ঈদের জামাতের পর ঢাকায় দেখলাম সরকারি উদ্যোগে মিছিল বের হইছে। সেখানে মুঘল আর সুলতানি আমলের ঈদকে ফিরাইয়া নিয়া আসার উদ্যোগ নেয়া হইছে।
এইটা বেশ ভাল হইছে। আমাদের ঈদ খুব পানসে। শুধু ঈদ না, আমাদের উৎসবও খুব পানসে। পেট ভাসাইয়া প্রচুর খাওয়া দাওয়া আর ঘুম ছাড়া আর কিছু নাই। ছেলেরা তাও বন্ধু বান্ধবের লগে এদিকসেদিক ঘোরাঘুরি করতে পারে, মেয়েরা তাও পারেনা। রান্নাঘরের চাপে দিশাহারা অবস্থা! সারা বছরতো রান্নাঘরে থাকা লাগেই, ঈদ আসলে আরেকটু বেশি থাকা লাগে। এই হল তফাৎ!
ঢাকার মিছিলের ছবি খুব ইন্টারেস্টিং লাগলো। মিছিলকারীরা সেইখানে আগেকার দিনের রাজা বাদশাহদের বিশাল বিশাল ছবি নিয়ে হাজির হইছে। এর সাথে হাতিঘোড়া, পশু-পাখিতো ছিলই। আমার পছন্দ হইছে!
এর মধ্যে আমার আইএ পড়া ভাতিজা গাইবান্ধা থেকে ফোন দিয়া কয়, ”চাচ্চু, তাইলে পয়েলা বৈশাখ কি দোষ করলো? ওইখানেতো তবু মাইনষের ছবিটবি থাকেনা, এইটাতো আরো কয়েক ডিগ্রী সরেস!” আমি মুচকি হেসে ভাতিজার দিকে তাকাইয়া আছি। ও কয়, ”আসল ঘটনা আর কিচ্ছু না, যত সমস্যা ওই ”মঙ্গল” নিয়া। মঙ্গল হইলো হিন্দু!” ওর মগজের প্রশংসা না করে পারলাম না। সাবাশ ভাতিজা...
এর মধ্যে আসল ক্যাচাল লাগছে নাসিরুদ্দীন হোজ্জারে নিয়া। বেচারা হোজ্জা কবে মইরা ভূত হইছে; কিন্তু ফারুকী এন্ড গং তার মূর্তি নিয়া হাজির হইছে মিছিলে। কিন্তু ক্যাচালটা লাগছে এই নিয়া যে, এই নব্য হোজ্জার আবার গোঁফ নাই। অরিজিনাল হোজ্জার কিন্তু ব্যাপক তা দেওয়া প্যাঁচানো মোছ আছিল। প্রমাণ হিসাবে তার ছবি দিলাম, দেখেন।
এদিকে নব্য হোজ্জার দিকে ভাল করে তাকালে তারে দেখতে বিশিষ্ট চুম্মা বিশারদের মত লাগে। খচ্চরের উপর বসাইয়া দেওয়ার কারণে কেউ তারে ”আমিরে খচ্চর” বলে ডাকলেও দোষ দেয়া যাবে না। চুম্মা দাদুরও আবার মোছ নাই। আবার দাঁড়ি কামিয়ে আবার তার দিকে তাকাইলে মনে হয় ক্ষুদ্র ঋণে নোবেল পাওয়া ইউসুফ সরকার। এই হলো শিল্পের শক্তি। একই ছবির দিকে তাকালে একবার ড. আবার ডা. বলে ভ্রম হয়! অথচ শিল্পীকে জিজ্ঞেস করেন, উনি বলবে এতো হোজ্জা!!!
বাঙালি আসলে বুঝতে পারতেছে না, সে আসলে মুসলমান হইবো নাকি বাঙালি হইবো। আরেকদল এই দুইটার ফিউশন হইতে চায়। কিন্তু এরা আবার সব হইতে রাজি আছে, তবে সেটা ৪৭ পর্যন্ত হওয়া লাগবে! ৪৭ থেকে টুপ করে ২৪ এ চলে আসতে হবে, মাঝখানে আর কিচ্ছু নাই। খবরদার, একাত্তরের নাম মুখেও আনা যাবে না...
কি এক ক্যাচালে যে আছি!! তবুও এই ক্যাচাইল্লা জাতিরে ঈদ মুবারক। সবার উপরে ক্যাচাল সইত্য, তাহার উপরে খানা। মিস ইউ বাংলাদেশ...ঈদের দিনেও এসব ক্যাচাল উপহার দেওয়ার জন্য ”আই লাভ ইউ!”
লেখক ; রাজু
No comments:
Post a Comment