো করে চিৎকার করে বেসুরা গলায় গান গাইতে পারব, পার্টিতে নতুন শাড়ি পরে যেতে পারব! বন্ধুদের সঙ্গে ফেস টাইম না, মুখোমুখি বসে আড্ডা দিতে পারব! এই ‘ওয়াই–ফাই’ মহাশয় একটু বিশ্রাম পাবে আর আমরা আগের জীবনে ফিরব! আহা রে!

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বেঁচে থাকলে আমাদের অনলাইন দিনগুলো দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলে লিখতেন— ‘সেই যে আমার নানা রঙের ‘অফলাইনের’ দিনগুলো!’

* লেখক: শায়লা শারমীন, ইংল্যান্ড

Monday, February 8, 2021

 

ফেব্রুয়ারি মাসে পয়লা ফাল্গুন, ভালোবাসা দিবস ও মহান অমর একুশে ফেব্রুয়ারি দিবস উদযাপিত হয়। ফেব্রুয়ারি মাসের বিশেষ আকর্ষণ একুশে বইমেলা
ফেব্রুয়ারি মাসে পয়লা ফাল্গুন, ভালোবাসা দিবস ও মহান অমর একুশে ফেব্রুয়ারি দিবস উদযাপিত হয়। ফেব্রুয়ারি মাসের বিশেষ আকর্ষণ একুশে বইমেলা
ছবি: সংগৃহীত

দেশ থেকে ঘুরে এসেছি প্রায় সাত মাস হয়ে গেল। আমার ১০ বছরের প্রবাসজীবনের এটা পরম ভাগ্য বলতে হবে যে প্রতিবছর আমাদের দেশে যাওয়ার সুযোগ হয়। শেষবার দেশে এক বছর কাটিয়ে এসেছি আপনজনদের সংস্পর্শে। বুকের ভেতরে নানান স্মৃতি  ধারণ করে প্রতিবার দেশ থেকে ফিরে আসি আবার যাওয়ার আশা নিয়ে।

দেশে লম্বা সময় থেকে আসার ফলে পরবর্তী সময়ে এখানকার জীবনে একটা শূন্যতা অনুভব হয়। আপনজন বা প্রিয়জনদের শূন্যতার পাশাপাশি যে শূন্যতাটা ফিরে আসার পরই প্রবলভাবে অনুভব করি, সেটা হলো শব্দশূন্যতা। দেশে মানুষের কোলাহল, রিকশার টুংটাং শব্দ, গাড়ির হর্ন, মসজিদের সুমধুর আজানের ধ্বনি, আপনজনের ডাক—এ সবকিছু  থেকে অনেক অনেক দূরে চলে আসি আমরা, সে অনুভূতি অনেক কষ্টের। দেশের কোলাহল মুখর আর বিশৃঙ্খল পরিবেশ ছেড়ে এসে এখানকার সুনসান নীরবতা আর শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবন যন্ত্রণার উদ্রেক ঘটায়।
নাগরিকত্ব, শপথ, আধুনিক ও শৃঙ্খল জীবন—সবকিছু দেশের টানের কাছে বড়ই মলিন। বারবার মনে হয়, আমার মাতৃভূমি যেমন, আমি তাকে সেভাবেই ভালোবাসি।

যত সমস্যাই থাকুক, এই ভালোবাসা বড়ই একপেশে। এখানে এত সুবিধা পাওয়ার পরও কোনো কিছুই আমার নিজের মনে হয় না, বরং দেশে বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণের সময় মনে হয়, ওই দূরে দেখা বটগাছটা, ভাঙা ব্রিজটা, মেঠো পথটা, মলিন মুখের জীর্ণশীর্ণ মানুষগুলো আমার অতি আপন। একমাত্র প্রবাসীর কাছেই এই অদ্ভুত অনুভূতিগুলো বোধ‌গম্য। দেশে বসবাস করলে এই বোধ হয়তো কখনোই আসত না, সম্ভব না। তাই বলে এখানে আনন্দ করি না, তা বলা ভুল হবে। নিজের পরিবার, কিছু আত্মীয়, বন্ধু নিয়ে ভালো সময় কাটে। সেই সঙ্গে প্রচুর ঘুরাঘুরি করি, কিন্তু দিন শেষে একটা শূন্যস্থান থেকেই যায়, যা সব প্রবাসীই অনুভব করেন, কমবেশি। সে শূন্যস্থান একমাত্র নিজের দেশ পূরণ করতে পারে।
বাংলাদেশে ডিসেম্বর মাসটা আমার বছরের পছন্দের মাস। কারণ, এ সময় চারদিকে একটা উৎসবমুখর আবহ বিরাজ করে। শীতের আমেজ, ছুটির আমেজ, ঘোরাঘুরি, পিঠা-পুলির আয়োজন, বিজয়ের মাস—সব মিলিয়ে মহা আনন্দের মাস। ভালো লাগার আরেকটি কারণ না বললেই নয়, তা হচ্ছে আমার বিবাহবার্ষিকীও এই মাসে। এ সময়ে বাংলাদেশকে আরও বেশি মনে পড়ে।

ফেব্রুয়ারি মাস চলছে। কয়েক দিন পরই পয়লা ফাল্গুন, ভালোবাসা দিবস ও মহান অমর একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপিত হবে। ফেব্রুয়ারি মাসের বিশেষ আকর্ষণ হচ্ছে একুশে বইমেলা। এসব লিখতেই চোখের সামনে ভেসে উঠছে ফাল্গুনকে বরণ করে নেওয়ার জন্য বাসন্তী হলুদ বসনে বর্ণিল সাজসজ্জা, লাল টুকটুকে রঙে রাঙিয়ে ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ আর সাদা-কালোতে মাতৃভাষা দিবসের জন্য শ্রদ্ধা নিবেদন। গত বছর এই সময়ে দেশে ছিলাম। প্রতিটি দিবস উদযাপন করেছি দেশীয় আমেজে, মন চাচ্ছে আবার ছুটে যাই আমার সংস্কৃতির কাছে।
আমার স্বামী মাঝেমধ্যেই বলে, ‘চলো, দেশে চলে যাই, একটাই জীবন।’ বিষয়টা স্বপ্নের মতো মনে হয়, কিন্তু অসম্ভব তো কিছু না, করাই যায়। দুই মেয়ে আমাদের দেশে বড় হবে, আমরাও তো দেশে বড় হয়েছি। দোদুল্যমান দোলায় দুলতে থাকে আমাদের প্রবাসজীবন।

*সুরাইয়া সিদ্দিকী, ডালাস, টেক্সাস, যুক্তরাষ্ট্র।