Friday, June 20, 2025

বই : দাঁড়কাকের সংসার কিংবা মাঝে মাঝে তব দেখা পাই লেখক : হুমায়ূন আহমেদ

 



দশম শ্রেণির ছাত্রী লিপি। সায়েন্সে পড়ে (আরেক জায়গায় বলা হয়েছে আর্টসে পড়ে)। লিপির ইচ্ছা হলো ছুটির সময়ে একটি উপন্যাস লিখবে সে। নামও ঠিক করা হয়ে গিয়েছে। তবে উপন্যাসের শুরু করা নিয়ে দ্বিধায় ভুগছে সে। শুরুটা আকর্ষণীয় হলে পাঠক আগ্রহ নিয়ে পুরোটা পড়বে। তাই পরামর্শের জন্য বাড়িওয়ালা এবং তার বাবার বস ও বন্ধু আহসান সাহেবের কাছে যায়। বান্ধবী প্রতিমা তাকে বলে শুরুতেই নারী পুরুষের যৌন মিলনের দৃশ্য উপস্থাপন করলে অনেক বেশি কাটতি হবে এবং প্রতিমা তেমন একটা অনুচ্ছেদ লিখেও দেয়। সেই লেখাটা আহসান সাহেবকে দেখালে তিনি বলেন লিপি মানসিকভাবে অসুস্থ এবং তিনি লিপিকে একজন মনোবিজ্ঞানীর কাছে নিয়ে যান। লিপি তখন বলে যে লেখাটা তার নিজের না; বান্ধবী প্রতিমার।


পঞ্চাশোর্ধ আহসান সাহেবকে পছন্দ করে লিপি। সে আহসান সাহেবকে বিয়ের স্বপ্ন দেখে। আহসান সাহেবের প্রতি শারীরিকভাবেও আকর্ষিত হয় লিপি এবং সে চায় আহসান সাহেব লিপির শরীরের প্রতি আকর্ষণ বোধ করুক। কিন্তু লিপিকে হতাশ হতে হয়। লিপির বড় মামা কিছুদিনের জন্য তাদের বাসায় থাকতে আসে। বড় মামার সাথে লিপির মায়ের সম্পত্তি সম্পর্কিত ঝামেলা থাকায় লিপির বাবা সেটা সুরাহা করতে চান। এদিকে বড় মামা লিপি ও আহসান সাহেবের অবাধ মেলামেশাকে ভালো চোখে দেখেন না। যা লিপির মাঝে বড় মামার প্রতি ক্রোধ সৃষ্টি করে। সে বড় মামাকে ভয় দেখানোর ব্যবস্থা করে। কাজের মেয়ে সকিনার সাথে রাতের বেলা বড় মামাকে আবিষ্কার করে লিপি। এই ঘটনা ফাঁস করে দিলে বাড়িতে হুলস্থুল কাণ্ড শুরু হয়।

বইটির কাহিনি অনেকটা এপর্যন্তই। ফিকশন শব্দটার নামের মধ্যেই কল্পনার উপস্থিতি রয়েছে। তবে ফিকশন তার থেকেও বড় কিছু। বাস্তবতা বিবর্জিত মোটেই নয়। একটি পনেরো বছরের মেয়ের চিন্তাভাবনা কি এমন হতে পারে? অনিয়ন্ত্রিত যৌনতা, ব্ল্যাকমেইল করে পিতার বয়সী একজনকে বিয়ে করা, রক্ষিতা হতে চাওয়ার বাসনা কখনোই সুস্থ চিন্তাধারার হতে পারে না। 

উপন্যাসটিতে হুমায়ূন-শাওন দম্পতিকেও দেখা যায়। তাহলে কি হুমায়ূন আহমদের ব্যক্তি জীবনের প্রতিফলন করতে চেয়েছিলেন উপন্যাসটিতে? নাকি শুধুই ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে এমন বস্তাপচা গল্পের অবতারণা! উপন্যাসের এক পর্যায়ে দেখা যায়, বলা হচ্ছে ডাস্টবিন একজন লেখকের ভালো বন্ধু। তো হুমায়ূন আহমেদ তাঁর এই উপন্যাসের জন্যেও এই উক্তির প্রয়োগ করতে পারতেন। এক সময়ে মনে হয়েছে বইটি হুমায়ূন আহমেদের লেখা হতে পারে না। অন্তত হুমায়ূন আহমেদের শব্দচয়ন ও কাহিনি বিন্যাস এত খোলাখুলি আমি কখনো পড়িনি।

;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;

হুমায়ূন আহমদের নিজে র অনুভব

ভালোবাসা আর ঘৃণা আসলে একই জিনিস। একটি মুদ্রার এক পিঠে ভালোবাসা আরেক পিঠে লেখা ঘৃণা।

প্রেমিক প্রেমিকার সামনে এই মুদ্রা মেঝেতে ঘুরতে থাকে। যাদের প্রেম যগ গভীর তাদের মুদ্রার ঘূর্ণন তত বেশি।

এক সময় ঘূর্ণন থেমে যায় মুদ্রা ধপ করে পড়ে যায়। তখন কারো কারো ক্ষেত্রে দেখা যায় "ভালোবাসা" লেখা পিঠটা বের হয়েছে। করো করো ক্ষেত্রে "ঘৃণা" বের হয়েছে।

কাজেই এই মুদ্রাটি যেন সব সময় ঘরতে থাকে সেই ব্যবস্থা করতে হবে।

;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;

এই ব ই তে শিক্ষার কিছুই ছিল না , এই দুইটি বাংলা শব্দ ছাড়া

 দুশ্চর : যেখানে যাওয়া দুঃসাধ্য।

দৃষ্টরজা : প্রাপ্ত যৌবনা। যেমন, তুমি।

No comments:

Post a Comment