Tuesday, May 25, 2021

 

চিকেন সিজলার




প্রয়োজনীয় উপকরণ

চিকেন

চিকেন চামড়া সহ সিনার অংশ- ১টি

সয়াসস- ১টেবিল চামচ

ওয়েস্টার সস- ১টেবিল চামচ

টমেটো সস- ২টেবিল চামচ

চিলি এন্ড গার্লিক সস- ৩টেবিল চামচ

আদা বাটা- ১চা চামচ

রসুন বাটা- ১ চা চামচ

লেবুর রস- ১টেবিল চামচ

বাটার- ৩টেবিল চামচ

সাদা তিল- ১টেবিল চামচ

লবণ- স্বাদমতো।

সটেড ভেজ

লম্বা বেগুন- ১টি

গাজর- ফিঙ্গার সাইজে কাটা (ভাপানো) ১/৪কাপ

ক্যাপসিকাম- ১/৪কাপ

পেঁপে- (ভাপানো) ১/৪কাপ

বেবিকর্ন- ১/৪কাপ

মাশরুম- ২/৩টি

রসুন কিমা- ১চা চামচ

বাটার- ২টেবিল চামচ

গোলমরিচ গুড়া- ১চা চামচ

লবণ- স্বাদমতো।

ম্যাশ পটেটো

সিদ্ধ করে ম্যাশ করা আলু- ১কাপ

তরল দুধ- ১/২কাপ

গোলমরিচ গুড়া- ১চা চামচ

বাটার- ১টেবিল চামচ

লবণ- স্বাদমতো।

প্রস্তুত প্রণালি

প্রথমেই মুরগিটাকে কাঁটাচামচ দিয়ে কেঁচে বাটার ও তিল ছাড়া সমস্ত উপকরণ মেখে ১৫মিনিট রেখে দিতে হবে।

এবার পাত্রে বাটার দিয়ে চিকেন ভেজে তুলে রাখতে হবে।

এবং মেখে রাখার বাকি মিশ্রণ দিয়ে সস তৈরি করে মুরগির উপর ঢেলে সাদা তিল ছড়িয়ে দিতে হবে।

এরপর আলুর সাথে মিশিয়ে ম্যাশ পটেটো তৈরি করে ফয়েল পেপারের উপর পরিবেশন করতে হবে।

তারপর পাত্রে বাটার গরম করে রসুন কিমা নেড়ে সবজি, মাশরুম, গোলমরিচের গুড়া ও লবণ দিয়ে নেড়ে নামিয়ে পরিবেশন করতে হবে।


Saturday, May 22, 2021

 

গোলাপ  রয়েছে স্বাস্থ্য উপকারীতা






ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে 
গোলাপের পাপড়িতে বিদ্যমান যৌগ মেটাবলিজমকে উন্নত করে এবং দেহের বিষ দূর করে যা ওজন কমাতে খুবই কার্যকরী। 
এক মুঠ গোলাপ পাপড়ী সেবনে সেন্সকে উন্নত করবে এবং আপনাকে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ থেকে দূরে রাখবে। যা প্রাকৃতিকভাবে ওজন কমাতে সাহায্য করবে।

 টিপস 
এক গ্লাস গরম জলেতে ১০-১৫টি গোলাপের পাপড়ি ছেড়ে দিন এবং অপেক্ষা করুন যতক্ষন পর্যন্ত পানি গোলাপি রং ধারন না করে। এর মধ্যে আপনি সামান্য পরিমাণ মধু এবং এক চিমটি দারুচিনি গুড়া মিশিয়ে নিন। এই জলপান করুন প্রতিদিন সকালে যা আপনার দেহের অতিরিক্ত চর্বি কমাতে সাহায্য করবে।

মানসিক চাপ এবং হতাশা দূর করে 
হতাশা এবং মানসিক চাপ সাধারণত আসে অনিদ্রা এবং বিশ্রামহীনতার অভাবে যা অত্যন্ত বিরক্তবোধ এবং উদাসীনতা সৃষ্টি করে। গোলাপের পাপড়ি এবং এর নির্যাস এই ধরনের সমস্যা দূর করনে অধিক কার্যকরি। 

টিপস 
গরম পানিতে কিছু গোলাপ পাপড়ি ছিটিয়ে নিন এবং সেই পানি দিয়ে গোসল করুন। গরম পানির তাপে গোলাপের সুগন্ধ পুরো ওয়াশরুমে ছড়িয়ে যাবে যা আপনার মনকে অনেক প্রশান্তি দিবে এবং দেহ কে করবে প্রফুল্ল।

কামশক্তি বৃদ্ধিতে 
আয়ুর্ভেদা অনুসারে কামভাবনাকে আরো প্রশান্তিদায়ক করতে গোলাপের পাপড়ির অসাধারণ ক্ষমতা রয়েছে। তাদের মতে গোলাপের পাপড়ির দুটি উপকারী ডোজ আপনার দেহ, মন, হৃদপিন্ড এবং নার্ভাস প্রক্রিয়াকে পরিচালিত করতে সহায়তা করে যা সঙ্গমে আপনাকে দীর্ঘস্থায়ী করে তুলবে।
 
টিপস 
কিছু গোলাপ পাপড়ি নিয়ে তা ভালো করে ধুয়ে নিন এবং প্রতিদিন খেতে পারেন এতে আপনি শুধু শক্তিশালী এবং সতেজই অনুভব করবেন না পাশাপাশি আপনাকে সেক্সুয়ালি সক্রিয় রাখবে।


ত্বকের সুরক্ষায় 

ত্বকের সুরক্ষায় গোলাপ জল অনেক উপকারী বিশেষ করে সেনসিটিভ ত্বকের রুক্ষতা দূর করতে, ত্বকের তৈলাক্ততা সমাধানে, ত্বককে সফট করতে খুবই কার্যকরি। ত্বকের সুরক্ষার ক্ষেত্রে গোলাপ জলকে বেছে নেওয়াটা খুবই বুদ্ধিমানের কারন এটি ত্বকের গভীরে পরিষ্কার করে যা আপনার ত্বককে অনেক বেশি নবীন করে তুলে। গোলাপ পাপড়িতে বিদ্যমান এন্টিওক্সিডেন্ট এবং এন্টিব্যাক্টেরিয়াল যৌগ যা ত্বকের ত্বকের রুক্ষতা দূর করে ত্বককে দেয় প্রশান্তি এবং ঘামাচি ও চুলকানি থেকে দূরে রাখে। 

টিপস 

আপনার ত্বকের যত্নের রুটিনের বাইরেও আপনি প্রতিদিন গোলাপ জলের ছিটা ত্বকের লাগাতে পারেন এতে আপনার ত্বক অনেক বেশি গ্লো হয়ে উঠবে।

ব্রন সমস্যা দূরি করনে 

আপনি যদি ব্রন সমস্যায় ভুগে থাকেন আর এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে চান তাহলে একমাত্র গোলাপ জল আপনাকে এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে প্রস্তুত। গোলাপের পাপড়ির এন্টিব্যাক্টেরিয়াল যৌগ ব্রন সমস্যা দূর করনে অতীব কার্যকরি। এছাড়াও ফেনিল ইথানল, এন্টিসেপ্টিক যৌগ যা গোলাপ জলে বিদ্যমান তা ব্রনের সমস্যা দূর করবে নিমিষেই। 

টিপস 

সারা রাত ধরে মেথি জলেতে ভিজিয়ে রাখুন এবং গোলাপ জল দিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। ফেইসে লাগিয়ে নিন এবং ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন তারপর পরিষ্কার ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।


ঠোঁটের কালার উজ্জ্বল করুন 

গোলাপ ঠোঁটের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে কার্যকরি ভূমিকা রাখে। এটি শুধু ঠোঁটের উজ্জ্বলতাই বৃদ্ধি করবে না পাশাপাশি ঠোঁটকে অনেক সফট এবং গোলাপি করে তুলবে। এছাড়াও গোলাপের পাপড়ি ঠোঁট ফাটা দূর করতে সাহায্য করবে। 

টিপস 

দুধের সর এবং কয়েক ফোটা মধু গোলাপের পাপড়ির সাথে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এখন আপনি পেস্টটি ঠোঁটে লাগিয়ে নিন। ১৫-২০ মিনিট রাখুন এরপর জলদিয়ে ধুয়ে ফেলুন

Thursday, May 20, 2021

 

গোলাপ শরবত


উপকরণ

গোলাপের পাঁপড়ি- প্রয়োজন মতো

চিনি- স্বাদ মতো

রোজ এসেন্স- কয়েক ফোঁটা

দুধ- অর্ধেক গ্লাস

বরফ কিউব- প্রয়োজন মতো


প্রস্তুত প্রণালি

একটা পাত্রে চিনি মিশ্রিত পানিতে গোলাপের পাঁপড়ি দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ ঢাকনা দিয়ে রাখতে হবে।

এবার এতে দিন রোজ এসেন্স এবং অল্প দুধ দিয়ে দিন।

ভালো করে মিশিয়ে নিন।

একটি গ্লাসে বরফের কিউব দিয়ে তাতে গোলাপের পাঁপড়ি সহ শরবত সার্ভ করুন।

Tuesday, May 18, 2021

 

আমডাল

উপকরণ

মসুর ডাল,
কাঁচা আম ১টি,
হলুদ ১ চা–চামচ,
লবণ স্বাদমতো,
শর্ষের তেল ৩ টেবিল চামচ,
পাঁচফোড়ন ১ চা–চামচ, অথবা সরিষা
শুকনো মরিচ ৩-৪টি।


প্রণালি
১।
প্রথমে এক কাপ মসুর ডাল ভালো করে ধুয়ে সেদ্ধ করতে দিন।
২।
একটা আম কেটে সামান্য লবণ ও হলুদ মাখিয়ে তেলে ভেজে নিন।
৩।
ডাল সেদ্ধ হয়ে এলে প্যানে সেদ্ধ ডাল এবং হালকা ভেজে নেওয়া আম তিন কাপ পানি দিয়ে আবার সেদ্ধ দিন। সামান্য হলুদ, কাঁচা মরিচ আর লবণ দিয়ে দিন।
৪।
পানি কিছুটা কমে এলে আলাদা পাত্রে তিন টেবিল চামচ শর্ষের তেলে তিন–চারটি শুকনো মরিচ ভেজে তাতে এক চা–চামচ পাঁচফোড়ন দিয়ে নেড়েচেড়ে আম এবং ডালের মিশ্রণ দিয়ে দিন। একবার ফুটে উঠলে নামিয়ে নিন।

Monday, May 17, 2021

 


কফি দিয়ে তৈরি হেয়ার প্যাক


কফি দিয়ে তৈরি হেয়ার প্যাক নিয়মিত ব্যবহার করলে চুল দ্রুত লম্বা হয়। বিভিন্ন কারণে চুল ক্ষতিগ্রস্ত হলে কফি দিয়ে সে সমস্যা মেটানো সম্ভব।

কফি দিয়ে নিয়মিত চুল ধুলে চুলের বৃদ্ধি দ্রুত হয়। দেখে নিন কীভাবে প্যাক বানাবেন। প্রথমে ২ টেবিল চামচ কফি ও ১ কাপ পানি নিতে হবে। তারপর ১ কাপ কফি তৈরি করে তা ঠাণ্ডা করে নিন। এবার মাথায় ভালো করে শ্যাম্পু করে মাথা ধুয়ে মুছে ফেলুন। চুলে অতিরিক্ত পানি থাকলে তা ঝরিয়ে ফেলতে হবে। এরপর মাথার ত্বকে এবং চুলে ঠাণ্ডা কফি ঢেলে পাঁচ মিনিট মাসাজ করুন। ৩০ মিনিট চুল একটা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখুন। তারপর কুসুম গরম পানি দিয়ে ভালো করে চুল ধুয়ে শুকিয়ে নিন। ভালো ফলাফলের জন্য সপ্তাহে কমপক্ষে ২ থেকে ৩ বার ব্যবহার করতে হবে।

কফি, নারকেল এবং দই বরাবরই খুব ভাল চুলের জন্য। এটি চুলকে শক্তিশালী করতে চুলে প্রয়োজনীয় পুষ্টির যোগান দেয়। প্রথমে ২ টেবিল চামচ কফি পাউডার, ২ টেবিল চামচ নারিকেল তেল, এবং ৩ টেবিল চামচ দই একত্রে মিশিয়ে নিন। এবার আলাদা একটি পাত্রে কফি পাউডারের সাথে নারকেল তেল ও দই নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে ঘন একটা পেস্ট তৈরি করুন। এরপর হাতে মিশ্রণটি নিয়ে তা মাথার ত্বকে এবং চুলে ভালোভাবে লাগান। এরপর অন্তত এক ঘণ্টা চুল ঢেকে রাখুন। তারপর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ভালো করে ধুয়ে ফেলুন

এগুলো ছাড়াও আরো একটা মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। ৮ টেবিল চামচ কফি ও ১ কাপ পানি দিয়ে কফি স্ক্রাব বানিয়ে তা চুলে লাগাতে পারেন। পাঁচ মিনিট ধরে মাথার ত্বকে ভালোভাবে স্ক্রাব করতে হবে। এরপর মাথা ভালো করে ধুয়ে চুল শুকিয়ে নিন। ভালো ফলাফলের জন্য সপ্তাহে কমপক্ষে দু’বার স্ক্রাব করুন।

Sunday, May 16, 2021

 

প্যালেস্টাইনে দ্বি-রাষ্ট্রিক সমাধান : প্রাচীন নগর-রাষ্ট্রের :জায়নবাদী সংস্করণ

মাসুদ রানা

রাষ্ট্র কি সমাজের মতো বিকশিত সত্তা নাকি আরোপিত প্রতিষ্ঠান, তা নিয়ে তর্ক হতে পারে। কিন্তু ইসরায়েল-যে বাইরে থেকে আরোপিত রাষ্ট্র, এ-বিষয়টি তর্কাতীত। প্রতিক্রিয়াশীল ইহুদি জাতীয়াতাবাদ হচ্ছে জায়নবাদ। নির্বাক ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতির দোহাইয়ে জায়নবাদ চেয়েছে প্যালেষ্টাইনের মাটিতে ইহুদিদের জন্য একটি একান্ত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে। দীর্ঘ পরিকল্পনা ও সময় নিয়ে এবং আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ইহুদিদের পাঠানো হলো প্যালেষ্টাইনে জমি কিনে বসতি স্থাপনের জন্য।

যুগ-যুগ ধরে যে-ইহুদিরা প্যালেষ্টাইনে বাস করছিলো, তারা ছিলো প্যালেষ্টাইনী সমাজেরই অংশ। জায়নবাদ সেখান থেকে আসেনি। ওরা বরং এর বিরোধী। জায়নবাদ এসেছে বাইরে থেকে। জায়নবাদের রাজনৈতিক ও আদর্শিক প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হয়েই প্রধানতঃ ইউরোপীয় ইহুদিরা প্যালেষ্টাইনে ধীরে-ধীরে জায়গা কিনে ও সংখ্যা বাড়িয়ে এক পর্যায়ে জাতিসংঘের সীলমোহরে পশ্চিমা রাষ্ট্র সমূহের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত করলো তাদের স্বপ্নের ইহুদি রাষ্ট্র। জন্ম নিলো প্যালেষ্টাইনের বুকে বর্ণ-রাষ্ট্র ইসরায়েল। বর্ণ-রাষ্ট্র ও জাতি-রাষ্ট্রের মধ্যে পার্থক্য আছে। জাতি-রাষ্ট্র তার দেহের মধ্যে প্রবল জাতির সাথে দুর্বল জাতির ইন্টিগ্রেশন কিংবা এ্যাসিমিলেশনে বাধা দেয় না বরং উৎসাহিত করে। যেমন ব্রিটেইন, আমেরিকা, ফ্রান্স। এ-দেশগুলো বর্ণগতভাবে এ্যারিয়ান বা ককেশিয়েড হলেও এখানে সেমেটিক ও নিগ্রোয়েড রেইসের লোকেরা ইন্টিগ্রেইট বা এ্যাসিমিলেইট করতে পারছে। ফ্রান্সের ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট সার্কোজি এবং যুক্তরাজ্যের বিরোধী দলীয় নেতা ইহুদি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট কালো।

কিন্তু বর্ণ-রাষ্ট্র কোনোক্রমেই ইন্টিগ্রেশন বা এ্যাসিমিলেশনকে সমর্থন করে না। এ্যাডলফ হিটলারের নেতৃত্বাধীন নাৎসী জার্মানী ছিলো একটি বর্ণ-রাষ্ট্র। এ্যারিয়ান রেইসের শ্রেষ্ঠত্ব-সূচক পার্থক্য সংরক্ষণের চেষ্টায় জার্মান বর্ণ-রাষ্ট্র ইহুদিদেরকে শুধু ঘেটোতে আলাদা করে রাখেনি, লক্ষ-লক্ষ ইহুদিকে হত্যাও করা হয়েছে। তবে, এ-পৃথিকীকরণ প্রচেষ্টা পৃথিবীতে নতুন নয়। প্রাচীন নগর রাষ্ট্রেও আমরা এ-পৃথিকীকরণ লক্ষ্য করি। দুর্ভাগ্যবশতঃ জার্মান বর্ণ-রাষ্ট্রের ড্রাকুলা-কামড় খেয়ে ইহুদিরা এখন নিজেরাই নাৎসী জার্মানদের মতো বর্ণবাদী হয়ে উঠেছে। একইভাবে আজ ইহুদি-রাষ্ট্র প্যালেষ্টাইনীদের ঘেটোতে রাখছে, নাগরিক ও মানবিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে এবং যখন-তখন বোমা ও গুলিবর্ষণে আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা হত্যা করছে । প্যালেষ্টাইন সমস্যার আমরা যতো সংখ্যক রাষ্ট্রিক সমাধানই চিন্তা করি না কেনো, রাষ্ট্র বিষয়ে যে-কঠিন প্রশ্নটি উত্তর দিতে হবে, তা হচ্ছে রাষ্ট্র কি বর্ণবাদী হবে নাকি গণতান্ত্রিক হবে।

জায়নবাদের সমস্যা হচ্ছে এটি একই সাথে বর্ণবাদী ও গণতান্ত্রিক হতে চায়, যা সংজ্ঞানুসারে অসম্ভব – এ্যাবসার্ড। আর এখানেই জায়নবাদের সঙ্কট। আর এ-সঙ্কট থেকেই ইসরায়েলকে উদ্ধারের জন্য আমদানী করা হয়েছে প্যালেষ্টাইন সমস্যার দ্বি-রাষ্ট্রিক সমাধান। আমরা যদি পেছনের দিকে তাকাই, আমরা দেখবো, আদিতে ইসরায়েল ছিলো বর্তমানের চেয়ে আকারে অনেক ছোটো। কিন্তু আরবদের দ্বারা আক্রান্ত হয়ে বিজয়ী হবার ফলে সে তার রাষ্ট্রীয় পরিধি বৃদ্ধি করেছে। পশ্চিমে ভূমধ্য সাগর ও পূর্বে জর্ডান নদীর পশ্চিম তীর পর্যন্ত বিস্তৃত উর্বর ভূমির প্যালেষ্টাইনে আরোপিত ইহুদি রাষ্ট্রের সীমানা বিস্তৃতির রাজনৈতিক ও সামরিক কারণের পাশাপাশি শক্তিশালী অর্থনৈতিক কারণও আছে। খুব সংক্ষেপে, তার দুটো হচ্ছে কৃষি ও সস্তা প্যালেষ্টাইনী শ্রমশক্তি।

অর্থাৎ, জায়নবাদ চাচ্ছে ইসরায়েল হবে এমন একটি রাষ্ট্র, যা প্রাচীন নগর-রাষ্ট্রের মতো প্রাচীর ঘেরা, যেখানে শুধু অভিজাতেরা থাকবে এবং এর চারপাশে থাকবে বিশাল বিস্তৃত দাস-বসতি। সেখানে দাসেরা উৎপাদন করবে কৃষিজ দ্রব্য তা ভোগ করবে নগরবাসী। রাষ্ট্র চলবে অভিজাতদের গণতান্ত্রিক চর্চার মধ্য দিয়ে কিন্তু সেখানে প্রাচীরের বাইরের দাসেরা অংশ নিতে পারবে না। মধ্যপ্রাচ্যিক একেশ্বরবাদী ভূবনদৃষ্টি – ইহুদিধর্ম, খ্রীষ্টধর্ম ও ইসলামধর্ম – গড়ে উঠেছে প্রাচীন নগর-রাষ্ট্রের যুগে। সুতরাং ঐ ধর্মগুলোর কোনো একটিতে ঈশ্বরের দেয়া প্রতিশ্রুতিকে ভিত্তি করে যদি রাষ্ট্র গঠন করা হয়, তাহলে সে-রাষ্ট্রে যে প্রাচীন নগর-রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য থাকবে তাতে অবাক হবার কিছু নেই। আধুনিক যুগে ঈশ্বরের নির্দেশে রাষ্ট্র গড়া হচ্ছে মানবজাতির জন্য একটা মহা বিপত্তির বিষয়। আধুনিক রাষ্ট্র যা গড়ে উঠেছে ঈশ্বরের প্রশ্রয়প্রাপ্ত রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রকে আরাধ্য করে, তার সাথে ঈশ্বর-প্রতিশ্রুত ইহুদি রাষ্ট্রের সংঘাত লাগতে বাধ্য।

ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েল তার টেরিটোরীতে যদি আধুনিক রাষ্ট্রের মতো গণতন্ত্র চর্চা করতে চায়, তাহলে তাকে সর্বজনীন ভৌটাধিকারের স্বীকৃতি দিতে হবে এবং অবাধ ভৌটাধিকারের ভিত্তিতে নির্বাচিত সরকারের হাত রাষ্ট্র পরিচালনার ভার দিতে হবে। আর, তাই যদি হয়, তাহলে উচ্চ জন্মহার সম্পন্ন প্যালেষ্টানীদের সংখ্যা ইসরায়েল রাষ্ট্রের মধ্যেই এমন সংখ্যায় উন্নীত হবে যে, নির্বাচনে পথে ইহুদি রাষ্ট্রের কর্তৃত্ব চলে আসবে প্যালেষ্টাইনীদের হাতে। এখন, গণতন্ত্র চর্চা করলে যদি ইহুদি রাষ্ট্রই না থাকে, তাহলে ইসরায়েল প্রতিষ্ঠা করার কী অর্থ থাকে? আর, গণতন্ত্র যদি না থাকে, তাহলে ইসরায়েল রাষ্ট্রটি চলবে কোন পদ্ধতিতে? বিভিন্ন দেশ ও বিভিন্ন ধারা থেকে এসে তথা কথিত ইসরায়েলী জাতি গঠন করা মানুষগুলোর মধ্যে কার আধিপত্য কে কী ভিত্তিতে মানবে? সুতরাং গণতন্ত্র ছাড়া কোনো ইসরায়লের উপায় নেই।এই যে, গণতন্ত্রের অত্যাবশ্যকতার প্রয়োজনানুভব, আবার গণতন্ত্রের ফলে রাষ্ট্রের বর্ণ-চরিত্র হারার ভীতি, এটি হচ্ছে জায়নবাদের উভয় সঙ্কট।

জায়নবাদের কাছে এ-সঙ্কট থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায় হচ্ছে ইসরায়েলের ভিতর যে আর জনসমষ্টি আছে, তাদেরকএ একটি ঘেটোতে স্থানান্তরিত করা। এ-ঘেটোর নাম হবে প্যালেষ্টাইন। প্যালেষ্টাইন ভূকৌশলিক ভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকবে ইসরায়লের দ্বারা। এর বিশাল জনগোষ্ঠী হবে একসাথে সস্তা শ্রমশক্তি ও কাঁচামালের যোগানদার এবং ইসরায়েলী পণ্য ও সেবার একচ্ছত্র বাজার। ইসরায়েল হচ্ছে আধুনিক প্যলেষ্টাইনের মাটিতে প্রতিষ্ঠিত একটি প্রাচীন নগর-রাষ্ট্র যার সেণ্টারে প্রভূ-নাগরিকদের আবাসের নাম হবে খোদ ইসরায়েল আর পেরিফেরীতে গঠিত হবে শ্রম-দাসদের বস্তি, যার নাম হবে প্যালেস্টাইন।

গণ-বিচ্ছিন্ন ও জনমমতা-হীন প্যালেষ্টাইনী নেতৃত্ব দৃশ্যতঃ আজ ক্লান্ত ও ভোগবাদে নিপতিত। তাঁরা স্থিতি চাচ্ছেন উচ্ছিষ্ট ভোগ করেই। তাই, দ্বি-রাষ্ট্রিক তত্ত্ব তাঁদের কাছে যথেষ্ট আবেদন রাখে। কিন্তু এ-দ্বিরাষ্ট্রিক সমাধান যে প্যালেষ্টাইনীদেরকে ভৌগলিকভাবে বিভক্ত করবে, দূর্বল করবে এবং জাতিসত্তাকে খণ্ডিত করবে, তার দিকে তাঁরা বস্তুতঃ ভ্রুক্ষেপহীন।

একটি অগ্রসর জাতির ভূমির ও জনসংখ্যার বিভক্তি তাকে যে কতোটুকু পিছনে ফেলে দিতে পারে, তা আজ থেকে পঁয়ষট্টি বছর আগের বাঙালীর সাথে আজকের বাঙালীর তুলনা করলে সহজেই অনুমান করা যায়। আবার, বিভক্ত জাতি পুনরায় এক হলে যে কতোটুকু এগিয়ে যেতে পারে, তা বুঝা যায় ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের মধ্যে আজ ঐক্যবদ্ধ জার্মানীর অবস্থান দেখলে। সুতরাং প্যালেষ্টাইনী জনগণকে আজ সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা তথাকথিত দ্বি-রাষ্ট্রিক সমাধানের পথে নিজেদের বিভক্ত ও দূর্বল করবে, নাকি অখণ্ড প্যালেষ্টাইনে একটি আধুনিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নিজেদেরকে সমৃদ্ধ করবে। স্বদেশ দুঃশাসন কবলিত হলে এক সময় তাকে মুক্ত করা যায়, কিন্তু স্বদেশ দ্বিখণ্ডিত হলে তাকে সহজে এক করা যায় না

Friday, May 14, 2021

 

গবেষক হতে হলে আগে ভালো মানুষ হতে হয়

ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান চৌধুরী


মানুষ যখন তার চিন্তার বাইরে গিয়ে খুব অদ্ভুত অথচ বিস্ময়কর চিন্তা করতে পারে ঠিক তখন গবেষণা তার যাত্রা শুরু করে। সে যাত্রার মূলশক্তিটা সেই মানুষগুলোর হাতে থাকে যাদের মধ্যে গবেষণা করার একটা হার না মানা মনোভাব থাকে।গবেষক হতে হলে আগে ভালো মানুষ হতে হয়। মানুষের ভিতরে যে মানুষটা থাকা দরকার সে মানুষটা থাকতে হয়। কারণ একজন ভালো মানুষের ভালো একটা মন থাকে। খুব কঠিন নয়, বায়বীয় নয়, তরল নয়, একটা মনের মতো মন। সে মনের বিশুদ্ধতার শক্তি মানুষের মধ্যে একটার পর একটা নতুন চিন্তার ক্ষেত্র তৈরি করে। মানুষ যেটা ভাববে না বলে মনে মনে ঠিক করেছিল তেমন এক একটা ভাবনা মানুষের মধ্যে তৈরি করে মানুষকে যেন তার ভিতরের অদেখা সত্ত্বা বলে দেয় “সেই সত্য যা রচিবে তুমি, ঘটে যা তা সব সত্য নহে"। 

আর্কিমিডিস কোনো কিছু আবিষ্কার করবেন বলে গবেষণা করেননি। তিনি নিজেও জানতেন না তিনি গবেষণা করছেন। অথচ দিনে দিনে তিনি বিখ্যাত গবেষকে পরিণত হয়েছেন। তিনি যা জানতে চেয়েছেন সেটা বুঝতে গিয়ে তিনি যেটা করেছেন সেটাই গবেষণার অমূল্য সম্পদে পরিণত হয়েছে। 

এই বিষয়টি উল্লেখ করে তার মৃত্যুর তিনশ' বছর পর গ্রীক ঐতিহাসিক প্লুটার্ক বলেছেন , “আর্কিমিডিসের অধিকাংশ চিন্তা-ভাবনা, গবেষণা আর কাজ ছিল তার কৌতুহলের ফলাফল, জীবনের কোনো বিশেষ প্রয়োজনের কথা তিনি কখনো ভাবেননি।” 

মৃত্যুর আগে মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি গবেষণা করে গেছেন। আর্কিমিডিস ২১২ খ্রিস্টপূর্বাব্দে এক রোমান সৈন্যের হাতে তিনি নিহত হন। তখন রোমানরা গ্রীক সাম্রাজ্য বিজয় করেছিল। প্রচলিত আছে, রোমান সৈন্যরা যখন আর্কিমিডিসকে বন্দী করতে এসেছিল, তখনও আর্কিমিডিস তার গবেষণার কাজে ডুবে ছিলেন। গবেষণায় ব্যাঘাত ঘটবে বলে তিনি রোমান সৈন্যদের সাথে যেতে না চাইলে রাগের মাথায় এক সৈন্য তার মুণ্ডুচ্ছেদ করে। একজন গবেষকের কাছে মৃত্যুর চেয়ে তার কাজ যে বেশি গুরুত্বপূর্ণ আর্কিমিডিস মরে তা প্রমাণ করেছেন। হয়তো তার একটা নতুন আবিষ্কার পৃথিবীকে চমকে দিবে বলে প্রতীক্ষায় ছিল কিন্তু তা আর হয়ে উঠেনি এমন একটা ঘটনায়। তবে তিনি তো মরেননি বরং মৃত্যুঞ্জয়ী হয়েছেন। গবেষকরা কখনো মরে না। বরং তারা যে গবেষণার ফলাফল রেখে যান তা পরবর্তী গবেষকদের গবেষণার বিষয়বস্তুতে পরিণত হয়।

বিশ্ববিখ্যাত বাঙালি গবেষক আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্রের জীবনটাও অনেকটা আর্কিমিডিসের মতো তবে মৃত্যুটা একটু ভিন্ন। সারাদিন সারা রাত ছাত্রদের সাথে নিয়ে গবেষণার পর গবেষণা করে গেছেন তিনি। কখনো নিজের জীবন নিয়ে ভাবেননি। ছাত্রদের গবেষণা শেখাবেন বলে বিয়ে থা করে সংসার পর্যন্ত করেননি তিনি। কলকাতার বাংলা কলেজের একটা ছোট কক্ষে তিনি বিশ্বজনীন গবেষণার ক্ষেত্র তৈরি করেছিলেন। কারণ তিনি জানতেন গবেষণা করতে বড় বড় যন্ত্রপাতি লাগে না বরং গবেষণা করতে লাগে একটা বিশুদ্ধ মন। যে বিশুদ্ধ মন একটার পর একটা সৃজনশীল চিন্তার জন্ম দিয়ে মানুষকে জানিয়ে দিতে পারে  মানুষ যা ভাবছে মানুষ তার থেকেও বেশি অগ্রসরমান পৃথিবীর কথা ভাবতে পারে। গবেষণা করার সময় ছাত্ররা তাকে চারপাশ থেকে ঘিরে থাকতো। খুব ভাগ্যবান একজন মানুষ ছিলেন তিনি। ছাত্রদের গবেষণা শেখাতে শেখাতে এক প্রিয় ছাত্রের বুকে মাথা রেখে কখন যে মৃত্যুর কোলে তিনি ঢলে পড়েছেন তা কেউ বুঝতেও পারেনি। এমন ভাগ্য নিয়ে সবাই জন্মে না তবে যারা জন্মে তারা ইতিহাস গড়ে না, ইতিহাস তাদের গড়ে। 

অটো হান স্বপ্নের পিছনে ছুটেছেন ক্রমাগতভাবে। কখনো ভেবেছেন তিনি সঙ্গীতশিল্পী হবেন। আবার কখনো ভেবেছেন  চিত্রশিল্পী হবেন। বাস্তবে কোনোটাই তিনি হতে পারেননি। কিন্তু মনের ভিতরে যার শিল্প রসকে আঁকড়ে ধরার চিন্তা তিনিই তো পারেন বিজ্ঞানকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়ে গবেষণা থেকে অভূতপূর্ব সৃজনশীলতাকে বের করে আনতে। তিনি থিওরি দিয়ে গবেষণার চিন্তাকে আটকে রাখতে চাননি বরং পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সত্যকে উন্মোচন করতে চেয়েছেন। স্ট্রাসমানকে সাথে নিয়ে অটো হান ইউরেনিয়াম-২৩৫ নিউট্রন কণা দিয়ে পরমাণু ভাঙতে সফল হলেন। ১৯৪৪ সালে তারই হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল সে বছরের রসায়ন শাস্ত্রে শ্রেষ্ঠ নোবেল পুরস্কার এবং বলা হয়েছিল ভারী কেন্দ্রকের ভাঙনের বিষয়ে গবেষণা আপনাকে চিরস্মরণীয় করে রেখেছে। তার বাবা চেয়েছিলেন যে তিনি যেন স্থাপত্যকলায় লেখাপড়া করে অগাধ বিত্ত-বৈভবের অধিকারী হন। কিন্তু তিনি শিল্প রসায়নবিদ হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলায় আগ্রহী হয়ে উঠেন। রাসায়নিক বিক্রিয়ার অদ্ভুত খেলা তার মধ্যে কৌতূহলের জন্ম দিয়ে তার চিন্তার জগতকেই বদলে দিয়েছে। তার কাছে অর্থ বিত্ত ছিল গৌণ, নতুন জ্ঞান সৃষ্টিই ছিল মুখ্য।গবেষকরা তো এমনই যারা সবকিছু ত্যাগ করে জীবনবোধের চেতনায় মানুষের কল্যাণে কাজ করে যান।

গবেষকরা বোকা হন। এখানে বোকা মানে বুদ্ধিমত্তার ঘাটতি নয় বরং যারা সহজ সরল জীবন যাপন করে তাদের সৃজনশীলতাকে প্রাধান্য দেন তাদের বুঝানো হয়েছে। আজকের পৃথিবীতে আমরা বড় বড় দুর্নীতিবাজ, ক্ষমতার অপব্যবহারকারী, তথাকথিত হোমরা চোমড়াদের বুদ্ধিমান বলে থাকি আর এসব থেকে যারা নিজেদের সুরক্ষিত রেখে সততা ও নৈতিকতাকে প্রাধান্য দেয় তাদের আমরা বোকা বলি। অনেক সময় ব্যাক ডেটেড বলে ভর্ৎসনাও করি।

অনেকে বলেন সুযোগের অভাবে মানুষ সৎ থাকে। এই কথাটা সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। বিশেষ করে গবেষকদের ক্ষেত্রে। কারণ গবেষকরা তথাকথিত দুনিয়ার অতি চতুর রথী মহারথী না হয়ে বোকা মানুষের জীবনকে বেঁচে নেয়। এই রথী মহারথীদের কাহিনীর ব্যাপ্তি তাদের মৃত্যুর সাথে সাথে শেষ হয়ে যায়। কিন্তু বোকা গবেষকদের কাহিনী সে সময় মানুষকে তথাকথিত দাপুটে মানুষদের চেয়ে কম প্রভাবিত করলেও গবেষকদের কীর্তি ইতিহাসের অংশ হয়ে যায়। সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো বোকারাই পৃথিবীর পরিবর্তন আনে, সেটা ভোগে নয় ত্যাগের মাধ্যমে। গবেষকরা এমন কিছু ভাবেন যেটা সে সময়ের ভাবনা হয়তো নয়। যে ভাবনাটা অনেক অনেক যুগ পরের। গবেষকদের অদ্ভুত কল্পনাগুলোকে প্রথমে অবিশ্বাস করেছে, উপহাস করেছে মানুষ। কোনোভাবেই সেগুলো মানতে চায়নি। নতুন কল্পনা ও ধারণা সৃষ্টির মানুষগুলো ধিকৃত, অপমানিত, অবহেলিত হয়েছে। 

অনেক সময় প্রচলিত ধারণার বিপরীতে গিয়ে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছে, শাস্তি ভোগ করেছে। ফাঁসির দণ্ডে দণ্ডিত হয়েছে। কিন্তু মানুষের অনেক কল্পনা যেগুলো প্রথমে অসম্ভব স্বপ্ন বলে মানুষ উড়িয়ে দিয়েছে, সেগুলোই একদিন সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে। এর অর্থ কী? এর অর্থ হচ্ছে কল্পনা ও ভাবনাকে যখন অসম্ভব ও অবাস্তব বলে মনে হবে, তখনই ধরে নিতে হবে নতুন কোনো ধারণা বা আবিষ্কার পৃথিবীতে আসার আগাম বার্তা ঘোষণা করছে। গবেষণার প্রথম ও শেষ কথাই হল পৃথিবীতে অসম্ভব বলে কিছু নেই। পৃথিবীতে প্রাণীদের প্রাণ আছে; কিন্তু সবুজ লতাপাতায় জড়ানো উদ্ভিদের প্রাণ আছে এটা কি স্যার জগদীশ চন্দ্র বসুর আগে কেউ ভেবেছেন? ভাবেননি। তিনি যদি না ভাবতেন হয়তো এখনও আমরা জানতাম উদ্ভিত প্রাণহীন কিংবা জড়পদার্থ। উদ্ভিদেরও যে প্রাণ আছে, আমাদের দেশে বসেই এ বিজ্ঞানী প্রমাণ করেছেন। সারা বিশ্বকে নতুন ধারণা দিয়ে বিজ্ঞান ও গবেষণার ইতিহাসকেই বদলে দিয়েছিলেন এ বাঙালি বিজ্ঞানী। কেবল মানসিক শক্তিকে আঁকড়ে ধরে তিনি এ ধরনের অনেক বিশ্বমানের গবেষণা করে গেছেন। তিনি তারই আবিষ্কৃত ক্রেস্কোগ্রাফ যন্ত্রের সাহায্যে প্রমাণ করেছিলেন উদ্ভিদের প্রাণের অস্তিত্ব। এখন সারা পৃথিবীতে উদ্ভিদের জীবন আছে এ সত্যটি মেনে নানা ধরনের গবেষণা চলছে। 

আলবার্ট আইনস্টাইন বড় মাপের একজন বিজ্ঞানী হলেও তার কোনো পরীক্ষাগার ছিল না। তিনি বিশ্বাস করতেন তিনটি জিনিস যদি মানুষের কাছে থাকে তবে গবেষণার মাধ্যমে মানুষ পৃথিবীকে বদলে ফেলতে পারে। এ তিনটি জিনিস হল-কাগজ, কলম আর চিন্তাশক্তি। এর মানে হচ্ছে, মানুষ যদি চিন্তাশক্তিকে ব্যবহার করতে পারে তবে সে নতুন নতুন উপাদান সৃষ্টি করতে পারে। মানুষ যখন বিভিন্ন আইডিয়া বা ধারণা নিয়ে ভাবতে থাকে, তখন তার চিন্তা শক্তি গড়ে ওঠে। এ আইডিয়া কারও কারও কাছে রূপকথার গল্প মনে হতে পারে। কারও কাছে হাস্যকর বিষয় হতে পারে। কিন্তু পরনিন্দার ভয়ে মানুষ যদি আইডিয়া তৈরি করা বন্ধ করে দেয়, তবে গবেষণার মাধ্যমে পৃথিবীর সমৃদ্ধি সম্ভব হবে না।

আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় আইডিয়া তৈরির মাধ্যমে কীভাবে চিন্তা শক্তিকে কাজে লাগানো যায়, সেটি নিয়ে ভাবার সময় এসেছে। আমাদের তরুণ প্রজন্মকে বলব, তোমরা তোমাদের সৃষ্টিশীল দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে উদ্ভট কিংবা বাস্তব যে কোনো ধরনের ধারণা তৈরি করার মনোভাব গড়ে তোলো। কারণ ভাবনাটা উদ্ভট না হলে সৃষ্টিটাও নতুন হয় না। আজ যেটা নতুন ভাবনা, সেটা আগামী দিনের গবেষণার সম্ভাবনা। পাখি নিয়ে না ভাবলে উড়োজাহাজ কিংবা রকেট তৈরি হতো না। মনের টানকে অনুভব না করলে মানুষ তথ্য, প্রযুক্তি ও যোগাযোগের আধুনিক ধারণা তৈরি করতে পারত না। টিকটিকির দেওয়াল বেয়ে চারপাশে ঘুরতে না দেখলে মানুষ রোবট কিংবা নিজেদের চারপাশে ঘোরানোর প্রযুক্তি তৈরি করতে সক্ষম হতো না। মানুষ চাঁদকে ভালো না বাসলে চাঁদে ও বিভিন্ন গ্রহে যাওয়ার মতো প্রযুক্তি গড়ে তুলতে পারত না। মানুষ পারে না, এমন কিছু পৃথিবীতে নেই। যে যেভাবে পারি সেভাবে ভাবতে থাকি। হয়তো এ কাল্পনিক ভাবনাগুলো একদিন কালজয়ী বিজ্ঞান ও আবিষ্কার হয়ে সভ্যতাকে এগিয়ে নেবে।

ঘর ফুল দিয়ে সাজালে মনটা ও ভাল হয়ে যায়।






 



কালো কফি :

 ভারী ব্যায়ামের পর এক কাপ কালো কফি হতে পারে আদর্শ পানীয়। এটি ব্যায়াম করার জন্য শক্তি জোগায়। 

একই সঙ্গে এতে ক্যাফেইন ছাড়াও প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাসিয়াম রয়েছে।

ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ এপিডেমিয়োলজি’র প্রতিবেদন মতে, যারা নিয়মিত কালো কফি খান, তাদের মধ্যে স্থূলতা এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কম। 


 



কালো চা :

 কালো চা রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়াতে সহায়তা করে। 

 যারা নিয়মিত কালো চা পান করেন, তারা অতিরিক্ত ক্যালরি ঝরাতে পারেন।

Thursday, May 13, 2021

 ভাতের ফ্যান রয়েছে ‘বিউটি সিক্রেট’?

 চুল ভালো রাখে : 

চুলে শ্যাম্পু করার পর ভাতের ফ্যান দিয়ে মাথাটা ভালো করে ঘষে নিন। কয়েক মিনিট এ অব’স্থায় রেখে দিয়ে, পানি ভালো করে চুল ধুয়ে নিন। কিছুদিনের মধ্যেই চুল হয়ে উঠবে মসৃণ, ঝলমলে। যাদের চুলের আগা ফেটে যাচ্ছে, তারাও উপকৃত হবেন।


ত্বকে জৌলুস আনে : 

যাঁদের ত্বক ঔজ্জ্বল্য হারাচ্ছে, তারাও মুখে ভাতের ফ্যান মাখতে পারেন। প্রথমে উ’ষ্ণ গরম পােিন মুখে ধুয়ে নিন। তারপর তুলোয় করে সারা মুখে ভাতের ফ্যান মাখু’ন। কিছুক্ষণ রেখে, মুখ ধুয়ে নিন। এতে ত্বকের জৌলুস ফেরার পাশাপাশি ত্বক টানটানও হবে। তাই মুখের বলিরেখা ঠে’কাতে এটি ব্যবহার ক’রতে পারেন।


ত্বকের জ্বা’লা ও প্রদাহের চিকিৎ’সায় : 


কিছুটা চাল টগবগ করে ফুটিয়ে নিয়ে সেই পানিটা একটা পাত্রে রেখে দিন। গায়ে বা শ’রীরের কোথাও র‌্যাশ বেরোলে, অন্ত’ত ১৫ মিনিট চুবিয়ে রাখু’ন। ফল পাবেন।


একজিমা’রও ওষুধ চালের পানি : 

যেখানে একজিমা হয়েছে, চালের পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিন। যত দিন না স’ম্পূর্ণ সারছে, লা’গিয়ে যেতে হবে।


ডায়েরিয়ার ওষুধ :

 ডায়েরিয়ায় ভুগলে এক গ্লাস ভাতের ফ্যানে এক চিমটি লবণ মিশিয়ে খেয়ে নিন। চটপট পে’ট ঠিক হয়ে যাবে।ভাতের ফ্যানে রয়েছে ৮টি জ’রুরি অ্যামাইনো এসিড।


পেশি পুনর্গঠনে সাহায্য করে। 


 

সকালে  ১টি কাজে ত্বক থাকবে উজ্জ্বল ও ঝলমলে

সকালে ঘুম থেকে উঠে যদি ত্বকে তেলতেল ভাবের আধিক্য সেইসাথে ছোপ ছোপ দাগ দে’খতে পান তাহলে নিশ্চয়ই ভালো লাগে না। এছাড়াও সারারাত ঘুমানোর পর চোখের নিচের ফোলা ভাব কিংবা রাতে ভালো ঘুম.

না হলে চোখের নিচে কালো দাগ (Black Spot) পরা খুব স্বা’ভাবিক।

১ টি কাজ করে দেখু’ন। দেখবেন পুরোদিনই ত্বক থাকবে উজ্জ্বল ও ঝলমলে।

যা যা লাগবেঃ

– ৬-৭ চা চামচ চা পাতা

– ১০-১২ ফোঁটা লেবুর রস

– ১ লিটার পানি

– অতিরি’ক্ত শুষ্ক ত্বক হলে বরফ জমানোর আগে মিশ্রনে ১ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিতে পারেন।

পদ্ধতি ও ব্যবহার বিধিঃ

– ১ লিটার পানি চুলায় ফুটতে দিয়ে এতে চা পাতা দিয়ে জ্বাল দিয়ে লিকার করে নিন। লিকার মাঝারি ধ’রণের গাঢ় হবে।

– এরপর লিকার ঠাণ্ডা ক’রতে দিন। ঠাণ্ডা হয়ে এলে এতে লেবুর রস ভালো করে মিশিয়ে নিন এবং বরফের ট্রে তে মি’শ্রণটি ঢেলে বরফ জমতে দিন। সবচাইতে ভালো হয় যদি এই কাজটুকু রাতে করে রাখেন। পুরো

রাতে বরফ জমে যাবে।

– এরপর সকালে উঠে প্রথমে মুখ ভালো করে ধুয়ে নিন।

 চালের গুঁড়ো এবং দুধ মিশিয়ে তা দিয়ে ত্বক স্ক্রাব করে নিন।

– তারপর বানিয়ে রাখা বরফের মাত্র ২ টি খণ্ড নিয়ে একটি সুতি পাতলা কাপ’ড়ে পেঁচিয়ে নিয়ে তা দিয়ে বরফ না গলা পর্যন্ত আলতো করে ঘষে নিন পুরো ত্বকে।

– চোখের নিচের দিকে ভালো ভাবে সত’র্কতার সাথে ঘষে নিন। এতে চোখের নিচের ফোলা ভাব ও কালো দাগ অনেকাংশে দূ’র হয়ে যাবে।

 

 হারিয়ে যেতে বসেছে ঈদের ঐহিত্যবাহী শরবত ‘মলিদা’

এখনকার অনেকেই মলিদার নামও জানেন না। এই পানীয় যেমন সুস্বাদু তেমনি সারা মাসের রোজার ক্লান্তি দূর করতেও সহায়ক।


উপকরণ:
 ১ কাপ পোলাওয়ের চাল বাটা, 
২ টেবিল চামচ নারিকেল বাটা, 
১/২ কাপ ভিজিয়ে রাখা চিড়া, ২ কাপ ঠান্ডা তরল দুধ, 
১ কাপ ডাবের পানি, 
১ চা চামচ আদা বাটা, 
১/২ কাপ চিনি, 
লবণ পরিমাণমতো।

প্রণালি:
১।  
একটি পাত্রে প্রথমে পোলাওয়ের চাল বাটা, নারিকেল বাটা ও চিড়া মিশিয়ে হাত দিয়ে কচলে নিন যেন সবগুলো উপাদান একসাথে মিশে যায়। 
২।
আরেকটি পাত্রে তরল দুধ, ডাবের পানি ও চিনি মিশিয়ে সম্পূর্ণরূপে চিনি না মিশে যাওয়া পর্যন্ত নাড়তে থাকুন
৩।
দুধের মিশ্রণে চাল, নারিকেল ও চিড়ার মিশ্রণটি অল্প অল্প করে মিশিয়ে নাড়তে থাকুন। 

৪।
বগুলো মিশ্রণ ঢালার পর লবণ ও আদা বাটা দিয়ে ৫ মিনিট ভালো করে নাড়ুন। চাইলে ব্লেন্ডারেও ব্লেন্ড করে তৈরি করে নিতে পারেন। 
৫।
এবার পছন্দমতো গ্লাসে ঢেলে সাজিয়ে পরিবেশন করুন