ভাড়াটে
আজ সকালে উঠে দেখলেন, বাগানে আইসক্রিমের কয়েকটা প্যাকেট পড়ে। কাল বেশ কিছু লোক এসেছিল ভাড়াটের ঘরে, তা তিনি টের পেয়েছিলেন। এখন প্যাকেট দেখে তাঁর মাথায় আগুন জ্বলে উঠল।
-মৌমিতা চক্রবর্তী / Date : Monday, August 31 , 2020
“মোটর কিন্তু দিনমানে একবারই চলবে, তাতে জল ফুরোলে তুমি নেয়েছ কি না, রেঁধেছ কি না আমি দেখব না,” ঊষাদেবী ভাড়াটে ঘরে পা রাখার আগেই শর্তসমূহ আউড়ে গেলেন। “বাগানে একটা কুচিও নোংরা ফেলবে না। যে চুলোয় থাকো, রাত দশটার মধ্যে বাড়ি ঢুকবে। ছাদ ব্যবহার শুধুমাত্র জামাকাপড় শুকোনর জন্যই করতে পারো, আর বাড়ি ছাড়ার ইচ্ছে থাকলে তিন মাস আগে জানাতে হবে।”
রজনী ভয়ে ভয়ে মাথাটাকে কাঁধ অবধি হেলিয়ে সম্মতি জানাল। কিন্তু ঊষাদেবীকে দেখে ভিতরে ভিতরে খানিকটা শুকিয়ে গেল সে। আসলে অল্প বয়স, তার উপর একপ্রকার বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে বিয়ে করেছে। রজনী অনেক ছোটতে মাকে হারিয়েছে, ভাই হতে গিয়ে মা আর ভাই দুজনেই মারা যায়। তারপর থেকেই সত্মায়ের অত্যাচার। সঞ্জয়কে ভালবেসেই বিয়ে। কিন্তু সঞ্জয়ের বাড়িতে মেয়ের কূলমর্যাদা, নিম্নমানের আর্থিক অবস্থা সংক্রান্ত নানা আপত্তি থাকায় ওরা নিজেরা বিয়ে করে ঊষাদেবীর বাড়িতে উঠেছে। এমন অবস্থায় শঙ্কা, ভীতি খানিক বেশিই থাকে। তার উপর যদি বাড়ির মালকিনের এমন রূপ দেখে, তাহলে অতটুকু মেয়ের আর দোষ কী!
ঊষাদেবীর বাড়িটা বেশ বড়। বাড়ির পিছন জুড়ে আম, কাঁঠাল, লেবু, সুপুরি, পেয়ারা, জবা, টগর, বেলি, কেতকি ছাড়াও লঙ্কা, ঢেঁড়শ, বেগুন, ধনেপাতা এসবের খুচরো চারাও রয়েছে। অভয়বাবু চলে যাওয়ার পর থেকেই ঊষাদেবী একা। তাই নিচতলাটা ভাড়া দেন। কিন্তু কোনও ভাড়াটেই তিনমাসের বেশি টেকে না। তার কারণটা অবশই একপাক্ষিক। পাড়া, রাস্তাঘাট, দোকানবাজার… সকলেই ঊষাদেবীকে খিটখিটে বুড়ি বলেই চেনে। আসলে মানুষের ভাবনাচিন্তা আর বাকযন্ত্রের মধ্যে যে ফিল্টার থাকে তা ঊষাদেবীর নেই বললেই চলে!
ঊষাদেবী শুনছেন নিচে নানারকম খুটখাট, ঠকঠক শব্দ চলছে। টিভির শব্দটা বাড়িয়ে দিলেন বিরক্তিতে। “বাহার কত টিভি লাগানোর, ভাড়া বাড়িতে অত শখ কীসের শুনি!” নিজের মনে গজগজ করতে লাগলেন। ঘড়িতে দেখলেন প্রায় আটটা বাজে, তাড়াতাড়ি রান্নাঘরে দৌড়লেন। আটটা বেজে গেলে আর রাতের খাবার মুখে তোলেন না। রাতে একটা রুটি খান ঠিক এক পোয়া দুধ দিয়ে। বিশাখা বাসন ধোয়া, ঘর পরিষ্কার, সকাল আর রাতের খাবারটা করে দিয়ে যায়। প্রায় পনেরো বছর ধরে কাজ করছে। প্রথম প্রথম কয়েকবার ছেড়ে দেওয়ার উপক্রম হয়েছিল, এখন দুজনই দুজনকে বুঝে গিয়েছে। তাই শত ঝামেলা হলেও ঊষাদেবী জানেন বিশাখা আসবেই আর ওঁরও বিশাখাকে ছাড়া চলবে না।
পরের দিন ভোরে নিচে ফুল তুলতে নামলেন ঊষাদেবী। সকালে স্নান সেরে পুজো দিয়ে তবে কিছু মুখে দেন। বারান্দা দিয়ে যাওয়ার সময় দেখলেন রজনীদের ঘরের জানলাটা খোলা। তেলেবেগুনে জ্বলে উঠলেন--- ইস, বেহায়া মেয়ে কোথাকার! কারও যেন নতুন বিয়ে হয় না!! একছুটে বাগানে নামলেন। আজ আর তাঁর কোনওকিছুতেই তেমন মন বসল না। পুজোতেও না, মন্ত্র পাঠে কতবার যে ভুল হলো কে জানে! শুধু তাঁর ভাড়াটের শয্যাদৃশ্যটা চোখে ভাসতে থাকল। বিশাখা চলে যাওয়ার পর আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বেশ খানিকক্ষণ নিজেকে পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত নিলেন, পঁয়ষট্টিতেও তাঁর যা রূপ আছে তাতে ধারেকাছে পৌঁছয় না রজনী। দেরাজ খুলে বিয়ের সীতাহারখানা বের করে পরলেন। মুগ্ধ চোখে নিজেকে দেখতে দেখতে ডুকরে কেঁদে উঠলেন। এটা বোধহয় ফুলশয্যার দিনই শেষ গলায় দিয়েছিলেন। বিয়ে, স্বামীসোহাগ, আবদার, অভিমান এসব সম্পর্কে সইদের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা শুনে পনেরো বছরে তার যা ধারণা হয়েছিল, ওই একটা দিনই যথেষ্ট ছিল তা খানখান হওয়ার জন্য। না না, অভয়বাবু কোনওভাবেই নিপীড়ন করেননি। শুধু বুঝিয়ে দিয়েছিলেন আর পাঁচটা দামি আসবাবের মতই এ বাড়ির শোভা বাড়াবে সে। কিছুদিন পর তিনি জানতে পারেন আর-একজনের সঙ্গে অভয়বাবুর সম্পর্ক রয়েছে। শুধুমাত্র বাবার নির্দেশেই ঊষাদেবীকে আনা, না হলে ত্যাজ্যপুত্র হতেন।
দরজার কড়ার মৃদু শব্দে ফিরে এলেন অতীত থেকে। ঝটপট হারখানা গুছিয়ে ফেলে নিজেকে ঠিকঠাক করে দরজা খুললেন।
“মাসিমা, একটু এঁচোড় রান্না করেছিলাম, নিরামিষেই কিন্তু...” রজনী ভীত হাতে এঁচোড়ের বাটি ধরে দাঁড়িয়ে থাকল। আজ খুব ভালভাবে রজনীকে দেখলেন তিনি। ওর কালো রূপে মায়াবী একটা চটক আছে। একঢাল চুল, আঁকা দুটো চোখ… চকচকে, প্রাণবন্ত। এমন চেহারার ছবি তিনি দেখেছেন, নিজের অ্যালবামে। তফাত শুধু গায়ের রঙে। নিজেকে বর্তমানে নিয়ে এসে বললেন, “তোমার সাহস তো কম নয়, আমার গাছের কাঁঠাল চুরি করে রান্না করে আমাকেই দিতে এসেছ!” রজনী অনেক কষ্টে তাঁকে বোঝায় বাজার থেকেই এই কাঁঠাল আনা হয়েছে। তবু রজনী রেহাই পায় না।
“চান করে রান্না করেছ?”
“না তো…”
“বেরোও ঘর থেকে, ছি ছি ছি জাত মারলে গা!”
রজনী কাঁদতে কাঁদতে একছুটে নিচে নেমে আসে। এরপর থেকে আর কোনওদিন ঊষাদেবীর ঘরে যায়নি। কিন্তু ঊষাদেবী বহুবার রজনীর ঘরে গিয়েছেন, যখন রজনী স্নানে যায়। অভাবের নতুন সংসারে মাছ খুব একটা হয় না রজনীদের, ওই শাকপাতা, সবজি দিয়েই চলে যায়। রজনী স্নান সেরে এসে দেখে মাছের বাটির ঢাকনা আলগা আর চারটে টুকরোর মধ্যে পড়ে রয়েছে তিনটে। বেড়াল সন্দেহে সেদিন বাটি ধরে সব মাছ ফেলে দিলেও পরে এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে বুদ্ধিমতী রজনী বাটিতে পড়ে থাকা বাকি মাছ পরম তৃপ্তিতে খেয়েছে। প্রথম দু’দিনেই এক পিস মাছ গায়েব হওয়া আর ঝাঁটার ডগায় লম্বা ধবধবে সাদা চুল পাওয়ার বিষয়টা বুঝতে তার বেশি সময় লাগেনি। বরং তারপর থেকে তাদের মাছ এলে রজনীর ফরমায়েশে পাঁচটা টুকরো আসত।
আসলে ঊষাদেবী মাছ খেতে বড় ভালোবাসতেন। স্বামীকে অকালে হারালে আঁশ থেকে চিরকালের জন্য বঞ্চিত হলেন। একে একে শ্বশুর, শাশুড়ি পরলোক গমনের পর যখন একা হয়ে গেলেন তখনও লোকলজ্জায় খেতে পারেননি। আর পারবেনই বা কীভাবে! একবার বিশাখাকে আনতে দিয়েছিলেন, এই মস্ত একটা কাতলা হাতে ঝুলিয়ে বাজার থেকে ফিরে বিশাখা চোখমুখ ঘুরিয়ে বলেছিল, “জানো তো, বড়মা পাশের বাড়ির রমেন কাকু এতবড় মাছ দেখে আমায় জিজ্ঞাসা করছিল.... কী রে বিশাখা মিত্তির বাড়িতে আজ কেউ আসবে নাকি!” ঊষাদেবীর গলা শুকিয়ে এসেছিল লজ্জায়, ভয়ে। হঠাত্ই চিৎকার করে বলে উঠলেন, “যার আসার কথা ছিল, আসবে না জানিয়েছে। তুই মাছ নিয়ে বাড়ি চলে যা, এক্ষুনি যা, আজ আমার জন্য কিচ্ছু রাঁধতে হবে না, আমার নির্জলা উপোস।”
সেদিন একটা দানাও দাঁতে কাটেননি। বিছানায় শুয়ে শুধু বালিশ ভিজিয়েছেন অবোধ বালিকার মতো। এ যন্ত্রণা যে কাউকে বলা যায় না। এ বয়সে এমন লোভ যে পাপ!
আজ সকালে উঠে দেখলেন, বাগানে আইসক্রিমের কয়েকটা প্যাকেট পড়ে। কাল বেশ কিছু লোক এসেছিল ভাড়াটের ঘরে, তা তিনি টের পেয়েছিলেন। এখন প্যাকেট দেখে তাঁর মাথায় আগুন জ্বলে উঠল। ওদের ঘরে ঢুকে রজনীকে টেনে নিয়ে এলেন বাগানে। “তোমরা ফুর্তি করবে, আর নোংরা করবে আমার বাগান! বাবার জায়গা পেয়েছো তুমি! এই মুহূর্তে পরিষ্কার করো।” গ্রীষ্মের কড়া রোদে বাগান পরিষ্কার করে যখন মেয়েটা জ্বরে তিনদিন উঠতে পারেনি, দূর থেকে রজনীর কপালে সঞ্জয়ের জলপট্টি দেওয়া, ওষুধ খাওয়ানো, সযত্নে চুলগুলো টেনে খোঁপা করে দেওয়া দেখে মনে মনে অভিসম্পাত করেছেন, “একবার মরেই দেখ না স্বামীসোহাগী মেয়ে! তিনদিন যাবে না ছোকরা ঘরে বউ তুলবে, এই বলে দিলুম।”
প্রায় বছর খানেক হল রজনীরা টিকে গিয়েছে ভাড়াটে হয়ে, বেশিরভাগটা তার দিক থেকে সমন্বয় করেই। আসলে উঠে যেতে মন মাঝে মাঝে চাইলেও সামর্থ্যের অভাবে তা সম্ভব হয়নি। ঊষাদেবীর বাড়ি ভাড়া ছিল তুলনামূলক বেশ কমই। আসলে অর্থের প্রয়োজনে তিনি তো ভাড়া দেননি কোনকালেই। কিন্তু আজ রাতে শুতে যাওয়ার আগে হঠাত্তীব্র অথচ চাপা কান্নার শব্দ নীচতলা থেকে ভেসে এল। জানলার কাছে কান পাততেই বুঝলেন রজনীর কিছু একটা হয়েছে। গুটিগুটি পায়ে নিচে এলেন তিনি। বন্ধ দরজার ফাঁক গলে যা কিছু শব্দ কানে এলো তাতে তিনি বুঝলেন ডাক্তার নাকি ওদের স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে স্বাভাবিকভাবে রজনী কোনওদিনই মা হতে পারবে না। ঊষাদেবী কোনও শব্দ না করে উপরে উঠে এলেন। ভাবলেন--- খুব আমাকে জিজ্ঞাসা করা না, মাসীমা আপনার কোনও আত্মীয়স্বজন নেই? ভেবেছিলি আমি বুঝিনি! আমি যে নিঃসন্তান সেটাই জানতে চাইছিলি তো! এবার দেখ, কেমন লাগে!
কিন্তু সারাটা রাত বিছানায় এপাশ-ওপাশ করতে থাকলেন। কানে শুধু রজনীর ওই আর্ত কান্নাই ভেসে আসছিল। মনে পড়ে যাচ্ছিল সেদিনের কথা। গভীর রাতে তীব্র যন্ত্রণায় যখন তিনি কলঘরে শোণিতধারায় বীজ-প্রাণের ধ্বংসাবশেষ দেখেছিলেন, সেদিন তাঁর কান দুটো এমন নৈরাশ্যের সুরই শুনেছিল। কী অদ্ভূত, তিনি ছাড়া এ কান্নার শব্দ কেউ শুনতে পায়নি! বন্ধ কলঘরে গলার শিরা ফুলে উঠেছিল, নিজের অক্ষমতা, ব্যর্থতায় একঢাল চুল থেকে মুঠো মুঠো চুল উঠে এসেছিল হাতে। কীইবা করতেন! যেখানে নিজের স্বামীই স্বীকার করতে চাননি যে একরাতে শুধু নেশার ঘোরেই তিনি নিজের স্ত্রীর সান্নিধ্যে এসেছিলেন! সেদিনও কী চূড়ান্ত অপমানিত হয়েছিলেন ঊষাদেবী, ঘনিষ্ঠ মুহূর্তে প্রিয় মানুষটির আবেশজড়ানো কন্ঠে অচেনা নারীর নাম শুনে! কাউকে কিছু বলতেও পারেননি।
পরপর দুটো দিন চলে গেলো, রজনী ছাদে একবারও উঠল না। ঊষাদেবীর মনটা যে কেন জমাট হয়ে আছে কে জানে! আজ বিশাখাকে জিজ্ঞাসা করলেন, কী রে নীচতলার মেয়েটা অমন গুম মেরে গিয়েছে কেন?”
“তুমি জানো না! ওই বৌদির নাকি বাচ্চা হবে না। আই ভি না কী, ওসব করতে হবে। ওর বরের তো অত টাকা নেই, তাই দোকানটা বেচবে বলেছিল। কিন্তু রজনী বৌদি দিব্বি দেছে, দোকান বেচলে ওরা খাবে কী!” একনিঃশ্বাসে উগরে দিচ্ছিল বিশাখা, কিন্তু ঊষাদেবী হঠাত্রণমূর্তি ধারণ করে বললেন, “চুপ কর!” বিশাখা আড়ালে মুখ ভেংচে সরে গেল ----- ইসস, বুড়ির দরদ যেন উথলে পড়ছে! “ওদের দুটোর জীবনে তোমার চোখের কালো নজর পড়েছে তা আমি হলফ করে বললাম....” যাওয়ার আগে অস্ফুটে বলে গেল বিশাখা।
দুপুর গড়াতেই পত্রিকাগুলো নিয়ে বসলেন ঊষাদেবী। স্বাস্থ্যবিষয়ক একাধিক পত্রিকা তাঁর ড্রয়ারে রয়েছে। বিশাখা ওই আই ভি না কী বলল, ওটা তিনি ওখানেই একবার দেখেছিলেন। তন্নতন্ন করে খুঁজতে থাকলেন। শেষমেষ দুপুর গড়িয়ে বিকেলের রামধনুর নরম আলোয় খুঁজে পেলেন। সারাটা রাত বিস্তারিতভাবে পড়ে বোঝার চেষ্টা করলেন।
পরের দিন সকাল সকাল নিচে নেমে এলেন। দরজায় কড়া নাড়তেই সঞ্জয় বেরিয়ে এল। দেখলেন রজনী ঘুমোচ্ছে। ঢলঢলে চোখদুটোর নীচে কালশিটে পড়ে গেছে। ইসস, ঘুমোলে মেয়েটার মুখটা যেন আরও মায়ায় ভরে যায়!
রজনী তার উপস্থিতি টের পেয়ে ঝটপট বিছানায় উঠে বসে ভয়ে কুঁকড়ে গেল। ঊষাদেবী তার মাথায় স্নেহের হাতখানা রেখে বললেন, “চলো তোমার ডাক্তারের কাছে যাই দুজনে, দেখি উনি কী বলছেন!”
রজনী কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল। তিনি থামিয়ে দিয়ে বললেন, “সঞ্জয়, দোকানটা ভালভাবে চালাও তুমি। এই মেয়ের চিকিৎসার সব ভার আজ থেকে আমার।”
বছরখানেকের মধ্যে সফলভাবে আই ভি এফ পদ্ধতিতেই রজনী এখন চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা। ওর ফ্যালোপিয়ান টিউবে কিছু ব্লকেজ ছিল। তার খুব শখ, মেয়ের মা হবে। আর নাম রাখবে উষসী।
No comments:
Post a Comment