Tuesday, April 8, 2025

কালচারাল ওয়ার

 "আপনি যতোক্ষণ মনে করবেন যে ইহুদী হ* ত্যা জায়েজ, ততোক্ষণ ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধান নেই। কারণ আপনি ইহুদী হ* ত্যা জায়েজ ভাবতে পারলে ইহুদীরা মুসলমান হ* ত্যা জায়েজ ভাবতে পারবে না কেন? যুদ্ধ কোনো দার্শনিক তর্কাতর্কির বিষয় নয়। মোরাল ও লিটারারি এস্থেটিক্স সেখানে অচল। যুদ্ধ মূলত প্রিন্সিপল অভ রেসিপ্রোসিটি অনুসরণ করে। প্লেইন রেসিপ্রোসিটি। খুনের বদলে খুন। বোমার বদলে বোমা। ঘৃণার বদলে ঘৃণা। হামলার বদলে হামলা। নতুন যোগ হয়েছে প্রিএম্পটিভ সেলফ ডিফেন্স। আমি যদি আশঙ্কা করি যে ভবিষ্যতে আপনি আমার ক্ষতি করবেন, তাহলে আপনাকে আমি বর্তমান কালেই নিশ্চিহ্ন করে দেবো। এটাই প্রিএম্পটিভ রাইট টু সেলফ ডিফেন্স।

সুতরাং আগে হ্যাট্রেড বা ঘৃণার চর্চা থামাতে হবে। কালচারাল ওয়ারের লিথাল প্রদর্শনী হলো রণাঙ্গনের যুদ্ধ। আপনারা অনেকেই ফেসবুকে প্রাণভরে কালচারাল ওয়ার উপভোগ করেন। সে যুদ্ধে অংশও নেন। কিন্তু আমি কালচারাল ওয়ারকে ভয় পাই। অত্যন্ত ভায় পাই। কারণ কালচারাল ওয়ার হলো জেনোসাইডের মানসিক প্রস্তুতি। এটি কেবলই শব্দের সাথে শব্দের, বা আইডিয়ার সাথে আইডিয়ার যুদ্ধ নয়। কালচারাল ওয়ার ছাড়া আসল ওয়ার সংগঠিত হতে পারে না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে তাকান। এটি মূলত ফ্রান্স-জার্মানি কালচারাল ওয়ারের ফসল।
আমি জীবদ্দশায় যে-যুদ্ধগুলো দেখলাম, ইরাক, আফগানিস্তান, লিবিয়া, ফিলিস্তিন, প্রতিটিকেই কালচারাল ওয়ারের ফসল মনে হয়েছে। এবং আমি আতঙ্কিত যে, বাংলাদেশ ও ভারতে, আইডেন্টিক্যাল কালচারাল ওয়ার চলছে, যা ভবিষ্যতে রূপ নিতে পারে রক্তক্ষয়ী আসল ওয়ারে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পরিণতি হবে ফিলিস্তিনের মতো। আমি আহ্বান জানাবো, যেকোনো মূল্যে ভালোবাসার চাষাবাদ বাড়াতে। কালাচারাল ওয়ার ভালো জিনিস নয়। অত্যন্ত মন্দ জিনিস। প্রতিপক্ষকে খুন করতে একটি থ্রেশহোল্ড পরিমাণ রাগ ও ঘৃণা লাগে, যার জোগান আসে কালচারাল ওয়ার থেকে। বাংলাদেশে এই মুহুর্তে যতোগুলো ফেসবুক ও ইউটিউব এক্টিভিস্ট আছে, তাদের প্রায় সবাই কালচারাল ওয়ারের সেনাপতি। এবং এরা সেই মাঠ প্রস্তুত করছে, যে-মাঠে এক পক্ষ খুন করবে আরেক পক্ষকে। ফেসবুক এক্টিভিস্ট থেকে দূরে থাকুন।"
—মহিউদ্দিন মোহাম্মদ

No comments:

Post a Comment