Saturday, May 7, 2022

 


জাপানে আমার ঈদ 
অনামিকা সুলতানা 

প্রবাসীরা ঈদের অভিজ্ঞতার কথা লিখলে আমি দেখি, সেখানে থাকে শুধু হতাশার গল্প। কিন্তু জাপানে আমার ঈদ সব সময় রঙ্গীন আর আন ন্দ ময়। এখন ও আমি ঈদে নুতন জামা না পেলে ঠোঁট ফুলায়, তাই ঈদ আসার আগে আমার অর্ধাঙ্গ ব্যস্ত হয়ে পড়েন , কি ক রে দেশের থেকে ঈদের আগে 
আমাদের জন্য নু্তন জামা কাপড় আনা যায়। 
কারণ আমি চায় ঈদের দিন আমি শুধু না ,আমার প রিবার মানে আমার উনি আর আমার  ছেলেরা   দেশের থেকে আসা আমাদের ঐ তি হ্য বাহী নুতন পোশাক ‍যেন প রে। 
জাপানে কবে ঈদ হবে, জানা যায়্‌  তার আগের দিনের রাত ১০টার প রে ।  উনি মসজিদ থেকে টেলিফোনে জানিয়ে দেয় ঈদ হবে, কি হবে না । ঈদ হলে, রমজানের ওই রোজার শেষে গা ন টি শুনতে
শুন তে, ঈদ মুবারক লিখে, আমি দুই রকম সেমাই রান্না শুরু করে দিই। ঘর সাজানো আর পোলাও বাদে সব রান্না শেষ হতে কখন ও সারারাত লেগে যায়। তবে যে বার  ত্রিশ টা রোজা হয়, তখন খুব সুন্দ র ভাবে প্লান মাফিক সব করতে পারি।

সকালে খূব ভোরে উঠে সবাই গোসল করে 
 আল্লাহ কে ধন্য বাদ জানিয়ে, আমার উনাকে পায়ে হাত দিয়ে সালাম করি আর ম নে ক রে দিই সালামির ক থা। সবাই মিলে একটু সেমাই খেয়ে, মসজিদে নামাজ পড়তে যায়।
 আমাদের সুকুবা মসজিদে
 বিভিন্ন দেশের মুসলিম দের সাথে দেখা হয়।  বিভিন্ন দেশের,   বিভিন্ন বর্ণের, বিভিন্ন কালচারের মানুষ দেখে বুঝা যায় 
আমাদের মুস লিম উম্মাহ কত বৈ চিত্র্য ময়।

 তাদের সাথে ঈদ মুবারক বলি, কোলাকুলি করে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করি। আমার জীবনের ঈদের সবচেয়ে আনন্দময়  সময়  এইটি। 
অনেকে তাদের দেশের মিষটান্ন নিয়ে এসে সবাইকে বিলি করে, মসজিদ থেকে ও খাবার দেয়া হয়। আমি, যারা ভাল মেহেদি লাগাতে পারে, তাদের কাছ থেকে মেহেদি লাগিয়ে নিই। ঈদের জামাতের পর,
বাংলাদেশী কমুনিটিতে কি ভাবে ঈদ 
পালন হবে তা নিয়ে আলোচনা হয়। 
ঈদ যদি ছুটির দিন হয় তবে খুবই মজা হয়। পরিচিত দের বাড়িতে যাওয়া হয়। আমার বাড়িতে আমার ছেলেদের বিভিন্ন দেশের বন্ধুরা আসে,আমার উনার জাপানিজ বস ও কলিগরা আসে । 
ঈদ ছুটির দিনে না হলে, আমরা বাংলাদেশীরা রাতে সবাই মিলে কোন একটা বাড়িতে  পটলাক পার্টি করি, (মানে সবাই একটা করে খাবার বানিয়ে নিয়ে আসে), আর চলে তুমুল আডডা ভাই মহলে, ভাবি মহলে। বাচ্চারা তাদের মত মজা করে।
 আসলে আমাদের ঈদ একদিনে শেষ হয় না। কারণ একমাস ধরে
প্রত্যেক সপ্তাহের ছুটির দিনে এর  
  বাড়িতে ওর বাড়ি তে দাওয়াত থাকে। ঘটা করে পালন করা হয় কোন এক ছু টির দিনে ঈদ পুনর্মিলনী, জমজমাট খাওয়া দাওয়া, গানবাজনা, খেলাধুলা, লটারী ড্র সবই থাকে। করোনার কারণে এই দুই বছর বাইরের অনেক কিছুই বন্ধ থাকলেও,  ঈদের সব আমেজ ই যেন আমার 
পরিবার পায় তাই সব রক ম  ব্যবস্থাই ক রি
আমি আমার বাড়িতে। ্সব স ময় বাচ্চাদের সামনে আমরা কেমন করে ঈদ পালন 
করতাম তার গল্প করি।
আমি মা , একজন নৃবিজ্ঞানী,
তাই ,  ভুলে যায় না, যে আমি যদি এই ভাবে পালন না করি, তবে আমার স ন্তানেরা জানতেই পারবে না আমাদের ঈদের ঐতিহ্য। হারিয়ে যাবে জাপানে থাকা আমাদের পরের প্রজম্মের কাছে তাদের কালচার আইডিন্টিটি।

No comments:

Post a Comment