নারী জন্ম অতই সহজ? ছেলেখেলা? ছোটবেলায় ঠাকুমা বলেছিল বটে, " সংসারে পুরুষের থেকে নারীর দায়িত্ব কর্তব্য অনেক বেশি "। নারী হয়ে জন্মেছো মানে, পরিবারের স্বার্থ, সম্মান, স্বাস্থ্য, সুখ সব, সঅঅব তোমার হাতে, খালি সম্পত্তি বাদে, বাপের বাড়িরটা তোমার ভাইয়ের, শ্বশুরবাড়িরটা বরের। হ্যাঁ হ্যাঁ, আইনত অধিকার আছে এখন, কিন্তু খোঁজ নিয়ে দেখবেন, উদার মা, মাসি, পিসিরা মানে যারা ভালো আর কি তারা কিন্তু বাবা বা মামাকে অধিকার ছেড়ে দেন, আর কুচুটে গুলো ঝামেলা করে, তাকেও নাকি ভাগ দিতে হবে। এ তো তাও বাপের সম্পত্তি, আর বরের সম্পত্তি!? বাপরে বাপ! অ্যালুমনি ছেড়ে দেওয়া নায়িকাদের পূজো করা দেখেছেন? আর অ্যালুমনি নেওয়া নায়িকাদের পারলে গাছে বেঁধে পোড়ায়!
তবে মেয়েদের খেয়াল কি সমাজ একেবারেই রাখেনি? রেখেছে তো, পিরিয়ডের সময়, একটু অফবিট জায়গায়, কাজের ক্ষেত্রে, যাতে বারবার প্যাড চেঞ্জ করতে না হয় তার জন্য আল্ট্রা জেল প্যাড বানিয়েছে। তাদের মেয়েদের সুবিধে, প্লাস কাজে ফাঁকি দিয়ে বারবার প্যাড চেঞ্জ করার দরকার নেই, টয়লেট বানানোর দরকার নেই। অসুবিধা হালকা আছে, মানে ওই জেল থেকে হালকা ক্লট তৈরী হওয়া বা পিসিওডি হওয়া বা ইউটেরাস বা ওভারিয়াব ক্যান্সার জাতীয় জিনিসপত্র হতে পারে৷ কিন্তু ঠিক আছে, মেয়ে হয়ে এটুকু অ্যাডজাস্ট করা যাবে না।
কম বয়সে বউ মারা গেলে পুরুষের আবার বিয়ে দিতে হয়, পুরুষ মানুষের একটু সেক্স লাগে, প্লাস নিজে নিজে অত গুছিয়ে থাকতে পারে? বিকেলের চা-টা, জাঙ্গিয়া বা রুমালটা এগিয়ে দেওয়ারও তো একজন চাই।
আজকাল অবশ্য আধুনিক খোলামেলা যুগ, অত লাগেও না, ফেলো কড়ি মাখো তেল। কিন্তু বেধবা বা ডিভোর্সি নারীর আবার অত কী? একটু অ্যাডজাস্ট করে চললেই হয়।
চাকরি বাকরি, রূপচর্চা, শরীর চর্চা, প্রেম, বিয়ে, সাহিত্য, নারী যাই করুক, তা কেবল তখনই প্রশংসনীয় যখন সেটা সকলের মন-মর্যাদা রাখার পর করছে৷
YOU CAN NEVER PUT YOURSELF FIRST.
যারা এটা করে, তারাই খারাপ, কুচরিত্রা, ডাইনি।
আর যদি তার এই নিজের সুখের জন্য কারোর অসুবিধে হলো, তাহলে তো খেলাই শেষ।
ওবাবা শাশুড়ীর কথা না শুনে বাপের বাড়ি চলে গেলো! ও বাবা বাপ মায়ের অমতে বিয়ে করে নিলো! ও বাবা ছেলে পুলের কথা না ভেবে এখনও নাচের শো, মডেলিং বা ব্যবসা করে যাচ্ছে! ও বাবা শ্বশুর বাড়ির সাথে না মানিয়ে বরকে নিয়ে আলাদা হয়ে গেলো! আজকালকার মেয়ে গুলো সব কীসব হয়েছে!
যদিও নারী খেতে না পেলে, অত্যাচারিত হলে বা অসুখি থাকলে এই সমাজ তাকে দেখতে আসবে না, আসে না, বরং ও ভাবে থেকে যাওয়াই কত গর্বের, কত পূন্যের এসব ভুজুং ভাজুং দিয়ে বোকা বানাবে।
এবার যদি নারী তার বাপের বা শ্বশুর বাড়িতে বা কর্মস্থলে অত্যাচারিত হয়ে কেস ঠুকে দেয়, বা এক্সপোজ করে দেয় তার চাপ নিতে না পেরে যাদের বা যার নামে কেস সে বা তার কেউ যদি ফিনাইল খায়, গলদড়ে হয় বা বুক ধরফরিয়ে হাসপাতালে ছোটে, তাহলে সে নারীই মেইন কালপ্রিট হয়ে যায়, তার সাথে হওয়া ঘটনাগুলো তখন কিস্যু না। টেকনিক্যাল টার্মসে এটাকে গ্যাসলাইটিং বলে, আর কোলোক্যুয়ালে চুতিয়াপ্পা।
সুতরাং নারী, Sweetheart, you have to choose, either to be a victim or a villain.
আমি পার্সোনালি ভিক্টিম হওয়াটা খুব একটা পছন্দ করি না, rather be a villain.
এই দিলীপ ঘোষ লোকটাকে আমার যতই অখাইদ্য লাগুক, এর নতুন বউয়ের আগের পক্ষের ছেলের স্যুসাইড নিয়ে লোকজন, বিশেষত মহিলারা, আদ্দামড়া মহিলারা যা খ্যামটা নাচন নাচছে৷
তাদের বলি , প্রথমত কেন কী ব্যপার সেটার তদন্ত এখনও হয়নি, কেমন? প্রথম সুযোগেই এই বয়সে এরকম পিক মি বিহেভিয়ার অত্যন্ত কদর্য৷
জানি আপনি প্রচুর স্যাক্রিফাইজ করেছেন জীবনে, অনাবশ্যক স্যাক্রিফাইজ, সেগুলোর জন্য আপনার পূণ্যের স্কোর বোর্ডে আলাদা করে কোনও ব্রাউনি পয়েন্ট অ্যাড হয়নি জানলে খারাপই লাগে।
দ্বিতীয়ত সত্যিই যদি ওই ছেলে মায়ের দ্বিতীয় বিয়ের কারণে ডিপ্রেসড হয়ে ঝুলে পড়ে থাকে তাহলে তা একদম উচিৎ হয়নি, প্রেগন্যান্সির সময়ই তিনমাস পেরোনোর আগেই ওকে অ্যাবর্ট করা উচিৎ ছিলো।
এ পৃথিবীতে নারী হিসেবে জন্মে, ভীষণ সাবমিসিভ হয়েও বহুবছর জীবন কাটিয়েছি, এবং লব্ধ অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, চুজ ইয়োরসেল্ফ ফার্স্ট, সবসময়, কারণ এ পৃথিবীতে কেউ, তার বেসিক স্বার্থের আগে তোমায় চুজ করবে না, তোমার বর, বাবা, মা, বন্ধু, ভাই, আর যার মন তুমি সব সময় রেখে চলো সমাজ, সে তো না-ই।
আর তোমার সুখ,শান্তি এসব দেখে যদি কারো জ্বলে, এবং তোমায় গ্যাসলাইট করতে আসে, ইচ্ছে হলে তার জীবনে গ্যাসোলিন ঢেলে দিতে কার্পন্য, মায়া, দয়া এসব দেখিও না।
হ্যাঁ কাল তো পি এমও বলেছেন, This is not the era of war, কিন্তু Sweethearts, to protect your peace you must be ready for war.
যে দেশের যুদ্ধাস্ত্র যত শক্তিশালী তার পিছনে তত অন্যদেশ দেখবে কম কাঠি করে।
তাই ডাইনিই হও বোন, লোকে ভয় পাবে অন্তত, শ্রদ্ধা এরা এমনিও করতো না।
No comments:
Post a Comment