Monday, April 28, 2025

Sharbat-E-Mohabbat ( Drink's of love)

 


Ingredients-

 A few pieces of watermelon, 

Rooh Afza/Rose syrup,

 powdered sugar,

 cold milk, ice cubes, 

cardamom powder,

 rose petals

Method -

1.Pour two cups of cold milk in a large bowl. Add two tablespoons of powdered sugar and Rooh Afza and a little cardamom powder to it and mix well. 

2. Then add 6-7 watermelon pieces to that mixture and mix well again. 

3. Then pour the mixture into a glass, add ice cubes and rose petals on top and serve cold.

জাপানের পান্তা ভাত

 


আমাদের যেমন পান্তা ভাত আছে তেমন জাপানিজ দের ও পান্তা ভাত আছে। জাপানিজ দের পান্তা ভাত কে ব লে Ochajuke (おちゃじゅけ, お茶漬け)

ওচাজুকে এমন একটি খাবার যা প্রধানত  গ্রিন টি বা বার্লি চা ,  ভাতে দিয়ে খাওয়া হয়।
সাধারণত, গরম তরল (গরম চা বা স্টক) চাজুকের জন্য ব্যবহার করা হয়, তবে  গ্রীষ্মের মাঝামাঝি সময়ে ঠাণ্ডা গ্রিন টি বা বার্লি চা ব্যবহার করে । 

জাপানে , প্রাচীনকাল থেকেই  ভাত এর  ওপর গরম পানি ঢেলে বা ঠাণ্ডা পানি দিয়ে  ভাত খাওয়া হয়ে আসছে, এটি কখন খাওয়া শুরু হয়েছিল তা জানা যায়নি।





Pound cake made with pancake mix

 

Ingredients (for one 8cm x 20cm x 7cm pound cake mold)

150g pancake mix

100g butter

2 eggs (at room temperature)

70g cane sugar (sugar)

6g vanilla bean paste


Directions

① Line a pound cake mold with baking paper. Start preheating the oven to 170℃.


② Put butter in a bowl and heat in a 600w microwave for 1 minute to melt it, then add cane sugar and mix. Crack the eggs and mix until smooth, add vanilla bean paste and mix further.


③ Add the pancake mix and mix until it is no longer powdery.


④ Pour ③ into the pound cake mold ①, drop it from a high position 3-4 times to smooth the batter, make a depression in the center, and bake in a preheated oven for about 30 minutes.


5. Once cooked, place on a cooler to cool, cut into bite-sized pieces, and it's done!

Preserved Flower art

 




Preserved flowers are fresh flowers that are processed with special techniques to maintain their freshness and softness while retaining their beauty for a long time. They retain the natural texture of fresh flowers and do not require watering or other care. They are chosen by many people as a gift that does not burden the recipient.

Three charms of preserved flowers
Long-lasting beauty
Remains beautiful for an average of 3 to 5 years without fading

Easy to care for
No watering required
Just avoid direct sunlight











Sunday, April 27, 2025

ইসলামের বিপথগামীতা -৩: “বাইরে ধার্মিক কিন্তু ভিতরে অশুচি” ইহুদি ধর্মে সঙ্কট ও যিশুর জন্ম লেখ ক সিরাজুল হোসেন

 


গত পর্বে আমরা দেখেছি কিভাবে প্রায় সাড়ে তিন হাজার বছর আগে মধ্যপ্রাচ্যের সিরিয়া-লেভেন্ট অঞ্চলে নানা জাতি ও ছোট ছোট ধর্ম বিশ্বাসের বিভিন্ন ধারণা সহযোগে ইহুদি ধর্মের প্রাথমিক ধারণাগুলো তৈরি হল যেটা শুধুই একেশ্বরবাদী ছিল না। এর পর প্রায় হাজার বছরের নানা সংঘাত, রাজনৈতিক চাপ ও যুদ্ধ বিগ্রহের পর রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় একেশ্বরবাদী ইহুদি ধর্মের প্রতিষ্ঠা শক্ত ভিত্তি পেল যেটা আব্রাহামিক ঐতিহ্য ও ধর্মতত্ত্বের একটি প্রবাহ হিসাবে খ্রিস্ট এবং ইসলাম ধর্মের ভিত্তি হিসাব প্রতিষ্ঠিত হয়।
এই পর্বে আমরা দেখব প্রায় দুই হাজার বছর আগে জুডিয়ার বেথলেহেমে যিশু খ্রিস্টের জন্মগ্রহণের সময় সেখানকার ধর্ম, রাজনীতি ও সমাজের কি এমন পরিস্থিতি ছিল যেখানে ইহুদি ধর্মের একটি সংস্কার জরুরী হয়ে পড়ে ছিল। একটা কথা স্মরণ রাখতে হবে যে যিশু খ্রিস্ট একটি ইহুদি পরিবারে বেড়ে উঠেছিলেন এবং তিনি কোন ধর্মীয় পুস্তক রচনা করে যান নাই। ইহুদি ধর্মের পবিত্র গ্রন্থ তোরাহ, যেটা হিব্রু বাইবেল নামে পরিচিত, তার ভেতরে যে পাঁচটি বই, যেগুলো হল জেনেসিস, এক্সোডাস, লেভিটিকাস, নাম্বার্স, ডিউটেরোনমি, সেগুলোই ছিল যিশু খ্রিস্টের ধর্মগ্রস্থ। নতুন কোন ধর্ম নয়, যিশু খ্রিস্ট ইহুদি ধর্মের যে কঠোর, হৃদয়হীন ও আক্ষরিক প্রয়োগ সেই সময়ে শুরু হয়েছিল, তিনি তার পরিবর্তন চেয়েছিলেন। ধর্মের লক্ষ্য তোরাহর আক্ষরিক প্রয়োগ নয় যা ঔ সময় একশ্রেনীর ধর্মপ্রচারক ফরিশীদের (Pharisees) মৌখিক তালমুদ ও তোরাহর অপব্যাখ্যা প্রয়োগ করে মানুষ নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করত। যা বর্তমানের একশ্রেণীর ইসলাম প্রচারকদের ভুয়া হাদিস ও কোরানের অপব্যাখ্যা প্রচারের মত ছিল। ধর্মের লক্ষ্য তোরাহর আক্ষরিক প্রয়োগ নয়, ঈশ্বরই যে লক্ষ্য এবং ঈশ্বর যে অনিরাপত্তায় ভোগা একজন ক্ষুব্ধ শাসক নন, তিনি প্রেম ও দয়ার পিতা, সেটাই তিনি প্রচার করতে চেয়েছিলেন।
..........
.......
দুই হাজার বছর আগে খ্রিস্টের জন্মের সময় ইহুদি ধর্মে ধর্মপ্রচারক ফরিসীদের কঠোর আচার-নিষ্ঠা ও ধর্মীয় প্রদর্শনবাদীতা যে সমস্যা তৈরি করেছিল যা ধর্মকে অমানবিক ও সমাজবিচ্ছিন্ন করে সমাজে একটি বিপর্যয় তৈরি করেছিল। ধর্মকে ব্যবহার করে তারা ধর্মীয় প্রদর্শনবাদীতা ও দলবাজীর ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিল। ধর্মপ্রচারক সদ্দুকীরা একটি ধর্মীয় এলিটতন্ত্র তৈরি করেছিল এবং সেগুলোকে ব্যবহার করে ধর্মপ্রচারক জেলটরা সশস্ত্র বিদ্রোহের জন্য তৈরি ছিল। বর্তমানের ইসলাম ধর্ম যেন সেই একই পরিস্থিতিতে নিমজ্জিত। নকল ও মনগড়া হাদিস এবং কোরানের বানীর উদ্দেশ্যমূলক ব্যবহার করে ধর্মীয় প্রদর্শনবাদীরা ধর্মকে কঠোর আচার-নিষ্ঠা ও শত্রু তৈরির হাতিয়ার করে ফেলেছে। যে দেখতে তাদের মত নয় সেই যেন ইসলাম বিরোধী, যারা ভিন্ন ধর্মের, তাদের যেন কোন সম্মান ও অধিকার নেই – ধর্মকে ব্যবহার করে ও অপব্যাখ্যা করে এই নাফরমানি ও ইশ্বরবিরোধীতা তারা প্রচার করে চলেছে। এবং আশ্চর্য যে রাষ্ট্রের সামরিক বেসামরিক বিভিন্ন অংশ, এই মিথ্যা এবং পাপকর্মের এজেন্ট হয়ে রাষ্ট্রীয় সহাযোগীতায় জনগনের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে চলেছে। এরা সকলে শয়তানের দোসর এবং এটা চলতে থাকলে এই দেশের পতন কেউ রোধ করতে পারবে না।

এক ভাই দেশে গিয়ে ছিল



এক ভাই দেশে গিয়েছিলেন  ঈদ করার জন্য। দেশ থেকে   আমাদের সবার জন্য এই গুলি এনেছেন । 

আমাদের ভাগে পরেছে আটটা  রসগোল্লা , দুইটা কাগজী লেবূ আর একটি আম। 

মানে স হজ কথা,

বাংলাদেশ কমিউনিটির জনসংখ্যা বাড়ে আর আমাদের ভাগে কম আসে ।

জাপানে এখন রসগোল্লা বানিয়ে বিক্রি করে দেশিরা  আর আমরা গৃহিনীরা  ও বাসায় বানায় কিন্তু দেশ থেকে আসা  রসগোল্লার  সেই স্বাদ । 

অনেক কসরত করে ও আমাদের রসগোল্লার  সেই স্বাদ হয় না । 

তাই  তো ব ল তে মন চায়,

দেশের  রসের গোলক, এত রস কেন তুমি ধরেছিলে হায়।

এই কয়টা রসগোল্লায় আমাদের কি পোষায়?





ইসলামের বিপথগামীতা -২: ইহুদি ফরিসী সম্প্রাদয় ও ভুয়া ধর্মপ্রচারের সংস্কৃতি লেখক= সিরাজুল ইসলাম

 

ইহুদি, খ্রিস্টান, এবং ইসলাম ধর্ম আব্রাহামিক ঐতিহ্য ও ধর্মতত্ত্বের একটি প্রবাহ। কাঠামোগত দিক থেকে তিনটি ধর্মই এক, একই ঈশ্বর, হুবহু একই সৃষ্টিতত্ত্ব ও বিশ্বদর্শন এবং একই ইহকাল পরকালের ধারণা নিয়ে গঠিত। এই তিনটি ধর্মই আব্রাহামিক ঐতিহ্যের অংশ হলেও তাদের ধর্মতত্ত্বে সামান্য বিরোধ রয়েছে। ইহুদি ধর্ম কঠোর একেশ্বরবাদ, ঈশ্বরের আইন পালন, এবং ইসরাইলি জাতীয় চুক্তির উপর জোর দেয়, যা খ্রিস্টান ত্রিত্ববাদ, যিশুর পরিত্রাণ এবং ইসলামের তাওহিদ ও মুহাম্মদের নবুওতের সাথে বিরোধী। খ্রিস্টান ত্রিত্ববাদ হল ঈশ্বর একজন, কিন্তু তিনি তিনটি ভিন্ন সত্তা হিসেবে প্রকাশিত – যা পিতা হিসাবে ঈশ্বর, পুত্র হিসাবে যিশু, ও পবিত্র আত্মা হিসাবে সাধারণ মানুষের মধ্যে বাস করে। খ্রিস্টান ধর্মের ত্রিত্ববাদ এবং মূল পাপের ধারণা (অরিজিনাল সিন) উভয় ধর্মের সাথে সবচেয়ে বড় বিরোধ সৃষ্টি করে। ইসলাম ইহুদি ধর্মের সাথে একেশ্বরবাদ ও স্বাধীন ইচ্ছার ক্ষেত্রে মিলে কিন্তু ধর্মগ্রন্থ ও নবুওত নিয়ে দ্বিমত পোষণ করে। যেমন তিনটি ধর্মের কোন ধর্মই তার পরের নবী বা ধর্মগ্রন্থকে মানে না। তিনটি ধর্মই নৈতিক জীবন ও ন্যায়বিচারের উপর জোর দেয়। তাদের মধ্যে এই বিরোধগুলো ধর্মের দার্শনিক কাঠামোগত নয়, বরং মূলনীতি লঙ্ঘন সংক্রান্ত বা প্রফেনিক ।

ইহুদি ধর্মের গঠন প্রায় ২০০০–১২০০ খ্রিস্টপূর্ব সময়ে ঘটে, যখন আব্রাহামিক ঐতিহ্য থেকে শুরু করে নবী মুসার নেতৃত্বে একেশ্বরবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়। এই সময়ে ইসরাইল-সিরিয়া অঞ্চলে কানানীয়, মেসোপটেমিয়, এবং মিশরীয় ধর্মের প্রভাব ছিল। কানানীয় দেবতা এল, বাল, এবং আশেরা ইহুদি ধর্মের প্রাথমিক রূপে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে, যদিও ইহুদিরা এই ধারণাগুলোকে পুনর্নির্মাণ করে ইয়াহওয়ে-কেন্দ্রিক একেশ্বরবাদ গড়ে তোলে। মেসোপটেমিয় ধর্ম সৃষ্টি কাহিনী (জেনেসিস) ও চুক্তির ধারণায়, এবং মিশরীয় ধর্ম সম্ভাব্য একেশ্বরবাদী চিন্তায় প্রভাব ফেলে। তবে, ইহুদি ধর্মের নৈতিক ও একেশ্বরবাদী প্রকৃতি এটিকে স্থানীয় ধর্মগুলো থেকে স্বতন্ত্র করে।

ইহুদি ধর্মের গঠনের সূচনা প্রায় ২০০০ খ্রিস্টপূর্ব থেকে ১২০০ খ্রিস্টপূর্ব পর্যন্ত ধরা হয়, যদিও এর আনুষ্ঠানিক রূপ পরবর্তী সময়ে (প্রায় ১০০০ খ্রিস্টপূর্ব) আরও স্পষ্ট হয়। এই সময়কালে ইহুদি ধর্মের মূল বৈশিষ্ট্য—একেশ্বরবাদ, ইয়াহওয়ে (Yahweh) এর উপাসনা, এবং ধর্মীয় আইনের ধর্মগ্রন্থ (তোরাহ)—ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে।
                 
ইহুদি ধর্মের উদ্ভব ও বিকাশ খ্রিস্টপূর্ব ১২০০ অব্দ থেকে খ্রিস্টের জন্ম পর্যন্ত একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া, যা মধ্যপ্রাচ্যের কেনান (বর্তমান ইসরায়েল/ফিলিস্তিন), মিশর, মেসোপটেমিয়া এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটে ঘটে। এই সময়ে ইহুদি ধর্ম একেশ্বরবাদ, টোরাহর আইন, এবং ইসরায়েলীয় জাতিগত পরিচয়ের মাধ্যমে একটি স্বতন্ত্র ধর্ম হিসেবে গড়ে ওঠে। নীচে প্রত্নতাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিক প্রমাণের ভিত্তিতে এই ইতিহাস বর্ণনা করা হল, হিব্রু বাইবেলের (তানাখ) ধর্মীয় ও মিথিক্যাল বর্ণনার সঙ্গে যোগসূত্র রেখে।
খ্রিস্টপূর্ব ১২০০ অব্দের দিকে কেনানে ইসরায়েলীয়দের উপস্থিতি প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে নিশ্চিত হয়। এই সময়টি দেরী ব্রোঞ্জ যুগের শেষ এবং প্রাথমিক লৌহ যুগের শুরু, যখন কেনান অঞ্চল মিশরীয় প্রভাব, ফিলিস্তিনী আগ্রাসন, এবং স্থানীয় কেনানীয় শহর-রাষ্ট্রের মধ্যে অস্থিতিশীল ছিল। মিশরীয় ফারাও মেরনেপ্তাহর একটি শিলালিপিতে “ইসরায়েল” নামের উল্লেখ পাওয়া যায়, যা ইসরায়েলীয়দের প্রাচীনতম লিখিত প্রমাণ। এটি নির্দেশ করে যে ইসরায়েল একটি জনগোষ্ঠী বা সম্প্রদায় হিসেবে কেনানে বিদ্যমান ছিল, সম্ভবত পাহাড়ি অঞ্চলে।

খ্রিস্টপূর্ব ১২০০-১০০০ অব্দে কেনানের কেন্দ্রীয় পাহাড়ি অঞ্চলে (যেমন, জুডিয়া, সামারিয়া) ছোট ছোট গ্রামের উত্থান দেখা যায়। এই বসতিগুলো সাধারণ কৃষিভিত্তিক ছিল, মাটির পাত্রে সরল নকশা এবং সেগুলোতে শুকরের হাড়ের অনুপস্থিতি ছিল যা ইহুদি খাদ্যবিধি যেমন শুকর হারামের ইঙ্গিত। এই গ্রামগুলো সম্ভবত ইসরায়েলীয়দের প্রাথমিক বসতি ছিল।

ইসরায়েলীয়দের উৎপত্তি নিয়ে পণ্ডিতদের মধ্যে তিনটি প্রধান তত্ত্ব রয়েছে। প্রথমটি হল বিজয় মডেল। এই মডেলে হিব্রু বাইবেলের যিহোশূয়া বই অনুসারে, ইসরায়েলীয়রা বাইরে থেকে এসে কেনান বিজয় করে। তবে, সেইরকম বড় আকারের বিজয়ের কোন প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ পাওয়া যায় না। দ্বিতীয়টি হল শান্তিপূর্ণ অনুপ্রবেশ মডেল এই মডেল অনুসারে ইসরায়েলীয়রা ধীরে ধীরে কেনানে প্রবেশ করে এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সঙ্গে মিশে যায়। তৃতীয়টি হল অভ্যন্তরীণ উত্থান মডেল। এই মডেলে ইসরায়েলীয়রা স্থানীয় কেনানীয়দের মধ্যে থেকেই উদ্ভূত হয়, সম্ভবত সামাজিক ও ধর্মীয় বিপ্লব বা পরিবর্তনের মাধ্যমে। এই তত্ত্ব প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণের সঙ্গে বেশি সামঞ্জস্যপূর্ণ।

প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে, এই সময়ে কেনানে বহুদেববাদ প্রচলিত ছিল (যেমন, বাল, আশেরা উপাসনা)। তবে, কিছু স্থানে এক ঈশ্বরে ইয়াহওয়ের উপাসনার ইঙ্গিত পাওয়া যায়, যা ইসরায়েলীয়দের সঙ্গে যুক্ত। উদাহরণস্বরূপ, কিছু শিলালিপিতে “ইয়াহওয়ে” নামের উল্লেখ পাওয়া যায়।

হিব্রু বাইবেলের যিহোশূয়া এবং বিচারক বই অনুসারে মুসার উত্তরসূরি যিহোশূয়া ইসরায়েলীয়দের কেনানে নিয়ে যান এবং শহরগুলো (যেমন, যিহোরিখো, আই) বিজয় করেন। ঈশ্বরের নির্দেশে তারা কেনানীয়দের পরাজিত করে এবং বারো গোত্রের মধ্যে ভূমি বণ্টন করে। যিহোশূয়ার পর ইসরায়েলীয়রা বিচারকদের দ্বারা শাসিত হয়, যারা ধর্মীয় ও সামরিক নেতা হিসেবে কাজ করত। এই সময়ে ইসরায়েলীয়রা বহুদেববাদের প্রভাবে পড়লেও ঈশ্বর ইয়াহওয়ের প্রতি আনুগত্যের জন্য নবী ও বিচারকদের দ্বারা সংশোধিত হত। হিব্রু বাইবেলে বলা হয়, ইসরায়েলীয়রা এক ঈশ্বরের উপাসনা করত, তবে স্থানীয় দেবতা (যেমন, বাল) এর প্রভাব ছিল। এই সময়ে একেশ্বরবাদ সম্ভবত হেনোথিইজম (এক ঈশ্বরের প্রাধান্য) আকারে ছিল।

প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে, বড় আকারের বিজয়ের প্রমাণ না থাকলেও পাহাড়ি অঞ্চলের গ্রামগুলো ইসরায়েলীয়দের উত্থানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। হিব্রু বাইবেলের বর্ণনা সম্ভবত এই গ্রামবাসীদের ধর্মীয় ও জাতিগত পরিচয় গঠনের প্রক্রিয়াকে প্রতীকীভাবে বর্ণনা করে।

খ্রিস্টপূর্ব ১০ম শতাব্দীতে ইসরায়েলীয় সমাজ একটি কেন্দ্রীভূত রাজতন্ত্রে রূপান্তরিত হয়। এই সময়টি লৌহ যুগের শুরু, যখন কেনানে শহর-রাষ্ট্রগুলো শক্তিশালী হয় এবং ফিলিস্তিনীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাড়ে। জেরুজালেমে খ্রিস্টপূর্ব ১০ম শতাব্দীর স্থাপত্য (যেমন, স্টেপড স্টোন স্ট্রাকচার) একটি কেন্দ্রীভূত প্রশাসনের ইঙ্গিত দেয়। তবে, জেরুজালেম তখনও ছোট ছিল। হাজোর, মেগিদ্দো, এবং গেজের শহরে দৃঢ় প্রাচীর ও দুর্গের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়, যা একটি শক্তিশালী রাজতন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত। কিছু পণ্ডিত এগুলোকে রাজা সলোমনের সময়ের সঙ্গে সম্পর্কিত মনে করেন, যদিও এটি বিতর্কিত। তেল দান স্টেলে “দাউদের বংশ” (House of David) এর উল্লেখ রয়েছে, যা দাউদের ঐতিহাসিক অস্তিত্বের প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত।

প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে, এই সময়ে বহুদেববাদী মূর্তি ও উপাসনাস্থল ছিল। তবে, কিছু শিলালিপি ও ধর্মীয় নিদর্শনে ইয়াহওয়ে -এর উপাসনার প্রাধান্য দেখা যায়, যা ইহুদি ধর্মের একেশ্বরবাদী পরিচয়কে শক্তিশালী করে। ফিলিস্তিনীদের সঙ্গে সংঘর্ষ এবং আঞ্চলিক শক্তি (যেমন, মোয়াব, এদোম) এর উত্থান ইসরায়েলীয়দের কেন্দ্রীভূত শাসনের দিকে ঠেলে দেয়।

হিব্রু বাইবেলের স্যামুয়েল, কিংস, এবং ক্রনিকলস বই অনুসারে খ্রিস্টপূর্ব ১০২০ এর দিকে শাউল ইসরায়েলের প্রথম রাজা হিসেবে নিযুক্ত হন। তিনি ফিলিস্তিনীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন, তবে তার শাসন অস্থিতিশীল ছিল। খ্রিস্টপূর্ব ১০০০-৯৬০ এর সময় দাউদ জেরুজালেমকে রাজধানী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ইসরায়েলকে একটি শক্তিশালী রাজ্যে পরিণত করেন এবং একেশ্বরবাদী উপাসনাকে কেন্দ্রীভূত করেন। খ্রিস্টপূর্ব ৯৬০-৯৩০ এর দিকে সলোমন জেরুজালেমে প্রথম মন্দির নির্মাণ করেন, যা ইয়াহওয়ের উপাসনার কেন্দ্র হয়ে ওঠে। তিনি ইসরায়েলের সীমানা সম্প্রসারণ করেন এবং তোরাহর আইনকে শক্তিশালী করেন। তবে, তার শাসনের শেষে বহুদেববাদের প্রভাব ফিরে আসে। দাউদ ও সলোমনের সময়ে মন্দিরকেন্দ্রিক উপাসনা এবং পুরোহিতদের (লেভাইট) ভূমিকা প্রতিষ্ঠিত হয়। তোরাহর মৌখিক ঐতিহ্য এই সময়ে আরও সুসংগঠিত হয়।

প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে তেল দান স্টেলে দাউদের বংশের উল্লেখ এবং হাজোর-মেগিদ্দোর দুর্গ প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে হিব্রু বাইবেলের বর্ণনাকে সমর্থন করে। তবে, দাউদ ও সলোমনের রাজ্যের বিশালতা সম্ভবত বাইবেলে অতিরঞ্জিত। প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে, এটি একটি আঞ্চলিক শক্তি ছিল, বিশাল সাম্রাজ্য নয়।

রাজা সলোমনের মৃত্যুর পর ইসরায়েল রাজ্য দুভাগে বিভক্ত হয়: উত্তরে ইসরায়েল এবং দক্ষিণে জুডিয়া। এই সময়ে ইহুদি ধর্ম আরও সুনির্দিষ্ট রূপ নেয়। উত্তর ইসরায়েলের রাজধানী হয় সামারিয়া। প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে, সামারিয়ায় প্রাসাদ ও দুর্গের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়। এই রাজ্যে বহুদেববাদ (বাল উপাসনা) প্রচলিত ছিল, তবে ইয়াহওয়ের উপাসনাও ছিল। দক্ষিণে জুডিয়ার রাজধানী হয় জেরুজালেম। জেরুজালেম মন্দির একেশ্বরবাদের কেন্দ্র ছিল। প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে, জুডিয়ায় ধর্মীয় শিলালিপি এবং ইয়াহওয়ের উপাসনার প্রমাণ পাওয়া যায়।

ওই সময় বাহিরের শত্রু মেসোপটেমিয়ান শক্তি (আসিরিয়া, ব্যাবিলন) এবং মিশরের সঙ্গে সংঘর্ষ বাড়ে। মেসাইক স্টেলে  মোয়াবের রাজা মেসার বিজয় এবং ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘর্ষের উল্লেখ রয়েছে, যা হিব্রু বাইবেলের বর্ণনার সঙ্গে মিলে। খ্রিস্টপূর্ব ৭২২  সালে আসিরিয়রা উত্তরের ইসরায়েল রাজ্য ধ্বংস করে এবং অনেক ইসরায়েলীকে নির্বাসনে পাঠায় (দশ গোত্রের হারিয়ে যাওয়া)। প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে, সামারিয়ার ধ্বংস এই ঘটনার প্রমাণ দেয়।

জুডিয়ার রাজা হিজকিয়া (খ্রিস্টপূর্ব ৭১৫-৬৮৭) এবং যোশিয়া (খ্রিস্টপূর্ব ৬৪০-৬০৯) বহুদেববাদী উপাসনাস্থল ধ্বংস করে এবং জেরুজালেম মন্দিরে উপাসনা কেন্দ্রীভূত করেন। প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে, হিজকিয়ার শাসনকালে জেরুজালেমের প্রাচীর ও জল সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নতি দেখা যায়। যোশিয়ার সময়ে “আইনের বই” (সম্ভবত ডিউটেরোনমি) পাওয়া যায়, যা তোরাহর কেন্দ্রীভূতকরণের ইঙ্গিত দেয়।

হিব্রু বাইবেল অনুসারে সলোমনের পুত্র রেহোবোয়ামের শাসনকালে রাজ্য বিভক্ত হয়। উত্তর ইসরায়েলে বহুদেববাদ প্রচলিত হয়, যখন জুডিয়া জেরুজালেম মন্দিরের উপর কেন্দ্রীভূত থাকে। এই সময় এলিয়া, এলিশা, ইশাইয়া, এবং যিরমিয়ার মতো নবীরা একেশ্বরবাদ এবং তোরাহর আইন মেনে চলার জন্য সতর্ক করেন। তারা বহুদেববাদ ও সামাজিক অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলেন। হিজকিয়া ও যোশিয়ার সংস্কার জেরুজালেম মন্দিরকে ইহুদি ধর্মের একমাত্র কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে এবং তোরাহর আইনকে রাষ্ট্রীয় আইনে পরিণত করে।

প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ (যেমন, মেসাইক স্টেলে, সামারিয়ার ধ্বংস) এবং হিব্রু বাইবেলের বর্ণনা উত্তর ও দক্ষিণ রাজ্যের বিভক্তি ও আসিরিয়ার বিজয়ের বিষয়ে মিলে যায়। হিজকিয়া ও যোশিয়ার সংস্কার প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে জেরুজালেমের উন্নতি ও ধর্মীয় শিলালিপির মাধ্যমে সমর্থিত।

খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে ব্যাবিলনীয়রা জুডিয়া রাজ্য ধ্বংস করে, যা ইহুদি ধর্মের বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। খ্রিস্টপূর্ব ৫৮৭ এর দিকে ব্যাবিলনের রাজা নেবুখাদনেজার জেরুজালেমের মন্দির ধ্বংস করেন এবং জুডিয়ার অভিজাতদের ব্যাবিলনে নির্বাসনে পাঠান। প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে, জেরুজালেমে ধ্বংসের চিহ্ন এবং ব্যাবিলনে ইহুদি নামের শিলালিপি (যেমন, আল-ইয়াহুদু ট্যাবলেট) এই নির্বাসনের প্রমাণ দেয়। ব্যাবিলনে ইহুদিরা সিনাগগ উপাসনার প্রথা শুরু করে এবং তোরাহর লিখিত রূপ গঠনের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে। প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে, এই সময়ে হিব্রু লিপির বিকাশ দেখা যায়।

খ্রিস্টপূর্ব ৫৩৮ এর দিকে পারস্যের রাজা সাইরাস ব্যাবিলন জয় করেন এবং ইহুদিদের নিজ ভূমি জেরুজালেমে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেন। প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে, সাইরাস সিলিন্ডারে লেখা তার ধর্মীয় সহনশীলতার নীতির বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে যেটি ধর্মনিরপেক্ষতা ও মানবাধিকারের প্রথম দলিল।

হিব্রু বাইবেলের কিংস ও যিরমিয়া বই ব্যাবিলনীয় বিজয় ও নির্বাসনের বর্ণনা দেয়। নবী যিরমিয়া ইহুদিদের ঈশ্বরের প্রতি আনুগত্য এবং তোরাহ মেনে চলার জন্য সতর্ক করেন। নবী ইজেকিয়েল ও ইশাইয়া নির্বাসনে ইহুদিদের আশা জাগান এবং একেশ্বরবাদকে আরও শক্তিশালী করেন। তোরাহ গ্রন্থ আকারে এই সময়ে সম্পাদিত হয়। এজরা ও নেহেমিয়া বই অনুসারে, ইহুদিরা জেরুজালেমে ফিরে এসে দ্বিতীয় মন্দির নির্মাণ শুরু করেন। তখন তোরাহকে রাষ্ট্রীয় আইন হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়।

ব্যাবিলনীয় নির্বাসন ও পারসিক প্রত্যাবর্তনের প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ হিব্রু বাইবেলের বর্ণনার সঙ্গে মিলে। নির্বাসন ইহুদি ধর্মকে মন্দিরকেন্দ্রিক থেকে তোরাহকেন্দ্রিক ধর্মে রূপান্তরিত করে। দ্বিতীয় মন্দির যুগে ইহুদি ধর্ম একটি সুনির্দিষ্ট ধর্ম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
খ্রিস্টপূর্ব ৫১৬ এর সময় জেরুজালেমে দ্বিতীয় মন্দির নির্মিত হয়। প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে, এই মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ সীমিত, তবে পারসিক শাসনকালে জেরুজালেমের পুনর্গঠনের প্রমাণ পাওয়া যায়। খ্রিস্টপূর্ব ৫ম-৪র্থ শতাব্দীতে তোরাহর লিখিত রূপ চূড়ান্ত হয়। এজরা, একজন পুরোহিত ও শাস্ত্রবিদ, তোরাহকে জুডিয়ার আইন হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে, হিব্রু ও আরামাইক শিলালিপি এই সময়ে তোরাহর প্রভাব নির্দেশ করে।

খ্রিস্টপূর্ব ৩৩২-১৬৭ এর সময় আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের বিজয়ের পর জুডিয়া গ্রিক শাসনের অধীনে আসে। হেলেনিস্টিক সংস্কৃতি ইহুদি ধর্মের উপর চাপ সৃষ্টি করে। প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে, জুডিয়ায় গ্রিক মুদ্রা ও স্থাপত্যের প্রমাণ পাওয়া যায়। খ্রিস্টপূর্ব ১৬৭-১৬০ এর দিকে গ্রিক শাসক অ্যান্টিওকাস চতুর্থের ধর্মীয় নিপীড়নের বিরুদ্ধে ম্যাকাবী বিদ্রোহ সফল হয়, যার ফলে হয় হানুক্কা উৎসবের উৎপত্তি। প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে, এই সময়ে জুডিয়ার সামরিক দুর্গের প্রমাণ পাওয়া যায়। খ্রিস্টপূর্ব ৬৩ সালে খ্রিস্টের জন্ম হয়। সেই সময় রোমানরা জুডিয়া দখল করে। হেরোদ দ্য গ্রেট (খ্রিস্টপূর্ব ৩৭-৪) দ্বিতীয় মন্দিরকে পুনর্নির্মাণ করেন। প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে, হেরোদের মন্দিরের দেয়াল (ওয়েস্টার্ন ওয়াল) এবং জেরুজালেমের স্থাপত্য এর প্রমাণ দেয়।

 খ্রিস্টপূর্ব ২য় শতাব্দী থেকে ফরিসী, সদ্দুকী, এসিন, এবং জেলটদের মতো ইহুদি গোষ্ঠী উদ্ভূত হয়। ফরিসীরা তোরাহর মৌখিক ঐতিহ্য এবং পুনরুত্থানে বিশ্বাস করত, যখন সদ্দুকীরা শুধু লিখিত তোরাহ গ্রহণ করত। প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে, কুমরানের ডেড সি স্ক্রল (খ্রিস্টপূর্ব ২য় শতাব্দী) এসিনদের ধর্মীয় লেখার প্রমাণ দেয়। এজরা ও নেহেমিয়া তোরাহকে কেন্দ্রীভূত করে এবং শাব্বাত, খৎনা, এবং কোশার আইনকে শক্তিশালী করে। হাগাই ও জাকারিয়ার মতো নবীরা মন্দির পুনর্নির্মাণে উৎসাহ দেন।

ম্যাকাবী পুস্তক (অ্যাপোক্রিফা) অনুসারে, ম্যাকাবীরা গ্রিক নিপীড়নের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে এবং মন্দির পুনঃপবিত্র করে। এটি ইহুদি ধর্মের স্বাধীনতার প্রতীক হয়ে ওঠে। নবীদের লেখা (যেমন, ইশাইয়া, ড্যানিয়েল) এবং অ্যাপোক্রিফাল গ্রন্থে মশীহের (অভিষিক্ত মুক্তিদাতা) ধারণা বিকশিত হয়। এটি খ্রিস্টের জন্মের সময় ইহুদি সমাজে ব্যাপক প্রত্যাশা সৃষ্টি করে।

প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে, দ্বিতীয় মন্দির, ডেড সি স্ক্রল, এবং হেরোদের স্থাপত্য হিব্রু বাইবেল ও অ্যাপোক্রিফার বর্ণনাকে সমর্থন করে। মশীহের ধারণা ইহুদি ধর্মের মধ্যে বিকশিত হয় এবং খ্রিস্টধর্মের উদ্ভবের পটভূমি তৈরি করে।

ইহুদি ধর্মের মূল বৈশিষ্ট্য (খ্রিস্টের জন্ম পর্যন্ত):

১। একেশ্বরবাদ: ইয়াহওয়ে একমাত্র ঈশ্বর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। ব্যাবিলনীয় নির্বাসনের পর একেশ্বরবাদ কঠোর হয়।
২। তোরাহ বা ইহুদি বাইবেল: জেনেসিস, এক্সোডাস, লেভিটিকাস, নাম্বার্স, ডিউটেরোনমি ইহুদি ধর্মের পবিত্র পাঁচটি গ্রন্থ, নবীগণ ও লেখা (Prophets, Writings) এই সময়ে সংকলিত হয়।
৩। মন্দির ও সিনাগগ: দ্বিতীয় মন্দির উপাসনার কেন্দ্র, যখন সিনাগগ তোরাহ পাঠ ও শিক্ষার স্থান হয়ে ওঠে।
৪। উৎসব ও আইন: শাব্বাত, পাসওভার, হানুক্কা, এবং কোশার খাদ্যবিধি (হারাম হালালা) ইহুদি পরিচয়ের অংশ হয়ে ওঠে।

এই বৈশিষ্ট্যগুলোর ভিত্তিতেই পরবর্তিতে খ্রিস্টধর্ম ও ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয়। এখানে উল্লেখ্য যে  আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের বিজয়ের পর জুডিয়া গ্রিক শাসনের অধীনে আসে। হেলেনিস্টিক সংস্কৃতি ইহুদি ধর্মের উপর চাপ সৃষ্টি করে। সেই সময়ের পর থেকে গ্রিক নিপীড়নের সময় শুরু হয়। তার পর রোমানরা জুডিয়া দখল করে। এই সময়ে জুডিয়ার সামরিক দুর্গের প্রমাণ পাওয়া যায়। এই সময় খ্রিস্টপূর্ব ২য় শতাব্দী থেকে ফরিসী সম্প্রাদয় গঠিত হয় যারা ধর্মীয় কপটতা, ধর্মীয় আইনের আক্ষরিক ব্যাখ্যা, বাহ্যিক প্রদর্শন, এবং নৈতিক গভীরতার অভাব প্রদর্শন করতে থাকে। ঠিক যেমন কিছু ইসলামী প্রচারক যারা হাদিসের উপর অতিরিক্ত নির্ভর করে (বিশেষত সন্দেহজনক বা দুর্বল হাদিস) এবং কুরআনের আধ্যাত্মিক ও নৈতিক শিক্ষার পরিবর্তে আক্ষরিক বা কঠোর ব্যাখ্যার উপর জোর দেয়, তাদের সাথে ফরীশীদের মিল লক্ষণীয়। একদিকে গ্রীক ও রোমানদের অত্যাচার এবং অপরদিকে ফরীশীদের ধর্মের আক্ষরিক ও বাহ্যিক প্রয়োগ মানুষকে অতিষ্ট করে ফেলে। যার ফলে একটি শান্তি ও সহনশীলতার ব্যক্তিগত শুদ্ধিকরণের ধর্মের জন্য মানুষের মন মুখিয়ে থাকে।  

Saturday, April 26, 2025

Curry-flavored sauteed mushrooms

 

Ingredients for 4 people

1/2 pack each of maitake mushrooms, shimeji mushrooms, and enoki mushrooms

☆1/2 small each of garlic powder and curry powder

☆A little salt and pepper

☆A little Ajinomoto

1 tbsp olive oil

Preparation: 5-15 minutes

Remove the stems from the mushrooms, separate the maitake and shimeji mushrooms, and cut the enoki mushrooms in half lengthwise and separate them.

Heat olive oil in a frying pan, add 1, and cook over medium heat without moving it too much.

Once browned, mix lightly, add ☆, stir fry, 

and it's done.

Stir-fried mushrooms with salted kelp

 

Ingredients for 4 people

3 shiitake mushrooms

1 bag maitake mushrooms

2 king oyster mushrooms

☆5g salted kelp

☆1 1/2 tbsp mirin

A little salt

1 tsp sesame oil

1 tsp white sesame seeds

Preparation time: 5-15 minutes

Remove the stems of the shiitake mushrooms and thinly slice them, remove the stems of the maitake mushrooms and break them apart, remove the stems of the king oyster mushrooms and thinly slice them into bite-sized pieces.

Heat sesame oil in a frying pan and fry 1 without moving it too much. Once browned, add ☆ and stir fry.

Taste and add salt to taste, then mix in the white sesame seeds.

Asparagus and Tanuki Rice Balls

 


Ingredients
Rice...1 bowl (about 120g)
Asparagus...1 stalk
Tempura flakes...2 tablespoons
Mentsuyu (3x concentrated)...1/2 teaspoon
Butter...5g
Salt and pepper...a little

Preparation
De-string the asparagus and cut it into 5mm pieces.
Pour the mentsuyu sauce over the tempura flakes.

How to make
1. Heat butter in a frying pan and fry the asparagus, seasoning with salt and pepper.
2. Mix the asparagus and tempura scraps into the rice.
3. Gather the rice with the ingredients together and make rice balls.


The Misguidance of Islam -1 Author= Sirajul Islam

 


The Change of Islam in Bangladeshi Society - From Personal Purification to Rituals
------
The neighborhood we grew up in as children can be called a Hindu-dominated neighborhood. Although many Hindus were killed and many Hindus left the country as a result of the Hindu massacre and expulsion during the 1971 War of Independence, the Hindu house in front of our house was set on fire in the beginning of 1971 because it was just a Hindu house. All the financially well-off, polite and talented children of that family, except the elder brother, left for India in the eighties.
Although many Hindus left the country during the War of Independence, many returned and after independence, despite all the losses, they started life with new enthusiasm in their ancestral homes. At that time, the sound of conch shells and bells and the sounds of mantras and aartis would be heard every evening, and the call to prayer in a sweet voice could also be heard at the same time. No one ever felt annoyed or annoyed by this. It is safe to say that television was not in people's homes then. There was a radio where people listened to the news and listened to the Sri Lankan Radio Shillong's program Binaka Geetmala, which featured all the hit songs from Hindi movies. During the puja, those Hindi songs from Asha, Lata, and Kishore's movies were played on the microphone day and night. Just as during the puja, a festive feeling prevailed in everyone's mind, similarly the Eid and Qurbani Eid festivals also surrounded the entire neighborhood. We, young boys and girls, regardless of religion, used to enjoy the joy of walking, eating, and being friends. The adults did the same. I never heard any slogans, processions, accusations, conspiracies, or announcements of jihad against Hindus or Muslims by saying Allahu Akbar. Back then, not all people in the neighborhood were angels. Each person was judged not by his religion, but by his personal character. The purpose of the temple in the homes of wealthy Hindus or the prayers of Muslims was to try to be honest and ideal as a person.
After the assassination of Sheikh Mujib and his family in 1975, instead of being personally honest and idealistic, the mentality that the more Muslim one looks, the better he is and the more non-Muslim one looks or behaves, the worse he is has increased among the followers of Islam in Bangladesh. Islam changed from a religion of personal purification to a religion of ritual or observance of rituals or worship. Those who know about Islam and the Abrahamic religions (Judaism, Christianity and Islam) know that the Abrahamic religions originated with the aim of taking people out of the religions of rituals or worship and creating a better and more just and human rights-based society by observing the religion of personal purification. The reason for this is that the religions of worship are invented in the villages, where the personal good and bad of a person cannot be hidden from the people of the village. On the other hand, and the Abrahamic religions are invented in the cities, where the burden of character is on the people.
Hinduism and Abrahamic religions are not the same. Hinduism is not really a religion. Many people say that Hinduism is polytheistic, which is also not true. When agricultural civilization spread from the Zaragoz area of ​​Iran ten thousand years ago, they noticed that all animals, plants and objects in the world followed certain rules or patterns in that society. At the same time, about five thousand years ago, they noticed that all animals in the world have a sense of judgment and the ability to measure fairness. From this, they assumed that an ideal power (and another evil power) exists in all living souls. They considered the combined presence of this ideal power to be God. Due to this, Zoroastrianism began in Iran and the Hindu religion of the Vedas and Upanishads began in the Indian subcontinent.
In the current society of Bangladesh, we see that Hindus have been expelled from the country through various processes. As a result, the noise of Hindu rituals or worship rules in the society is almost non-existent. The society is completely under the control of Muslims. In this harmony, the extreme chauvinism of Islam has been revealed in society. Just as in Zoroastrianism or the Hindu religion of the Vedas and Upanishads, gods of opposite ideals with equal power are thought of as one good and another evil, in the religions of Abraham there is no such equality of power of opposite ideals. There is no real form of Satan in the religions of Abraham. The Satan of the Abrahamic religion is an angel like many other angels of God who was the most beloved of God. The Satan of the Abrahamic religion does not call God to fight. He can only work on the minds of people. He was born as a Satan from the time of not prostrating to Adam.
Long ago, the wise men of Israel in the Middle East discovered that no matter how advanced, educated, and how good a state, party, or organization people create, if they do not practice personal purification, they will be led by the persuasion of Satan. Society will become a hotbed of injustice, lawsuits, attacks and violence to control others. Today we see that everyone is Muslim, only the slogans of Allahu Akbar and Jihad are being chanted. But honesty, fairness, and trust in each other have completely disappeared. The more Islam there is, the more theft, embezzlement, debauchery and intolerance there is. The reason for this is that Islam has moved away from personal purification and has become a religion of rituals or observance of rituals. This has been combined with the so-called mind virus of Western free society. Which teaches us to follow the values ​​of social power and factions rather than thinking about ourselves and our spiritual crisis.
To understand the misguidance of Islam, we need to know about the history of the religion of Abraham. A brief description of it is given (in the following episodes).
t should be remembered that Judaism, Christianity, and Islam are an inseparable chain. It is as if the same God is sending some rules and regulations to make society livable by purifying people individually, but people are going astray by not applying them. It is also important to note here that the religions of Abraham, such as Judaism, Christianity, and Islam, which we consider as three religions, have actually undergone various changes and divisions at different times in history. The matter should be viewed in line with that division.
Another thing to understand is that when studying the historical chain of religions, one has to think in two streams. Religions have a history or mythological history described in religious scriptures, and another has an archaeological and historical context that is determined by applying archaeological and historical knowledge. It is not that the two will always coincide, but both must be kept in mind.

ইসলামের বিপথগামীতা -১ লেখক= সিরাজুল ইসলাম

 

বাংলাদেশের সমাজে ইসলামের পরিবর্তন -ব্যক্তিগত শুদ্ধিকরণ থেকে আচার-অনুষ্ঠান
---------------------
ছোটবেলায় আমরা যে পাড়ায় বড় হয়েছি সেটাকে একটা হিন্দু-প্রধান পাড়াই বলা চলে। যদিও ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়কার হিন্দু নিধন ও হিন্দু বিতাড়নের ফলে অনেক হিন্দু নিহত হয়েছিল এবং অনেক হিন্দু দেশ ত্যাগ করেছিল। ১৯৭১ সালের শুরুতেই আমাদের বাড়ির সামনের হিন্দু বাড়িতে আগুন দেয়া হয়েছিল শুধুই হিন্দু বাড়ি বলে। আর্থিকভাবে সচ্ছল এবং ভদ্র ও মেধাবী ছেলেমেয়েদের ঐ পরিবারের বড় ভাই ছাড়া আর সবাই ভারতে চলে গিয়েছিল আশির দশকে।
স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় অনেক হিন্দু দেশ ত্যাগ করলেও অনেকেই ফিরে এসেছিল এবং স্বাধীনতার পর সকল ক্ষতি সয়েও তারা বাপ দাদার ভিটায় নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করেছিল। ঐ সময় প্রতি সন্ধ্যায় শাঁখ ও ঘন্টার ধ্বনি ও মন্ত্র-আরতির সূর ভেসে আসত, আবার মধুর কন্ঠে আজানও একই সময় শোনা যেত। এতে কেউ কখনও উত্যক্ত বা বিরক্ত বোধ করত না। তখন টেলিভিশন মানুষের বাসায় ছিল না বললেই চলে। ছিল রেডিও যেখানে মানুষ খবর শুনত আর শুনত শ্রীলংকার রেডিও শিলং এর হিন্দি সিনেমার হিট সব গানের অনুষ্ঠান বিনাকা গীতমালা। পুজার সময় হিন্দি আশা, লতা, কিশোরের সিনেমার সেই সব গানগুলো মাইকে দিন রাত বাজত। পুজার সময় যেমন পুরো পড়াতে একটা উৎসবের ভাব বিরাজ করত সবার মনে, ঠিক তেমনই ঈদ ও কোরবানী ঈদের উৎসবও সারা পাড়াকে ঘিরে ধরত। আমরা ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা যেমন ধর্ম নির্বিশেষে বেড়ানোর ও খাবার আনন্দ এবং বন্ধুত্বে মেতে রইতাম। বড়রাও তাই করত। কখনও শুনিনি হিন্দুদের বিরুদ্ধে বা মুসলমানদের বিরুদ্ধে কোন শ্লোগান, মিছিল, দোষারোপ, চক্রান্ত বা আল্লাহু আকবর বলে জিহাদ করাবার ঘোষণা। তখন পাড়ায় সব মানুষ যে ফেরেশতা ছিল সেটা নয়। প্রতিটি মানুষকে তার ধর্ম নয়, তার ব্যক্তিগত চরিত্র দিয়ে বিচার করা হত। সচ্ছল হিন্দুদের বাড়ির মন্দিরটি বা মুসলমানদের নামাজের উদ্দেশ্য ছিল প্রতিটি মানুষের ব্যাক্তিগতভাবে সৎ ও আদর্শ হবার চেষ্টা করা।
১৯৭৫ সালের শেখ মুজিবকে সপরিবারে হত্যার পর বাংলাদেশে ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে ব্যাক্তিগতভাবে সৎ ও আদর্শ হবার পরিবর্তে, যে যত বেশি দেখতে মুসলিম সে তত ভাল এবং যে যত বেশি দেখতে বা আচরণে অমুসলিম সে তত মন্দ এই মানসিকতা বাড়তে থাকে। ইসলাম ধর্ম একটি ব্যক্তিগত শুদ্ধিকরণের ধর্ম থেকে পরিবর্তিত হয়ে একটি আচার-অনুষ্ঠান, মানে রিচ্যুয়াল বা পূজাবিধি পালনের ধর্মে পরিণত হয়। যারা ইসলাম এবং ইব্রাহিমের ধর্মগুলো (ইহুদী, খ্রিস্টান ও ইসলাম) সম্পর্কে জানে, তারা জানে ইব্রাহিমের ধর্মগুলোর উদ্ভবই হয়েছে আচার-অনুষ্ঠান বা পূজাবিধির ধর্মগুলোর থেকে মানুষকে বের করে এনে ব্যক্তিগত শুদ্ধিকরণের ধর্ম পালনের মাধ্যমে একটি উন্নততর এবং ন্যায় বিচার ভিত্তিক ও মানুষের অধিকার ভিত্তিক সমাজ তৈরির লক্ষ্যে। এর কারণ হচ্ছে পূজাবিধি পালনের ধর্মগুলো হলো গ্রামে উদ্ভাবিত, যেখানে মানুষের ব্যক্তিগত ভালমন্দ গ্রামের মানুষের কাছে লুকানো যায় না। অপরদিকে এবং ইব্রাহিমের ধর্মগুলো শহরে উদ্ভাবিত, যেখানে মানুষের চরিত্র বোঝা ভার।
হিন্দু ধর্ম ও ইব্রাহিমের ধর্মগুলো তাই এক নয়। হিন্দু ধর্ম বলে আসলে কোন ধর্ম নেই। অনেকে বলে হিন্দু ধর্ম বহুঈশ্বরবাদী, সেটাও ঠিক নয়। দশ হাজার বছর আগে ইরানের জার্গোজ এলাকা থেকে কৃষি সভ্যতার যখন বিস্তার ঘটে তখন সেই সমাজে দুনিয়ার সকল প্রাণী, উদ্ভিদ এবং বস্তুগুলো বিশেষ কিছু নিয়ম বা ছক মেনে চলে এটা তারা খেয়াল করেন। এর সাথে সাথে প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে থেকে তারা খেয়াল করেন দুনিয়ার সকল প্রাণীর মধ্যে একটি বিচারবোধ ও ন্যায্যতা পরিমাপের ক্ষমতা বিদ্যমান। এই থেকেই তারা ধারণা করেন যে একটি আদর্শিক শক্তি (ও আর একটি অপশক্তি) সকল জীবিত আত্মায় বিদ্যমান। এই আদর্শ শক্তির সম্মিলিত অবস্থিতিকেই তারা ঈশ্বর মনে করতেন। এর প্রভাবে ইরানে জরাস্ত্রিয়ান ধর্মের সূচনা হয় এবং ভারতীয় উপমহাদেশে বেদ উপনিষদের হিন্দু ধর্মের সূচনা হয়।
বাংলাদেশের বর্তমান সমাজে আমরা দেখছি নানা প্রক্রিয়ায় হিন্দুদের দেশ থেকে বিতাড়ন করা হয়েছে। এর ফলে সমাজে হিন্দু আচার-অনুষ্ঠান বা পূজাবিধির যে কলরব, সেটা নেই বললেই চলে। সমাজ পুরোটাই মুসলিমদের দখলে। এই সমসত্ত্বতার মধ্যেও সমাজে ইসলামের প্রচণ্ড রকম উগ্র প্রদর্শনবাতিকতা বা শোভিনিজম প্রকাশ পেয়েছে। জরাস্ত্রিয়ান বা বেদ উপনিষদের হিন্দু ধর্মে যেমন একটি শুভ ও আর একটি অপশক্তির সমান ক্ষমতার বিপরীত আদর্শের দেবতাদের ধারণা করা হয়, ইব্রাহিমের ধর্মগুলোতে সেইরকম বিপরীত আদর্শের ক্ষমতার সমতা নেই। ইব্রাহিমের ধর্মগুলোতে শয়তানের কোন বাস্তব রূপ নেই। ইব্রাহিমের ধর্মের শয়তান ইশ্বরেরই আরো বহু ফেরেশতাদের মত একজন ফেরেশতা যে ঈশ্বরের সবচেয়ে প্রিয় ছিল। ইব্রাহিমের ধর্মের শয়তান ঈশ্বরকে লড়াইতে আহ্বান করে না। সে শুধু মানুষের মনের উপর কাজ করতে পারে। শয়তান হিসাবে তার জন্মই হয়েছে আদমকে সেজদা না করার সময় থেকে।
বহু পূর্বে মধ্যপ্রাচ্যের ইসরাইলের জ্ঞানী ব্যক্তিরা আবিষ্কার করেছিলেন যে মানুষ যতই উন্নত হোক, শিক্ষিত হোক এবং যত ভাল রাজ্য, দল বা সংগঠনই তারা তৈরি করুক, ব্যক্তিগত শুদ্ধিকরণের চর্চা যদি তারা না করে, তাহলে তারা শয়তানের প্ররোচনায় চালিত হবে। সমাজ অন্যায় অবিচার ও অপরকে নিয়ন্ত্রণের জন্য মামলা, হামলা ও হানাহানির কুরুক্ষেত্রে পরিণত হবে। আজ আমরা দেখছি চারিদিকে সবাই মুসলিম, শুধুই আল্লাহু আকবর আর জিহাদ কোতল করার শ্লোগান। কিন্তু সততা, ন্যায্যতা, ও পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস একেবারে উঠে গেছে। যত বেশি ইসলাম তত বেশি চুরি, জোচ্চুরি, লাম্পট্য এবং অসহিষ্ণুতা। এর কারণ ইসলাম ধর্মের ব্যক্তিগত শুদ্ধিকরণ থেকে বের হয়ে এসে আচার-অনুষ্ঠান বা পূজাবিধি পালনের ধর্মে পরিণত হওয়া। এর সাথে যুক্ত হয়েছে পশ্চিমা মুক্ত সমাজের উয়োক মাইন্ড ভাইরাস। যেটা নিজেকে ও নিজের আধ্যাত্মিক সঙ্কট নিয়ে চিন্তা করার চাইতে সামাজিক ক্ষমতা ও দলাদলির মূল্যবোধকে অনুসরণ করার শিক্ষা দেয়।
ইসলামের বিপথগামীতার বিষয়টি বুঝতে হলে ইব্রাহিমের ধর্মের ইতিহাসটা সম্পর্কে জানতে হবে। সেটা নিয়ে একটি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেয়া হল (পরবর্তী পর্বগুলোতে)। একথা মনে রাখতে হবে যে ইহুদি ধর্ম থেকে খ্রিস্ট ধর্ম ও সেখান থেকে ইসলাম একটি অবিচ্ছিন্ন ধারা। যেন একই ঈশ্বর মানুষকে ব্যক্তিগতভাবে পরিশুদ্ধ করার মাধ্যমে সমাজকে বাসযোগ্য করার জন্য কিছু নিয়ম কানুন পাঠাচ্ছেন, মানুষ সেগুলোর অপ্রয়োগ করে আবার বিপথে যাচ্ছে। এখানে আরো খেয়াল করতে হবে ইব্রাহিমের ধর্মগুলো যেমন ইহুদী, খ্রিস্টান ও ইসলাম বলতে যেমন আমরা তিনটি ধর্ম মনে করছি, আসলে এগুলোর মধ্যে আরও নানা পরিবর্তন ও বিভাজনের সৃষ্টি হয়েছে ইতিহাসের নানা সময়ে। সেই বিভাজনের সাথে তাল মিলিয়েই বিষয়টাকে দেখতে হবে।

এর সাথে আর একটি বিষয় বুঝতে হবে। ধর্মের ঐতিহাসিক ধারা চর্চা করতে গেলে দুই ধারায় চিন্তা করতে হয়। ধর্মগুলোর একটি ধর্মগ্রন্থে বর্ণিত ইতিহাস বা মিথলজিক্যাল ইতিহাস থাকে, আবার থাকে প্রত্নতাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট যেটা প্রত্নতাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিক জ্ঞান প্রয়োগ করে নির্ণিত হয়। দুটো যে সবসময় মিলবে সেটা নয়, তবে দুটোই মাথায় রাখতে হবে।

Friday, April 25, 2025

রাগের ভাষা বুঝে বিশ্লেষণ করুন

 একজন মানুষের সাথে ভালো সম্পর্ক থাকলেই যে তাকে আপনি চিনে ফেলেন এরকমটা কখনোই নয়, যে পর্যন্ত আপনি কারোর রাগ না দেখতেছেন সে পর্যন্ত আপনি তাকে পুরোপুরি চেনেন না, এবং সে আপনার সম্পর্কে কি ধারণা পোষণ করে রেখেছে তা জানেন না।

মানুষ যা ভাবে, তা সবসময় মুখে বলে না, সামাজিক সৌজন্য, সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার চেষ্টা, কিংবা ভদ্রতার মুখোশ পরে অনেক কিছু চেপে রাখে। কিন্তু মনের গভীরে জমে থাকা সেই না-বলা কথাগুলো এক সময় ফেটে পড়ে রাগের মুহূর্তে।
সাইকোলজিক্যালি বলতে গেলে।
রাগ হলো এমন এক আবেগ বা মুহূর্ত, যা মানুষের ভেতরে জমে থাকা না-বলা কথাগুলোকে মুখে নিয়ে আসে। রাগের সময় মানুষ এমন অনেক কিছু বলে ফেলে, যা সে কখনো ইচ্ছাকৃতভাবে বলত না। কারণ রাগের সময় তখন তার চিন্তার ফিল্টার কাজ করে না, বিষয়টাকে উদাহরণস্বরূপ বোঝাচ্ছি।
উদাহরণ ১।
ধরুন, আপনার এক আত্মীয় সবসময় আপনার সাথে খুব ভালো ব্যবহার করেতেন। হঠাৎ একদিন একটা তুচ্ছ বিষয়ে রেগে গিয়ে বলে উঠলেন, “তোমার মা-বাবায় তো ভালো না, তুমি কি এমন বড় কিছু হয়ে গেছো?” এই কথাটা কি তখনই জন্ম নিল? না, এটা তার মনের মধ্যে অনেক আগে থেকেই ছিল রাগ শুধু সেটাকে প্রকাশ করল।
উদাহরণ ২।
একজন প্রেমিক তার প্রেমিকাকে সবসময় বোঝায় সে কতটা ভালো, কতটা সম্মানীয়। কিন্তু একদিন রাগের মাথায় বলে ফেলল, “তুই না থাকলেই ভালো হতো আমার জীবনে। তোর জন্যই সব নষ্ট হয়ে গেছে।” এই একটি বাক্য বুঝিয়ে দেয়, সে মনে মনে অনেক দিন ধরেই এই অভিযোগ পুষে রেখেছিল।
মনোবিজ্ঞানের ভাষায়।
“When a Person is Angry, They Speak Not From impulse Alone, But From a Reservoir of Unspoken Thoughts.” অর্থাৎ, রাগ কেবলই মূহূর্তিক উত্তেজনা নয়, বরং ভেতরে জমে থাকা ধারণার বিকট প্রকাশ।
তাই রাগের সময় মানুষ আসলে নতুন কিছু বলে না, বরং পুরনো চিন্তার মুখোশ খুলে ফেলে। আপনার সম্পর্কে কার কী ধারণা তা আপনি জানতে পারবেন না তার হাসিতে, যত্নে বা ভালো ব্যবহারে। কিন্তু বুঝতে পারবেন তখনই, যখন সে আপনাকে রাগ দেখাবে। কারণ তখন সে মুখের ভদ্রতা ভুলে গিয়ে মনের সঞ্চিত বাস্তবতাগুলো প্রকাশ করে দেয়।
তাই শুধু শুনে নয় রাগের ভাষা বুঝে বিশ্লেষণ করুন, সম্পর্কটা কোন ভিত্তিতে দাঁড়িয়ে আছে। রাগ অনেক সময় সম্পর্ক নষ্ট করে দেয় না, বরং আপনাকে সত্য চিনিয়ে দেয়।
Social Psychologist:
Jahid Hasan Scientist 👨‍🔬

 


"কত রঙ্গ দেখালিরে সই অম্বলে দিলি আদা"

ফলের ঝুড়িতে আমড়া আর পেয়ারা কেউ রাখে আবার যদি কেউ রাখে তাতে দেখানোর কি আছে?

"তোরা যে  যা ব লিস ভাই",

পারলে এদের কে আমি  সো কেসে সাজিয়ে রাখতে চাই।

কারণ,

আমাদের এই সাধারন সার্বজনীন ফল গুলি জাপানে এসে  এলিট সব ফল গুলিকে দামে পিছনে ফেলে অভিজাত  হয়ে গেছে।

আগে ছিল দুর্লভ এখন পাইলে পেতে পারো  কোন একদিন তবে তোমাকে সেই পরিমাণ মূল্য চুকাইতে হবে।




Pineapple peel tea

 


How to make

Peel the pineapple and wash it in water. Even if you soak it in water for a while, the dirt and grime will go away. 

Boil one pineapple peel in four cups of water. Add one inch of grated ginger. 

Reduce the heat and let the mixture boil for 15-20 minutes, cover it, and then strain it. 

Keep it in the refrigerator or, when it comes to room temperature, add lime juice and crushed ice to it and eat it.
However, once a day is enough.

;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;

Why drink pineapple peel tea?

1. Pineapple contains an enzyme called bromelain. A report published in the journal ‘Chemistry and Biodiversity’ in 2004 says that pineapple peel contains 0.23 percent bromelain. This enzyme helps reduce inflammation and swelling. This ingredient is effective in reducing the pain of osteoarthritis to some extent.

2. Bromelain helps in digestion. It is a proteolytic enzyme. This ingredient helps in eliminating flatulence and indigestion. Nutritionist Fiona says, “Sipping pineapple peel tea will reduce digestive problems.”

3. Pineapple contains vitamin C. Some of that vitamin is found in pineapple peel. This vitamin helps in preventing diseases. As a result, the body will remain healthy due to the quality of this tea.

4. Ascorbic acid present in pineapple peel helps in collagen synthesis. Collagen helps in keeping the skin firm and smooth.

5. This low-calorie yet enzyme-rich drink not only aids in digestion but also helps in weight loss.


পাঁচমিশালি সবজি

 


উপকরণ

পানি পরিমাণমতো, লবণ পরিমাণমতো, জলপাই তেল ৩ টেবিল চামচ, মাঝারি সাইজের গাজর ৩টি, আলু ৩টি, ফুলকপি ১টি, ব্রকলি ১টি, মটরশুঁটি ১ কাপ, মাখন ২০ গ্রাম, রসুন ১-২ কোয়া কুচি করা, লাল ক্যাপসিকাম ১টি, হলুদ ক্যাপসিকাম ১টি, সবুজ ক্যাপসিকাম ১টি, ফ্রোজেন বাটন মাশরুম ৬–৭টি, গোলমরিচের গুঁড়া দেড় টেবিল চামচ, পার্সলেপাতা সাজানোর জন্য।

প্রণালি

বড় হাঁড়িতে পানি নিয়ে তাতে লবণ আর আধা চা-চামচ জলপাই তেল দিন। ফুটে উঠলে লম্বা করে কাটা আলু ও গাজর দিন। ২০ শতাংশ সেদ্ধ হলে তুলে ঠান্ডা পানিতে ফেলুন। একই গরম পানিতে আগে কাটা ফুলকপি, পরে কেটে রাখা ব্রকলি দিয়ে দিন। ১০ শতাংশ সেদ্ধ হলে মটরশুঁটি দিন। গুনে গুনে তিন মিনিট পর তুলে ঠান্ডা পানিতে ফেলুন। এরপর পানি ছেঁকে অন্য পাত্রে রাখুন। চুলায় প্যান চাপিয়ে গরম হলে তাতে জলপাই তেল দিয়ে দিন। মাখন দিন। গলে গেলে রসুন কুচি দিন। স্বচ্ছ রং হলে ক্যাপসিকাম কেটে দিয়ে দিন। স্লাইস করে কাটা মাশরুম দিয়ে নেড়ে নিন। সবজিগুলো দিয়ে দিন। লবণ দিন। নেড়ে নিন। মিনিট ৪-৫ নাড়লেই দেখবেন ক্যাপসিকামে চকচকে ভাব এসেছে। গোলমরিচের গুঁড়া দিয়ে আবারও মিলিয়ে নিন। ব্যস এবার নামিয়ে পরিবেশন পাত্রে ঢালুন। পার্সলে দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।

সৌন্দর্যচর্চায় লেবুর খোসা

 



ত্বকে
র যত্নে   লেবুর খোসা

ত্বকের দাগছোপ কমাতে

লেবুর রস বের করার পর খোসাটি ধুয়ে ফেলুন। ভেতরের পাতলা সাদাটে আবরণ ফেলে দিন। এবার ত্বকে লেবুর খোসা ঘষে নিন। রোজ ত্বকে এভাবে লেবুর খোসা মালিশ করলে ধীরে ধীরে ত্বকের দাগছোপ এবং কালচে ভাব কমে আসবে। রোদে পোড়া ভাবও কমে যাবে। চাইলে ত্বকে লেবুর খোসা ঘষার আগে খোসাটির ভেতরের অংশে সামান্য মধু লাগিয়ে নিতে পারেন। ত্বক উজ্জ্বল দেখাবে।

ত্বকে বয়সের ছাপ কমাত

লেবুর খোসা বেটে নিন। এর সঙ্গে সমপরিমাণ বেসন যোগ করুন। সঙ্গে যোগ করুন সামান্য মধু। চাইলে বেসনের পরিবর্তে মসুর ডালও বেটে নিতে পারেন। সপ্তাহে দু-তিন দিন এই প্যাক ব্যবহার করুন।

লেবুর খোসা ধোয়ার পর রোদে শুকিয়ে একটা বয়ামে রেখে দিন। প্রয়োজনমতো বের করে নিয়ে প্রয়োজনমতো পানি মিশিয়ে ব্লেন্ড করুন। এই প্যাকটিও সপ্তাহে দু-তিন দিন ব্যবহার করতে হবে।


চুলের যত্নে লেবুর খোসা

লেবুর খোসা ব্লেন্ড করে পরিমাণমতো নারকেল তেল বা জলপাই তেলের সঙ্গে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ মাথার ত্বক ও চুলে ভালোভাবে মালিশ করুন। মিনিট দশেক পর ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে এক দিন এই প্যাক ব্যবহার করলে চুল হবে মজবুত ও মসৃণ। চুল ভেঙে যাওয়া, চুলের আগা ফাটা এবং চুলের রুক্ষতার সমস্যায় এই প্যাক হতে পারে এক সহজ সমাধান। প্রাণবন্ত চুল পেতে যে কেউই এটি ব্যবহার করতে পারেন।

Sunday, April 20, 2025

বাবুরাম সাপুড়ে, রাজনীতির কাপুড়ে! গোলাম মাওলা রনি

 রাজনীতির কাপুড়ে বাবুদের নিয়ে লিখতে গিয়ে সুকুমার রায়ের অমর শিশুতোষ কবিতা বাবুরাম সাপুড়ের কথা মনের পর্দায় ভেসে উঠল। আমার বয়সি লোকজন যারা শৈশবে কবিতাটি পড়েছেন তারা হাল আমলে সেই কবিতা নিয়ে কী ভাবছেন তা বলতে পারব না। কিন্তু আমার মনে শৈশবের অনেক কবিতার মতো বাবুরাম সাপুড়ে কবিতাটি নানা বর্ণে, রঙে এবং বিচিত্র ভাবার্থে বারবার মনের জানালায় উঁকি দেয়, আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের মানবিক আচরণ-অমানবিক দাম্ভিকতা-কাপুরুষতা, কল্পনার ফানুস, রাজনীতি এবং অর্থনীতি নিয়ে চিন্তা করতে গিয়ে আমি কীভাবে কবিতাটির খপ্পরে পড়ি সেই কথাই আজ আপনাদের বলব। কিন্তু তার আগে শিরোনামের দ্বিতীয় অংশ নিয়ে আলোচনা আবশ্যক।

বাংলা ব্যাকরণে কাপুড়ে বাবু নামক একটি বাগধারা রয়েছে, তার অর্থ ভণ্ড। কিন্তু অন্য ভণ্ডদের তুলনায় কাপুড়ে বাবু প্রকৃতির ভণ্ডদের যে বিশাল পার্থক্য রয়েছে, তা খুঁজতে গিয়ে আমি রীতিমতো অবাক। বিশ্ব পাঠশালায় আমি যে কত বড় শিশু এবং আমাদের চারপাশে এমন অনেক কিছু রয়েছে, যা এখনো জানা হয়নি, এমনকি কেউ বলেওনি তার একটি নমুনা কাপুড়ে বাবু বাগধারার মধ্যে পেয়ে গেলাম। পৃথিবীতে দর্শনশাস্ত্র এবং যুক্তিবিদ্যার গুরুত্ব যে বিজ্ঞানের সব শাখার ঊর্ধ্বে তা আবার নতুন করে অনুভব করলাম। কারণ আমাদের চারপাশে এমন অনেক কিছু রয়েছে, যা নিয়ে চিন্তা না করলে আপনার কাছে কোনো দিন প্রকৃত সত্য উন্মোচিত হবে না। কাপুড়ে বাবু অর্থাৎ ভণ্ড নামক শব্দটি নিয়ে যদি চিন্তা না করেন তবে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু আপনার মনে যদি প্রশ্ন জাগে, ব্যাকরণবিদরা কেন ভণ্ড শব্দটি সরাসরি ব্যবহার না করে কাপুড়ে বাবু শব্দটি ব্যবহার করলেন!

দার্শনিকদের মতে, ভণ্ড একটা চাঁচাছোলা সাধারণ শব্দ, যা অহরহ উচ্চারিত হয়। ভণ্ড যদি দুর্বল-অসহায় হয় তবে ভুক্তভোগী অথবা ভণ্ডামিতে অতিষ্ঠ লোকজন খুব সহজে ভণ্ডের মুখের ওপর বলে দিতে পারে তুই ভণ্ড অথবা ভণ্ডামি বন্ধ কর। কিন্তু ভণ্ডের গায়ে যদি রাজকীয় পোশাক থাকে, ভণ্ড যদি রাজা হন অথবা রাজার আজ্ঞাবহ উর্দিধারী অর্থাৎ পোশাকধারী কোতোয়াল অথবা ফৌজি হন তবে ঘাড়ের ওপর কল্লা রেখে ভণ্ডের সামনে দাঁড়িয়ে তুই ভণ্ড বলার মতো মানুষ কেবল গল্প-উপন্যাসেই সম্ভব। সুতরাং ক্ষমতাধর ভণ্ডদের টিটকারী করার জন্যই ভাষাবিদরা কাপুড়ে বাবু বাগধারাটির প্রচলন করেছেন।

বিশাল পার্থক্যক্ষমতার সব স্তরের মতো রাজনীতিতেও কাপুড়ে বাবুদের দাপট সব সময়ই ছিল, আছে এবং থাকবে। আমাদের দেশে রাজনীতির কাপুড়ে বাবুদের নিয়ে আলোচনা করব বটে কিন্তু তার আগে বাবুরাম সাপুড়ে কবিতা এবং সেই কবিতার সঙ্গে রাজনীতির কাপুড়ে বাবুদের কী সম্পর্ক তা নিয়ে প্রাক-আলোচনা জরুরি। সাম্প্রতিক সময়ে নীরবের সরব চাঁদাবাজি অর্থাৎ অতীতে যেসব চাঁদাবাজি নীরবে হতো তা হঠাৎ করে যেভাবে সরবে হচ্ছে এবং সেসব চাঁদাবাজি নিয়ে কাপুড়ে বাবুদের নানারকম আকুতিমিনতি দেখে সুকুমার রায়ের কবিতার কথা মনে পড়ে গেল। রাজনীতির কাপুড়ে বাবুদের ভণ্ডামির কারণে জনগণের জানমাল-ইজ্জতের যে বেহাল তার সঙ্গে সুকুমার রায়ের কবিতার কী সম্পর্ক তা অনুধাবনের জন্য শিশুতোষ কবিতাটির ভাবার্থ আপনাদের সামনে পেশ করছি।

বাবুরাম সাপুড়ে কবিতার নায়ক একজন অবোধ বালক। বালকটি দুরন্ত নয়। তার সাহসশক্তির কোনো পরিচয় কবিতার মধ্যে নেই। তবে সে দুর্বোধ্য স্বপ্নবিলাসী এক বালক যে কল্পনার জাদুকরি কিছু খেলাধুলা করতে আগ্রহী। আবহমান বাংলার ফণা তোলা বিষধর গোখরা সাপ নিয়ে ছেলে-বুড়ো সবারই এক ধরনের স্বপ্ন, ভয়, আতঙ্ক এবং ভালোবাসা কাজ করে। বালক-বালিকারা সাপ খেলা দেখতে পছন্দ করে। অনেকের মনে সাপুড়ে হওয়ার বাসনা জাগে। বাঁশি বাজিয়ে গোখরা সাপকে নাচাতে কী কী মন্ত্র শেখা দরকার তা শেখার জন্য অনেক বালক-বালিকা সাপুড়েদের সঙ্গে ভাব জমানোর চেষ্টা করে।

সাপ নিয়ে উল্লিখিত আগ্রহের পাশাপাশি বালকদের আতঙ্কও কম নয়। অনেকে সাপের কামড় থেকে বাঁচার জন্য তাবিজ পরিধান করে। অনেকে দোয়াদরুদ, ঝাড়ফুঁক করে শরীর বন্ধ করার কলাকৌশল শেখে। অনেকে আবার কামরূপ কামাখ্যা গিয়ে সর্পবিদ্যা অর্জন করে সর্পরাজ হওয়ার স্বপ্ন দেখে। বাবুরাম সাপুড়ে কবিতার বালকের আকুতি দেখে মনে হয় সে সাপ নিয়ে খেলতে চায় এবং প্রতিপক্ষকে সাপ দিয়ে ভয় দেখিয়ে মজা লুটতে চায়। সেজন্য বালকটি এমন দুটো সাপ এনে দেওয়ার জন্য সাপুড়ের কাছে আবদার করে, যে সাপের কোনো চোখ নেই, শিং নেই, নখ নেই, কাউকে কামড় দেয় না এবং অযথা ছোটাছুটি, ফোঁসফাঁস, টুসটাস এবং উৎপাত করে না। সাপু দুটো কোনো আজেবাজে খাবার খায় না- শুধু দুধভাত খেয়ে চুপচাপ বালকের বিনোদন সঙ্গীরূপে বেঁচে থাকে। কবিতার শেষ অংশে সুকুমার রায় বালকের মুখ দিয়ে যা বলার চেষ্টা করেছেন, তা বাঙালির চিরায়ত স্বভাবকে এমনভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, যা সচরাচর অন্য কোনো শিশুতোষ কবিতায় পাওয়া যায় না। কবি বলেন, সেই সাপ জ্যান্ত, গোটা দুই আনতো, তেড়ে মেরে ডান্ডা, করে দিই ঠান্ডা।

আপনি যদি বালকের সর্পসংক্রান্ত স্বপ্ন এবং সাপ নিয়ে তার পরিকল্পনা চুলচেরা বিশ্লেষণ করেন তবে বাঙালির আত্মঘাতী স্বভাব, বিপরীতমুখী কর্মকাণ্ড এবং অহেতুক লম্ফঝম্ফ, দাম্ভিকতা এবং দুর্বলের ওপর অত্যাচার করে সুখ অনুভব করার মনমানসিকতার পরিচয় পেয়ে যাবেন। প্রথমত বালক যে এক জোড়া সাপের আবদার করেছে সেগুলো নির্বিষ, নড়াচড়া করে না, ফোঁসফাঁস করে না। সুতরাং সেই সাপগুলোর সঙ্গে বালক কেন অমানবিক আচরণ করবে। প্রথমত কেন সে নড়াচড়া করতে অপারগ সাপগুলোকে লাঠি নিয়ে তাড়া করবে। সাপগুলো প্রাণভয়ে দৌড়ানোর চেষ্টা করবে কিন্তু নিজেদের দুর্বলতার জন্য বালকের সঙ্গে পেরে উঠবে না। তখন বালক তার লাঠি দিয়ে আচ্ছামতো পিটিয়ে সাপগুলোকে অজ্ঞান অথবা স্তব্ধ করে  দেবে।

বালকের অভিনব স্বপ্ন এবং অভিলাষের সঙ্গে যদি আপনি আমাদের দেশের কাপুড়ে বাবুদের চরিত্র এবং তাদের সফলতার ইতিহাস খোঁজেন তবে দেখতে পাবেন যে কাপুড়ে বাবুরা কখনো আলেকজান্ডার, হ্যানিবন, সিজার, নেপোলিয়ন কিংবা খালিদ বিন ওয়ালিদ হতে চায় না। এমনকি তারা হালাকু, চেঙ্গিস অথবা হিটলার হতেও ভয় পায়। তারা এমন কিছু হতে চায়, যা কেবল তাদের ভোগবিলাস, আরাম-আয়েশ, আহারবিহারকে শতভাগ নিশ্চিত-নিরাপদ এবং ঝামেলামুক্ত করবে। এ জন্য তারা প্রতিযোগিতা-যুদ্ধ কিংবা পরিশ্রম কোনোটিই করতে রাজি নয়। তারা শুধু কূটকৌশল, ভণ্ডামি-মোনাফেকির মাধ্যমে দুর্বল ও অসহায় মানুষের ওপর তেড়ে মেরে ডান্ডা করে দিই ঠান্ডা নীতি প্রয়োগ করে- সফলতার জন্য একের পর এক কুকর্ম করতে থাকে।

আমরা আজকের আলোচনার একদম শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি। এবার রাজনীতির কাপুড়ে বাবুদের হালনাগাদ হালহকিকত সংক্ষেপে বলে নিবন্ধের ইতি টানব। সারা দেশে কাপুড়ে বাবুদের ডান্ডা যেভাবে দুর্বল-অসহায় এবং নিশ্চল-নিশ্চুপ জনগণকে তাড়া করছে তাতে করে বহু মানুষের জীবনের গতি থেমে গেছে। অনেকের স্বপ্ন ভেঙে ছারখার হয়েছে। অনেকে বেঁচে থাকার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। ফলে সারা দেশের প্রকৃতি ও পরিবেশে অদ্ভুত এক নীরবতা আবার মাঝেমধ্যে অস্থিরতা লক্ষ করা যাচ্ছে। জীবনের গতি ও প্রকৃতি এলোমেলো এবং আঁকাবাঁকা হয়ে গেছে। চিন্তায় জড়তা দেখা দিয়েছে এবং কর্মের প্রেরণা উধাও হয়ে গেছে। ফলে ডান্ডার আঘাত থেকে বাঁচার জন্য যে দৌড় অপরিহার্য তার শক্তি নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার কারণে নির্জীব হয়ে নির্যাতন ভোগ করার মধ্যেই বেঁচে থাকার সার্থকতা অনুভব করতে হচ্ছে।