ভ্যালেন্টাইন বিদেশী সংস্কৃতি?
ভ্যালেন্টাইন বিদেশী সংস্কৃতি, আর ফেসবুক-ইউটিউব খুব দেশী সংস্কৃতি? নাকি? ধর্মচোখা আর ধার্মিক এক জিনিস নয়। ধার্মিক কৃষক কি ভ্যালেন্টাইন নিয়ে চিন্তিত? ধার্মিক গার্মেন্টসকর্মী কি মাতামাতি করে কোনটা দেশী সংস্কৃতি আর কোনটা বিদেশী সংস্কৃতি, তা নিয়ে? করে না। ধর্মচোখাদের কাজই হলো পরের ঘরে খেয়ে দিনরাত ধর্মীয় হাঙ্গামা করা। পশ্চিমের সমস্ত সুবিধা ভোগ করে পশ্চিমা সংস্কৃতির নিন্দা করা।
আধুনিক বাংলার সবই বিদেশী সংস্কৃতি। মাইক বিদেশী সংস্কৃতি, মসজিদের টাইলস বিদেশী সংস্কৃতি। এয়ার কন্ডিশন, ল্যাপটপ, ক্যামেরা, মোবাইল, সবই বিদেশী সংস্কৃতি। যে-মৌলোভী ও উপদেষ্টা (নাকি অপদেষ্টা?) ভ্যালেন্টাইনকে বিদেশী সংস্কৃতি বলছে, সে দাঁত মেজেছে বিদেশী সংস্কৃতির টুথপেস্ট দিয়ে। মৌলোভীর স্ত্রী-কন্য কি মাসিকের সময় ছেঁড়া কাপড়ের পট্টি পরে? তা তো নয়। তারা স্যানিটারি প্যাড পরছে। প্যাড কি দেশী সংস্কৃতি? জ্বর হলে প্যারাসিটামল, ডায়রিয়ায় অ্যান্টিবায়োটিক, এগুলো কি দেশী সংস্কৃতি? দেশী সংস্কৃতি তো ঝাড়ফুঁক, পাতা বাটা, আদা বাটা, গাছের ছালের বড়ন। মৌলোভি বা অপদেষ্টা কি অসুখ-বিসুখে দেশী সংস্কৃতি পালন করে? করে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ও তো বিদেশী সংস্কৃতি। নামাজ, ঈদ, মাদ্রাসা, এগুলোও বিদেশ থেকে এসেছে। ছাপা অক্ষরে কোরান, এটা কি দেশী সংস্কৃতি? সুতরাং যারা বিদেশী সংস্কৃতি বলে ভ্যালেন্টাইনের বিরোধিতা করছে, তারা সুস্পষ্ট ভণ্ডলোক। কুৎসিত ও অসৎ। নিষ্প্রাণ নীরস জীবরা চায় অন্যরাও প্রাণহীন জীবনযাপন বেছে নিক। যেহেতু তার জীবনে কোনো আনন্দ নেই, হৃদয়ে প্রাণরস শূন্য, সেহেতু তার চাওয়া, পৃথিবীর সব মানুষই নিরানন্দ দুখী জীবন যাপন করুক। আনন্দের সাথে বেঁচেও যে ধর্ম পালন সম্ভব, তা ভণ্ডরা স্বীকার করতে চায় না। কারণ আনন্দমুখর সমাজে ধর্মপালন সম্ভব হলেও ধর্মব্যবসা সম্ভব হয় না।”
.
—মহিউদ্দিন মোহাম্মদ
No comments:
Post a Comment