Thursday, March 27, 2025

ইহুদি, খ্রিস্টান ও ইসলাম ধর্মে পুনরুত্থানের ধারণা ধীরে ধীরে বিকশিত হয়েছে।

 

Anushirvan Khosrow


সেমিটিক ধর্মে (ইহুদি, খ্রিস্টান ও ইসলাম) পুনরুত্থানের ধারণা ধীরে ধীরে বিকশিত হয়েছে। এর শিকড় মূলত মেসোপটেমীয়, পারসীয় (জরথুষ্ট্রীয়) এবং সেখান থেকে হিব্রু ঐতিহ্যে ঢুকেছে। প্রাচীন ইহুদি বিশ্বাসে পুনরুত্থান খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল না; বরং এটি পারসিক প্রভাবের ফলে বিকশিত হয়েছে। ইসলাম ধর্মে আব্বাসী খেলাফতের সাথে সাথে, অন্যান্য অনেক কিছুর সঙ্গে পুনরুত্থান ইসলামে যোগ হয়েছে। এর বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যাবে যখন আব্বাসীরা উমায়েদ রাজবংশের জীবিত সদস্যদের ক্রুসবিদ্ধ করার পাশাপাশি মৃত সদস্যদের দেহাবশেষ তুলে ক্রুসবিদ্ধ করে রাখে। এই ক্রুসিফাই করার ঘটনা ইসলামের প্রাথমিক যুগে এত ঘটেছে যে সেটা আইন করে বন্ধ করা হয়। মোটা দাগে আপনার দেহ ইসলামিক রীতিতে, যা আসলে জরথুষ্ট্রীয়বাদ থেকে পাওয়া, কবর না দিলে শেষ বিচারে আপনার দেহ পুনরুত্থান হবে না, এবং আপনার বেহেশত বা স্বর্গে প্রবেশ ঘটবে না। তাহলে সনজীদা খাতুন বা অন্যান্যরা যারা ধর্মে বিশ্বাস করে না, মুসলমানরা কেন তাদের সৎকারের রীতি নিয়ে চিন্তায় থাকে? আসলে মৃতদেহ তো নিজে, নিজের সৎকার করতে পারে না, এটা সমাজের দ্বায়িত্ব মৃতদেহের কোন গতি করা। এ কারণে আমাদের সমাজে ধর্ম নিরেপক্ষ কোন সৎকারের ব্যবস্থা গড়ে তোলা দরকার, শুধুমাত্র এইসব মুসলমান ফ্যানাটিকদের মুখ বন্ধ করার জন্য! জানাজা না পড়ানোর হুমকি ধামকি উপেক্ষা করার সময় হয়েছে। মানুষের মৃত্যুকে ঘিরে এমন নোংরা আস্ফালন আর কোথাও হয় কিনা, জানিনা।

হিব্রু বাইবেলের (旧约圣经) প্রথম দিককার গ্রন্থগুলোতে ব্যক্তিগত পুনরুত্থানের কোনো সুস্পষ্ট উল্লেখ নেই। যেমন, তোরাহ বা পেন্টাটিউকে (যেমন: আদি, নির্গমন, লেবীয়, গণনা ও দ্বিতীয় বিবরণ) মৃত্যু-পরবর্তী জীবনের উল্লেখ প্রায় অনুপস্থিত। মৃতদের অবস্থান সাধারণত শিওল (שְׁאוֹל) নামে পরিচিত, যা এক ধরণের ছায়াময়, নীরব অবস্থান—নরকের ধারণার কাছাকাছি, তবে শাস্তি বা পুরষ্কারের স্পষ্ট ধারণা নেই।
পারসিক জরথুষ্ট্রীয় ধর্মের শেষ বিচার (Final Judgment) ও পুনরুত্থান (Resurrection) ধারণা ইহুদিদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়, বিশেষ করে ব্যাবিলনীয় নির্বাসনের (Babylonian Exile, ৬ষ্ঠ শতাব্দী BCE) পর।
দানিয়েলের বই (২য় শতাব্দী BCE) ইহুদি ধর্মে প্রথম স্পষ্ট ব্যক্তিগত পুনরুত্থানের কথা বলে:
"মৃতদের মধ্যে অনেকে পুনরুত্থিত হবে, কেউ চিরস্থায়ী জীবন লাভ করবে, আর কেউ অপমানিত ও শাস্তিপ্রাপ্ত হবে।" (দানিয়েল ১২:২)
ফারিসিদের মতে, মশীহ আসার পর ন্যায়পরায়ণরা পুনরুত্থিত হবে, কিন্তু সদুকিরা (Sadducees) পুনরুত্থানে বিশ্বাস করত না।
নিচের চার্ট থেকে বুঝতে পারা যায়, কিভাবে পারসিয়ান প্রভাবে ইসলামে পুনরুত্থান আর পরকাল ঢুকে পড়েঃ
May be an image of text that says 'বিষয় ইহদি ধর্ম পুনরুখানের ধারণা খ্রিস্টান ধর্ম ইসলাম দানিয়েলের বইয়ের পরে স্পষ্ট হয়, পারসিক প্রভাব আছে যীশুর পুনরূখান কেন্দ্রীয় বিশ্বাস কিয়ামাহ ও শেষ বিচার সংযুক্ত পুনরুখানের ধরন মশীহ আসলে ন্যায়পরায়নরা পুনরুখিত হবে যীশু প্রথম পুনরুখিত, বাকিরা দ্বিতীয় আগমনের পর সব মানুষ পুনরুখি্ত হবে দেহওআত্মা দেহ ও আত্মা মতভেদ আছে নতুন গৌরবময় দেহ জান্নাত- জান্নাত-জাহান্নাম একই দেহ পুনরুখ্খিত হবে পরকালীন জীবন অস্পষ্ট স্বর্গে যাওয়া নিশ্চিত করা হয় জান্নাত ও জাহান্নাম সুস্পষ্ট'
All reactions:
7

No comments:

Post a Comment