আজকে নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইনে বলা হয়েছে জাতীয় পতাকা, জাতীয় সংগীত, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অবমানাকর কিছু করলে যে শাস্তির বিধান ছিল সেটি বাতিল করা হয়েছে। তার মানে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননা মামলা আপনাআপনি বাতিল হয়ে যাবার কথা। আইন উপদেষ্টা বলেছেনও এই বিধানে আগে করা সব মামলা আপনাআপনি বাতিল হয়ে যাবে। তাই আগে থেকেই চিন্ময় কৃষ্ণকে অন্য আরো চারটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
দেশে স্বাধীনতা বিরোধীদের অবাধে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কটুক্তি করার সুযোগ করে দিতেই সিকিউরিটি আইনে এই সংশোধন। এখন জাতীয় পতাকা নিয়ে জেনজি জঙ্গিরা জঘন্য রকমের মকারি করলে শুধু চেয়ে চেয়ে দেখবেন। মুক্তিযোদ্ধাদের খুনি, দেশদ্রোহী বললে সেটা অপরাধ হিসেবে ধরা হবে না। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর বাংলাদেশ পুরোপুরি মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করলো। নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রাপ্ত ইনুছ ও আসিফ নজরুলের হাতে মুক্তিযুদ্ধকে অবমাননা করাকে কোন শাস্তি হিসেবে দেখা হলো না। ইউরোপের মত অবাধ বাক স্বাধীনতার দেশে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে কোন কটুক্তি, ইহুদী নিধনকে নিয়ে কোন কটুক্তিতে কঠোর শাস্তি হিসেবে ধরা হয়। মনে করিয়ে দিলাম।
এখন চিন্ময় দাস কি এমন অপরাধ করেছেন যে তাকে জামিন দেয়া হবে না? তিনি কী এমন ভয়ংকর যে তাকে ছেড়ে দিলে তিনি সরকারের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে যাবে? এসব কিছুই হবে না। কিন্তু বাংলাদেশের ইতিহাসে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রথম সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে গণ আন্দোলন শুরু করেছিলেন। এই স্পর্ধা ‘মুসলিম লীগ’ মনে নিতে পারে না। এটা মুসলমানদের দেশ। এদেশ থেকে হিন্দুদের পুরোপুরি বিদায় করে দেয়া হবে। এটাই প্লাণ। খুবই সিম্পল। শুধু মেঘমল্লার বসু ও মনিষা চক্রবর্তীর মত কিছু হিন্দুকে রাখা হবে। যেন বিদেশীরা এসে হিন্দু শূন্য দেখে প্রশ্ন করলে তারা বলতে পারে, হিন্দুরা সবাই কোলকাতা বেড়াতে গেছে। সেখানে গিয়ে ভালো লেগে গেছে তাই থেকে গেছে। এদেশে অসাম্প্রদায়িকতা সহ্য করতে না পেরে হিন্দুত্ববাদী হিন্দুরা মোদির দেশে চলে গেছে।... এসব বলার জন্য কিছু ‘গুড’ হিন্দু রেখে দেয়া হবে।
বাংলাদেশে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস সম্ভবত টের পেয়েছেন, তিনি যে সম্প্রদায়ের অধিকারের জন্য লড়াই করেছেন এদের চরিত্রে ‘নিজে বাঁচলে বাপের নাম’ নামের একটা পরজীবী ভাইরাস আছে। তারা কেউ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জন্য একটি মানববন্ধন করতেও রাস্তায় নামবে না।
No comments:
Post a Comment