Friday, March 14, 2025

 

লেভাইট কুরাইশ

                                                                                                                         Anushirvan Khosrow 


জুহাইর ইবন আবি সুলমার কবিতা অনুসারে, লেভাইট কুরাইশরা ৪৮০ সাল নাগাদ মক্কার মরূদ্যানের দিকে পালিয়ে গিয়েছিল। সম্ভবত ৪৫৫ সালের পর আফ্রিকায় আরিয়ান ভ্যান্ডালদের বিজয়ের দরুণ তাদের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল। এই কারণে তারা ৪৬০ থেকে ৪৮০ সাল পর্যন্ত প্রায় বিশ বছরের জন্য জেরুজালেমে ফিরে গিয়েছিল, ফলে মাঝের ২০ বছর তারা মক্কায় অনুপস্থিত ছিল। এর অর্থ হলো, তারা এই সময়কালের আগেও মক্কায় অবস্থান করছিল। যেহেতু তাবেরনাকল একটি অস্থায়ী কাঠামো ছিল, তাই এটি যুক্তিসঙ্গত যে লেভাইট কুরাইশরা কয়েক বছর আগেই ইয়েমেন ত্যাগ করেছিল, যাতে তারা জেরুজালেমে ফিরে যাওয়ার সুযোগের জন্য অপেক্ষা করতে পারে।

ইসরায়েল থেকে তাড়া খেয়ে লেভাইট কুরাইশরা জর্ডান নদীর পাশ দিয়ে দক্ষিণে নেমে এসেছিল—ফেলে রেখে গিয়েছিল তাদের শত্রুদের, কিন্তু একইসঙ্গে তাদের ইহুদি বন্ধুদেরও। লেভাইট কুরাইশরা তাদের পুরনো আবাসস্থল ধ্বংসপ্রাপ্ত অবস্থায় পেয়েছিলো, তবে মানুষের তৈরি জমজম কূপ তখনো অক্ষত ছিল। এটি কাবা স্থাপনের জায়গা হিসেবে এবং লেভাইট কুরাইশ পুরোহিতদের জন্য একটি জলের উৎস হিসেবে কাজ করেছিল। এভাবেই তারা এই ভূমিকে এক ক্ষুদ্র স্বর্গে পরিণত করেছিল।
যখন কাবা ভেঙে ফেলা হয়েছিল, তখনো তার কালো পাথর অক্ষত ছিল। কবিতায় এই স্থানকে ঈশ্বরের “তাবেরনাকল” হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, যা ‘তোরাহ’-এর ‘বুক অব এক্সোডাস’ এ দেওয়া নির্দেশ অনুসারে নির্মিত হয়েছিল। তাবেরনাকল ছিল ঈশ্বরের জন্য একটি অস্থায়ী মন্দির স্থাপনা। এটি ছিল জেরুজালেমের পবিত্র মন্দিরের একটি সাময়িক বিকল্প, যতদিন না লেভাইট কুরাইশরা প্রতিশ্রুত ভূমিতে ফিরে গিয়ে ঈশ্বরের গৃহ পুনর্নির্মাণ করতে পারে। তাবেরনাকল পূর্বেও বিদ্যমান ছিল এবং লেভাইট কুরাইশরা এটিকে হজযাত্রার জন্য ব্যবহার করত—যা ছিল ‘এক্সোডাস’ এর পুনঃঅভিনয়। কারণ বাইজান্টাইন সাম্রাজ্যের শাসনাধীন জেরুজালেমে তারা আর এই আনুষ্ঠানিকতা পালনের অনুমতি পায়নি।
মক্কায় লেভাইট কুরাইশদের ফিরে আসার আগে কোনো কাবা ছিল না। এর পরিবর্তে, সেখানে ছিল তাবেরনাকল, যা একটি পর্দায় আবৃত ছিল এবং এই পর্দা ইয়েমেন থেকে আনা হয়েছিল। প্রাচীন ঐতিহ্য বলে যে এই পর্দাটি প্রথমে নাজরান শহরে প্রস্তুত করা হয়েছিল, যেখানে একটি সমৃদ্ধ বস্ত্রশিল্পের কেন্দ্র বিদ্যমান ছিল।
"সেই রীতি থেকেই আমাদের প্রচলিত অভ্যাসের উৎপত্তি, যেখানে মন্দির নির্মাণের পর প্রবেশদ্বারগুলোর উপর সূক্ষ্ম মসলিনের পর্দা টানা হয়। কিন্তু অন্য দশটি পর্দা […] সোনার সুতা দ্বারা সুক্ষভাবে সেলাই করা হতো, যাতে এক পর্দার সাথে অপরটি এত নিখুঁতভাবে মিশে যায় ও একটি অবিচ্ছিন্ন পর্দার মতো দেখায়। এই পর্দাগুলো মন্দিরের উপর বিছিয়ে রাখা হয়েছিল এবং মন্দিরের ছাদ ও দেয়ালের অংশগুলো, সামনে এবং পেছনের অংশ ঢেকে রাখত […]."
এ বর্ণনা পড়ে কেউ বর্তমান সময়ে মক্কার কাবায় ব্যবহৃত পর্দার বিবরণ মনে করতে পারেন, তবে এটি প্রথম শতাব্দীর ইতিহাসবিদ যোসেফাসের লেখা, যেখানে তিনি ব্যাখ্যা করেছেন কেন জেরুজালেমের পবিত্র মন্দির একটি পর্দার আড়ালে লুকানো থাকতো। এটি ছিল অস্থায়ী ও ভ্রাম্যমাণ তাবেরনাকলের বিপরীতে স্থির তাবেরনাকলের বিবরণ, যা একটি প্রাচীন আরব কবিতায় উল্লেখ করা হয়েছে। যখন তাবেরনাকল স্থায়ী হয়ে যায়, এটি কাবায় রূপান্তরিত হয়— যেখানে শেচিনাহ (যা কোরআন অনুযায়ী ঈশ্বরের আত্মা) অবস্থান নেয় এবং এটি এক উপাসনার স্থান হয়ে ওঠে। শেচিনাহ ঈশ্বরের অবস্থানকে আর্ক অফ দ্যা কভোনেন্ট/প্রতিজ্ঞাপত্রের সিন্দুক, তোরাহের দশটি আদেশএবং অবশ্যই জেরুজালেমের মন্দিরের সাথে সংযুক্ত করে, যা ইহুদি ধর্মে ঈশ্বরের একমাত্র বিশ্রামের স্থান।
কবিতায় বলা হয়েছে, তাবেরনাকলের কালো পাথরগুলো তাঁবুর কাঠামোর ভিত্তিপ্রস্তর ছিল। এর মধ্যে একটি কোণার পাথর পরে "কালো পাথর" হিসেবে পরিচিত হয়, যা বিশ্বাসীরা স্পর্শ ও চুম্বন করে এবং এটি ইহুদি ঐতিহ্যের খোদাই চিহ্ন বহন করে।
Source:
*The Poem of Zuhair, F. Horne, ed., The Sacred Books and Early Literature of the East (New York: Parke, Austin, & Lipscomb, 1917) Vol. V: Ancient Arabia
*Koran 36: 34: And a sign for them is the dead land, that We quickened and brought forth from it grain, whereof they eat; and We made therein gardens of palms and vines, and therein We caused fountains to gush forth, that they might eat of its fruits and their hands’ labor.
*Tabernacle (তাবেরনাকল) হল ইহুদিদের প্রাচীন ভ্রাম্যমাণ উপাসনাগৃহ, যা মিশকান (Mishkan, מִשְׁכָּן) নামেও পরিচিত। এটি ছিল মোশির (মূসার) সময়ের পবিত্র তাঁবু, যেখানে ইহুদিরা ঈশ্বরের উপস্থিতি অনুভব করত এবং বলিদানসহ ধর্মীয় কার্যকলাপ পরিচালনা করত।
*Najran is said to having been the first place in the Arab Peninsula where Christianity arrived.
Flavius Josephus, The Antiquities of the Jews ca. 90 AD, III: 6.4, translated by William Whiston
*Koran 48: 4.
*Koran 2: 248: The sign of his kingdom is that there shall come to you At-Tabut [the lost Ark of the Covenant], wherein is Sakinah from your Lord and a remnant of that which Moses and Aaron left behind [the stone tablets with the Ten Commandments], carried by the angels.
All reactions:
6
2 comments
Like
Comment
Send
Share

No comments:

Post a Comment