“আমরা ভাত খাই, রুটি খাই। ভাত ও রুটি কৃষিকাজের ফসল। পৃথিবীতে কৃষির সূচনা করেছিলো নারীরা। ধান, গম, ভুট্টা, এগুলোর আদিম চাষাবাদ নারীর হাত ধরে হয়েছিলো। পুরুষ মূলত শিকার করতো। বাড়ির আঙিনায় পুঁইশাক, ডাটাশাক, ঢেঁড়স, এগুলো নারীরাই প্রথম লাগিয়েছিলো। চিকিৎসাবিজ্ঞানের যাত্রা নারীরা শুরু করেছিলো। সন্তানকে বাঁচাতে এই গাছের রস সেই গাছের রস, মেডিক্যাল ট্রায়াল অ্যান্ড এরোর, এগুলো নারীর উদ্ভাবন।
নবী মোহাম্মদকে বাঁচাতে তাঁর মা আমেনা কী কী করেছিলো, সেটা হেফাজতে ইসলামের জানার কথা নয়। আমি এখনও মনে করি, খাদিজার সাথে নবীর বিয়ে না হলে ইসলাম বিকশিত হতো না। ইসলামের প্রথম রক্ষাকবচ ছিলেন খাদিজা। একজন নারী। কিন্তু এ নারীরা হেফাজতের গুন্ডাদের চোখে বেশ্যা। ধর্মব্যবসার চেয়ে বেশ্যাবৃত্তি অধিক সম্মানজনক, বেশ্যার মানবিক অধিকার আমার চেয়ে এক বিন্দু কম নয়, কিন্তু ধর্মগুন্ডারা নারীকে ‘লেস দ্যান হিউম্যান’ সাজাতে উচ্চারণ করছে ‘বেশ্যা’, খুব ঘৃণা নিয়ে। প্রতিটি আধুনিক শিক্ষিত নারী ধর্মগুন্ডাদের চোখে বেশ্যা। ধর্মগুন্ডারা নারীকে এভাবেই দেখে। নারী মাত্রই তার চোখে যৌনসামগ্রী।
তারপরও ধর্মগুন্ডাদের প্রতি বাঙালি নারীর প্রেম অসীম। এখন তো বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া নারীরা ধর্মগুন্ডার বউ হওয়ার স্বপ্প দেখে। দুই নম্বর, তিন নম্বর স্ত্রী হতেও আপত্তি নেই। নেকাবের দাবিতে মিছিল করে। মুখে আন্ডারওয়ার পরতে চায়। স্বাদ নিতে চায় ধর্মগুন্ডার শয্যাসঙ্গী হওয়ার দুর্বিষহ জীবনের। কারণ ধর্মগুন্ডা বেহেশতের লোভ দেখিয়েছে। অথচ কোরান অনুযায়ী ধর্মগুন্ডা নিজেই দোযখে যাবে। প্রতিটি ধর্মব্যবসায়ী দোযখের আদর্শ লাকড়ি, এটা তো আল্লাহর কথা। কিন্তু বাংলাদেশে আল্লাহর চেয়ে মোল্লা শক্তিশালী হয়ে উঠেছে।
আল্লাহ বলেছেন মুখ ঢাকতে হবে না, অথচ মোল্লা বলছে মুখ ঢাকতে হবে। এবং ভীতু বাঙালি নারী তা বিশ্বাস করছে। আমরা নারীর পক্ষে দাঁড়িয়ে লাভ কী? নারী তো নিজেই মোল্লার বেশ্যা হতে চাইছে। মামুনুল হকের মতো একটি কুৎসিত লোকের সাথেও হোটেলে যাওয়ার নারী এ দেশে আছে। দেশবাসী তা লাইভ টেলিভিশনে প্রত্যক্ষ করেছে। আমরা কার পক্ষে দাঁড়াবো? নারীর সবচেয়ে বড় শত্রু এখানে নারী। ধর্মবেশ্যার চেয়ে যৌনবেশ্যা কম ক্ষতিকর, কিন্তু দেশবাসী ধর্মবেশ্যাদের খুব পছন্দ করে! হেলিকপ্টার দিয়ে উড়িয়ে আনে। কাকে কী বলবো? যৌনবেশ্যা এক লাখ বছরেও একটি সমাজ নষ্ট করতে পারে না, কিন্তু ধর্মবেশ্যা এক রাতেই দুই কোটি লোকের মগজ নষ্ট করতে পারে।
নারীকে বুঝতে হবে, ধর্মবেশ্যাগণ নারীকে মোটাদাগে যৌনবেশ্যা হিশেবেই দেখে। সুন্দর, স্বাস্থ্যবান, শিক্ষিত, আধুনিক, ও স্বাধীনচেতা নারী মাত্রই এ দেশে বেশ্যা। এবং এমন বেশ্যাকে স্ত্রী ও প্রেমিকা হিশেবে পেতে বাঙালি যুবকরা মরিয়া। প্রতিটি মোল্লা এমন বউ পেতে চায়। কিন্তু পায় না বলে ক্ষোভ থেকে আখ্যা দেয় বেশ্যা। ময়ুরী ও মুনমুনের ভিডিও এ দেশের মানুষ সবচেয়ে বেশি দেখেছে। যারা দেখলো, তারা বেশ্যা নয়, কিন্তু ময়ুরী ও মুনমুন বেশ্যা!”
.
—মহিউদ্দিন মোহাম্মদ
সাক্ষাৎকার / ৬ মে ২০২৫
No comments:
Post a Comment